কলকাতা ও হাওড়াজুড়ে ধর্মীয় কর্মসূচির ফলে অবরুদ্ধ রাজপথ। ছবি: দেবস্মিতা চক্রবর্তী।
দুই শহরের রাজপথ জুড়ে দু’টি ধর্মীয় কর্মসূচি। আর তার জেরেই কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে রইল কলকাতা ও হাওড়া। মঙ্গলবার শীতলা পুজোর স্নানযাত্রা উপলক্ষে শোভাযাত্রা বের হয় উত্তর হাওড়ায়। আর শহর কলকাতায় ছিল একটি ধর্মীয় সংগঠনের শোভাযাত্রা। দুপুর থেকে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে নবান্ন থেকে বেরিয়ে সালকিয়ার প্রতিবাদী যুবক অরূপ ভাণ্ডারীর পরিবারকে সমবেদনা জানাতে সেখানে ঢুকতে পারেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
হাওড়া সিটি পুলিশ জানায়, মাঘী পূর্ণিমার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এ দিন দুপুর থেকেই বেনারস রোডের দু’দিকের এবং সালকিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে শোভাযাত্রা বেরোয়। কাতারে কাতারে মানুষ জে এন মুখার্জি রোড, বাবুডাঙা, রাম ঢ্যাং রোড, অরবিন্দ রোড-সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে দল বেঁধে রাস্তায় নেমে পড়েন। দুপুর থেকে বন্ধ ছিল উত্তর হাওড়ার জিটি রোড, বেনারস রোড-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। ফলে উত্তর হাওড়ার সঙ্গে দক্ষিণ ও পশ্চিম হাওড়ার যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রী যখন সালকিয়ায় যেতে ইচ্ছা প্রকাশ করেন, তখন সিটি পুলিশের হাতে উত্তর হাওড়ার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ আর নেই।
পাশাপাশি, কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ জানায়, এ দিন দুপুর ২টো নাগাদ তিলজলা থেকে হাজার দশেক মানুষ একটি ধর্মীয় শোভাযাত্রায় বের হন। দরগা রোড, মৌলালি, লেনিন সরণি, বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, ধর্মতলা, পার্ক স্ট্রিট, পার্ক সার্কাস মোড় পেরিয়ে শোভাযাত্রা যখন চার নম্বর ব্রিজে পৌঁছয়, তখন সন্ধ্যা প্রায় ৭টা। শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারী কয়েক হাজার ভক্ত হেঁটে এবং ছোট-বড় গাড়িতে এই লম্বা পথ পেরোন। পুলিশ জানায়, এর জেরে আমহার্স্ট স্ট্রিট, বিবেকানন্দ রোড, মহাত্মা গাঁধী রোড, শিয়ালদহ উড়ালপুল, এজেসি বোস রোড, এপিসি রোড, সিআইটি রোড, বেলেঘাটা রোড-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার ট্রাফিক ব্যবস্থা থমকে পড়ে। রাস্তায় আটকে থাকে অসংখ্য বাস, মিনিবাস, ট্রাম, ট্যাক্সি, অ্যাম্বুল্যান্স।
বিকেল পাঁচটা নাগাদ অফিস ছুটির সময়ে পার্ক স্ট্রিট, নিউ পার্ক স্ট্রিট দিয়ে শোভাযাত্রা যখন তিলজলা রোডের দিকে এগোতে থাকে, সেই সময়ে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। এজেসি বোস উড়ালপুল, সৈয়দ আমির আলি অ্যাভিনিউ, পার্ক সার্কাস-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে তৈরি হয় যানজট। লালবাজারের এক কর্তা জানান, শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা লণ্ডভণ্ড করে ওই শোভাযাত্রা যখন তিলজলা এলাকায় শেষ হয়, তত ক্ষণে যা হওয়ার তা হয়ে গিয়েছে।