ইজরায়েলি হানায় নিহত মহম্মদ দেইফের শিশুপুত্রের দেহ। ছবি: এএফপি।
গাজায় ফের শুরু হল সংঘর্ষ। বুধবার হামাসের সেনা বিভাগ, কোয়াসিম ব্রিগেডের প্রধান মহম্মদ দেইফের বাড়িতে বিমান হানা চালায় ইজরায়েল। এই হামলায় দেইফের স্ত্রী ও শিশুপুত্রের মৃত্যু হয়েছে বলে প্যালেস্তাইন জানিয়েছে। তবে দেইফের বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানা যায়নি। সব মিলিয়ে এ দিনের ইজরায়েলি হামলায় ১১ জন প্যালেস্তাইনির মৃত্যু হয়েছে।
মিশরের আলোচনায় কোনও সমাধান সূত্র না মেলায় গাজা থেকে আবার রকেট হানা শুরু হয় বলে ইজরায়েলের অভিযোগ। এর জবাবে তাদের হামলা। এ দিন ৬০টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে ইজরায়েলি সেনা। হামাস প্রায় ৮০টি রকেট ছুড়েছে বলে অভিযোগ করেছে ইজরায়েল। এই অবস্থায় মিশর থেকে ইজরায়েলি প্রতিনিধি দলকে ফিরে আসার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। গাজার দের-আল-বালাহে ইজরায়েলি হানায় এক গর্ভবতী মহিলার মৃত্যু হয়। এ দিনের ১১ জনকে ধরলে ৮ জুলাই থেকে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত প্রায় ২১০০ জন প্যালেস্তাইনি প্রাণ হারিয়েছেন।
কোয়াসিম ব্রিগেডের প্রধান মহম্মদ দেইফকে এর আগেও বেশ কয়েক বার হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে ইজরায়েল। উপুর্যপরি ইজরায়েলি হানায় দেইফের শারীরিক ক্ষতিও হয়েছে। এখন তাঁর চলাফেরায়ও সমস্যা হয়। দেইফের স্ত্রী ও পুত্রের মৃত্যুতে প্যালেস্তাইন-কর্তৃপক্ষ তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। নিজেদের হামলাকে সমর্থন করে ইজরায়েলি সেনা জানিয়েছে, সেই সময়ে দেইফ ওই বাড়িতেই ছিলেন বলে তাদের কাছে খবর ছিল। তা ছাড়া ইজরায়েলের উপরে একাধিক হামলার জন্য দেইফ দায়ী। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেইফের বাড়িতে হামলার কারণেই এ বার গাজা থেকে রকেট আক্রমণের তীব্রতা বেশি ছিল। তবে এর পরেও ইজরায়েল থেকে কোনও হতাহতের খবর মেলেনি।
এ দিকে আলোচনা ভেস্তে যাওয়ায় মিশরের তরফ থেকে গভীর দুঃখপ্রকাশ করা হয়েছে। তারা এর পরেও মধ্যস্থতার চেষ্টা চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে। গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব বান কি-মুনও। এতে ত্রাণের পাশাপাশি গাজার পুনর্গঠন তীব্র ধাক্কা খাবে বলে তাঁর আশঙ্কা। আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার দায় দু’পক্ষই একে অপরের উপরে চাপিয়েছে। ইজরায়েল গাজাকে সম্পূর্ণ অস্ত্রমুক্ত করার দাবি নিয়ে আলোচনায় গিয়েছিল। অন্য দিকে, হামাসের দাবি ছিল গাজা থেকে মিশর ও ইজরায়েলের অবরোধ প্রত্যাহারের। সূত্রের খবর, আলোচনায় হামাস গাজায় একটি সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দর তৈরির দাবি করে। ইজরায়েল পরে এই দাবি বিবেচনার আশ্বাস দেয়। কিন্তু হামাস নিজেদের এই দাবিতে অনড় থাকায় আলোচনা ভেস্তে যায়।