অর্থলগ্নি সংস্থার বেআইনি কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগে ওড়িশার বিজু জনতা দলের (বিজেডি) সাংসদ রামচন্দ্র হাঁসদাকে গ্রেফতার করল সিবিআই। ময়ূরভঞ্জের ওই সাংসদের সঙ্গে একই অভিযোগে এ দিন রাজ্যের অন্য দুই প্রাক্তন বিধায়ককেও গ্রেফতার করা হয়। সিবিআই সূত্রে খবর, ওই দুই প্রাক্তন বিধায়ক বিজেডি-র সুব্রত নায়েক এবং বিজেপি-র হিতেশ বাগারটি। হাঁসদা-সহ তিন জনকে জেরার পরেই গ্রেফতার করা হয় বলে সিবিআই সূত্রে খবর।
সিবিআইয়ের দাবি, রাজ্যের এক বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থা ‘নবদিগন্ত ক্যাপিটাল সার্ভিসেস’-এর সঙ্গে ওই তিন জনেরই যোগাযোগ ছিল। তদন্তকারী সংস্থার এক শীর্ষ আধিকারিক এ দিন জানিয়েছেন, ধৃত তিন জনের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক চক্রান্ত, জালিয়াতি এবং অর্থ সরানোর মতো অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ওড়িশায় ৪৪টি অর্থলগ্নি সংস্থার কাজকর্ম নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই তদন্ত করছে সিবিআই। ওই সব সংস্থার বিরুদ্ধে বহু আমানতকারীর অর্থ নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে। চলতি বছরের জুলাইয়ে হাঁসদার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ২৮ লক্ষ টাকা উদ্ধার করে সিবিআই। যদিও এ বিষয়ে হাঁসদার দাবি, “আমার বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া ওই অর্থের একাংশ আমার নিজের নয়, তা দলের এবং দলীয় সমর্থকদের।” এমনকী, তিনি এ-ও অভিযোগ করেন যে, “নবদিগন্ত’-র এক ডিরেক্টর কংগ্রেসের সদস্য। তিনিই গোটা বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করছেন।” সারদা-কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গে সিবিআই তদন্তে অনেককেই জেরার মুখে পড়তে হয়েছে। এ দিনের গ্রেফতারিতে ফের এক বার অস্বস্তিতে পড়ল ওড়িশার শাসক দল (বিজেডি)।
তবে এ দিনের এই গ্রেফতারিতে প্রশ্নের মুখে সিবিআইয়ের তৎপরতা। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি টি এস ঠাকুর এবং বিচারপতি আর ভানুমতীর বেঞ্চে আমানতকারী-সহ এজেন্টদের স্বার্থ রক্ষার্থে চলা একটি মামলার শুনানিতে পশ্চিমবঙ্গের হয়ে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সিবিআই-এর ভূমিকার সমালোচনা করেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, সারদা ছাড়া এ ধরনের অন্যান্য সংস্থার বিরুদ্ধে চলা মামলায় সিবিআই কিছু পদক্ষেপ করছে না। যদিও সেই দাবি মানতে চায়নি সিবিআই। এ বিষয়ে অভিযুক্ত ওড়িশার এক বিধায়কেও গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রের বক্তব্য। তবে কি সুপ্রিম কোর্টে সিবিআইয়ের ভূমিকার সমালোচনার ফলে এই গ্রেফতারি? উঠেছে প্রশ্ন।