অনেক নেতির মধ্যেও ইতির উজ্জ্বল রেখাটা রয়েছে।
জোট হেরে যাওয়ার পরে যখন তৃণমূল শিবির থেকে তুমুল ব্যঙ্গ, রাস্তায় রাস্তায় কটাক্ষের মিছিল যখন বলছে ‘জোটের অকাল প্রয়াণে আমরা শোকাহত’, যখন সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে বাম-কংগ্রেসের প্রতি বিদ্রূপের হুল, সেই পরিস্থিতিতেও দৃঢ়তা দেখালেন সূর্যকান্ত মিশ্র, অধীররঞ্জন চৌধুরীরা। স্পষ্ট শব্দে জানালেন, জোট অক্ষুন্ন রেখেই সামনে এগোবে বাংলার বিরোধী রাজনীতি।
প্রতিপক্ষের তুমুল জয়োল্লাসের মধ্যে যখন নিজের শিবিরেও ক্ষোভ, উষ্মা, দ্রোহের আঁচ পাওয়া যায়, তখন শান্ত থেকে সিদ্ধান্ত নিতে হয় সেনাপতিকে। সূর্যকান্ত মিশ্র, অধীররঞ্জন চৌধুরীরা তা-ই করলেন। শত বিদ্রূপ নস্যাৎ করে বার্তা দিলেন অক্ষুন্ন থাকবে জোট।
তৃণমূলের সর্বপ্লাবী প্রভাবের সামনে এ রাজ্যে অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়ে গিয়েছিল বাম জনভিত্তি। কংগ্রেসের সঙ্কটও কিছু কম ছিল না। এ নিয়ে কোনও সংশয় নেই যে হাতে হাত না রাখলে খড়কুটোর মতো উড়ে যেতে হত তৃণমূল ঝড়ে। জোট সেই ফাঁড়া কাটিয়ে দিয়েছে। বাম-কংগ্রেস নিজেদের বুনিয়াদী সমর্থনটুকু অন্তত ধরে রাখতে পেরেছে। আশার কথা, দু’পক্ষের নেতারাই তা উপলব্ধি করেছেন। অজস্র ব্যঙ্গের মাঝেও দৃঢ় স্বরে জানিয়েছেন, বহাল থাকবে মিত্রতা।
বিবেচকের মতো সিদ্ধান্ত, সংশয় নেই। কিন্তু ধারাবাহিকতা জরুরি। মিত্রতা বহাল রেখে এখনও অনেক পথ এগোতে হবে বাম-কংগ্রেসকে। দেখার বিষয়, বাংলার বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরের শীর্ষস্থানীয়েরা এই পরিণতমনস্কতা ধরে রাখতে পারেন কি না।