মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
মমতা বললেন, ‘‘তমলুক কাঁথি দুটোই তৃণমূলের সিট, তৃণমূলকে দিন। গদ্দাররা দখল করেছে। ওদের দখলমুক্ত করুন। ’’
মমতা বললেন, ‘‘অল ইন্ডিয়া লেভেলে আমরা বিরোধী জোট ইন্ডিয়া তৈরি করেছিলাম। আমরা জোটে থাকব। অনেকে আমাকে ভুল বুঝেছে। আমি জোটে আছি। আমি ওই জোট তৈরি করেছি। আমি জোটে থাকবও। এখানকার সিপিএম নেই। এখানকার কংগ্রেস নেই। কিন্তু সর্বভারতীয় স্তরে আমরা জোটে থাকব। ভুল বোঝাবুঝির কোনও জায়গা নেই। ভুল খবর ছড়িয়েছে। এতে বিভ্রান্তি হচ্ছে। ’’
নতুন স্লোগান মমতার। বললেন, ‘‘দেশ থাক, মোদী যাক, ধর্ম থাক, মোদী যাক। তাই বলি অলি গলি মে শোর হ্যায়। আপনারা বলবেন ফোর টোয়েন্টি চোর হ্যায়।’’ হাসির রোল উঠল দর্শকাসনে। উঠল পাল্টা স্লোগান।
মমতা বললেন, ‘‘পার্টির নামে টাকা চাইলে দেবেন না। আমার পার্টি আপনাদের টাকা চাইবে না। আমাদের যতটা ক্ষমতা ততটাই করব। বিজেপির মতো বিজ্ঞাপন দিই না। তবে আমাদের কাছে বেশি এক্সপেক্ট করবেন না। আমরা কারও পকেটে টাকা গুঁজে দিয়ে আসতে পারব না।’’
মমতা বললেন, ‘‘যখন তৃণমূল কংগ্রেস করি বাপও-ব্যাটাও ছিল না। এখানে ছিল অখিল গিরি। ওরা কংগ্রেসে ছিল। আমাদের হাত ধরে জেতার আগে ওরা অনেক বার হেরেছে। এখন বিজেপিতে গিয়েছে টাকা বাঁচানোর জন্য।’’
মমতা বললেন, ‘‘মোদী জিতবে না। যদি জিতে যায়, তা হলে গ্যাসের দাম ২০০০ টাকা হয়ে যাবে। বাহবা গ্যারান্টিলাল, বাহবা গদ্দার দালাল!’’
মমতা বললেন, ‘‘ভোটের সময় কয়েকটা কথা বলতে চাই। মোদীকে আমি মোদীবাবু বলব না। বলব গ্যারান্টিবাবু। যেমন গদ্দার বলি, নাম নিই না। তেমনই এখানেও আমি নাম নেব না। আমি গ্যারান্টিবাবু বলব। তিনি কী বললেন, বিনা পয়সায় চাল দিচ্ছেন। দু’বছর ধরে এক টাকাও দিচ্ছেন? আমি বলছি হয় আপনি ক্ষমা চান, না হলে বলুন আপনি টাকা দিয়েছেন চালের। ফোর টোয়েন্টির নতুন গ্যারান্টি। টিভিতে, কাগজে, বিজ্ঞাপনে সর্বত্র বলছে বিনা পয়সায় গ্যাস দিয়েছে। দিয়েছে? তার মানে গ্যারান্টিবাবু, ফোর টোয়েন্টি গ্যারান্টি, গ্যাসবেলুনের থেকেও বড় গ্যাসবেলুন, নো গ্যারান্টি। বলুন তো বিনা পয়সায় বিদ্যুৎ দেবে বলেছিল, দিয়েছে? তার মানে নো গ্যারান্টি ফোর টোয়েন্টি।’’
মমতা বললেন, দিঘাতে কে সৈকতসরণি করেছে? বম্বের মতো মেরিন ড্রাইভ? তিনটে সেতু তৈরি করতে হয়েছে। এত সস্তার কাজ এগুলো নয়। শয়ে শয়ে কোটি টাকা খরচ হয়েছে। তাই এখন দিঘায় এলে লোকে বলে কী ছিল আর কী হয়েছে। দিঘায় জগন্নাথের মন্দির থেকে শুরু করে দিঘা গেট থেকে শুরু করে, ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টার, জাদুঘর, মাতঙ্গিনী হাজরার বাড়িতে গ্যালারি, পিছাবনী স্মৃতিসৌধ আরও অনেক কিছু করেছি। যে ভাবে আমি দিঘা, হলদিয়া, নন্দকুমার, নন্দীগ্রামকে সাজিয়ে দিয়েছি, খেজুরিকে সাজিয়ে দিয়েছি... খেজুরিতে আগে কী করত? এখন ওখানে মস্তানি করছে!’’
মমতা বললেন, ‘‘মনে রাখবেন, আমি এখানে অনেক কাজ করেছি। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন করেছি। আমি না থাকলে দিঘা-তমলুক হত না। নন্দীগ্রামে যখন এসেছি, তখন কেউ আসেনি। এখানে কলেজ থেকে শুরু করে জলের লাইন, মাছের ব্যবসা এবং ব্যবসায়ীদের সুবিধার জন্য পরিকাঠামো সব করেছি আমি।’’
তমলুকে ভোটের প্রচারে এসে নন্দীগ্রামের ২০২১ সালের ভোটের কথা মনে করিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘‘নন্দীগ্রামে ওরা সে দিন লোডশেডিং করিয়ে জিতেছিল। ডিএম বদলে দিয়েছিল। সে কথা আমি ভুলিনি। এর বদলা আমি নেব। আজ না হয় কাল এর বদলা নেবই। চিরকাল বিজেপি থাকবে না। চিরকাল, ইডি-সিবিআই কোলে করে রাখবে না। চিরকার এনআইএ, ইনকাম ট্যাক্স পাশে থাকবে না। এর বদলা আমি নেবই।’’
মেদিনীপুরের লোক তৃণমূলে থেকে গদ্দারি করেছে বলে মন্তব্য করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে একই সঙ্গে বললেন, মেদিনীপুরের বিপ্লবী এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের কথাও।