Lok Sabha Election 2024

দিদির প্রশ্নে মোদীর উত্তর, প্রসঙ্গ সিএএ-র প্রয়োগ থেকে নিশীথ প্রামাণিকের দরাজ প্রশংসা

নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশের পর বৃহস্পতিবার প্রথম বাংলায় আসেন মোদী। সিএএ, কেন্দ্রীয় বঞ্চনা প্রসঙ্গে মমতা বিজেপিকে যে আক্রমণ করেছেন, তার পাল্টা জবাব শোনা গিয়েছে মোদীর মুখে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:১৯
Share:

(বাঁ দিক থেকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নরেন্দ্র মোদী এবং নিশীথ প্রামাণিক। —ফাইল চিত্র।

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা, লোকসভা নির্বাচনের আগে একাধিক ইস্যুকে কেন্দ্র করে নরেন্দ্র মোদীর সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে তৃণমূল। বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গের দু’টি সভা থেকেও সে সব প্রসঙ্গ তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোচবিহারের সভা থেকে তাঁর আক্রমণের জবাব দিয়েছেন মোদীও।

Advertisement

নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশের পর বৃহস্পতিবার প্রথম বাংলায় এসেছেন মোদী। কোচবিহারের রাসমেলা ময়দানে তাঁর সভা ছিল। সেখান থেকেই একের পর এক প্রসঙ্গে বাংলার তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করেছেন মোদী। সিএএ, কেন্দ্রীয় বঞ্চনা প্রসঙ্গে মমতা বিজেপিকে যে আক্রমণ করেছেন, তার পাল্টা জবাব শোনা গিয়েছে মোদীর মুখে। তিনি জানিয়েছেন, সিএএর মাধ্যমে দেশের প্রত্যেকটি মানুষ নাগরিকত্ব পাবেন। কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাকে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কত টাকা দিয়েছেন, তা-ও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর মুখে শোনা গিয়েছে কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিকের ঢালাও প্রশংসা। কয়েক ঘণ্টা আগেই যে নিশীথকে কোচবিহারের সভা থেকে নাম না করে আক্রমণ করে গিয়েছিলেন মমতা।

সিএএ প্রসঙ্গে এর আগেও কড়া বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ির সভা থেকে আবার তিনি সিএএ এবং এনআরসির যোগ রয়েছে দাবি করে বলেন, ‘‘সিএএ এবং এনআরসির সংযোগ রয়েছে। অসমে কত মানুষকে ডিটেনশন শিবিরে পাঠানো হয়েছে। আমি দু’টোর কোনওটাই করতে দেব না বাংলায়। ডিটেনশন ক্যাম্পও চালু করতে দেব না।’’ একই প্রসঙ্গে কোচবিহারের সভায় মোদী বলেন, ‘‘বিজেপি সরকার দেশে সিএএ নিয়ে এসেছে। তার মাধ্যমে দেশের প্রতি পরিবারকে নাগরিকত্ব দেওয়া মোদীর গ্যারান্টি। বাংলার মানুষকে বলব, তৃণমূল, বামেরা আপনাদের ভয় দেখাতে পারে। কিন্তু আপনারা ১০ বছর আমার কাজ দেখেছেন। মোদীর গ্যারান্টির উপর ভরসা রাখুন।’’

Advertisement

জলপাইগুড়ির সভা থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের আলাদা স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের উল্লেখ করেন মমতা। বলেন, ‘‘বাইরে যাঁরা কাজ করতে যান, তাঁদের আলাদা স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করানো হয়েছে। যাঁরা এ রাজ্যে কাজ করতে আসেন, তাঁরাও এই কার্ড দেখিয়ে বিনামূল্যে চিকিৎসা করাতে পারবেন।’’ মমতার এই প্রকল্পের পাল্টা হিসাবে মোদীর ভাষণে উঠে এসেছে ‘আয়ুষ্মান ভারত’-এর নাম। কেন্দ্রের ওই প্রকল্পের সুবিধা বাংলায় মমতা চালু করতে দেননি বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘বাংলার জন্য যা উন্নয়নমূলক প্রকল্প নিয়ে আসি, তৃণমূল সরকার চালু করতে দেয় না। ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্প এখানে চালু করতে দেয়নি মমতার সরকার। এখান থেকে কেউ কোনও কাজে বাইরের রাজ্যে গেলে চিকিৎসার খাতে ওই প্রকল্পে টাকা পেতেন মানুষ। তৃণমূল সরকার সেটা করতে দেয়নি।’’

বৃহস্পতিবার কোচবিহারের সভা থেকে সেখানকার বিজেপি প্রার্থী নিশীথকে নাম না করে কটাক্ষ করেছিলেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘এখানে এক জন বাবু আছে। আমরা দল থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলাম। আমাদের দলে ছিল আপদ। আর এখন বিজেপিতে গিয়ে হয়েছে সম্পদ। তোমার বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ আছে বলে দেব? সমস্ত কেস বলে দেব।’’ মমতা আক্রমণ করলেও কোচবিহারের সভা থেকে নিশীথকে দরাজ সার্টিফিকেট দেন মোদী। বলেন, ‘‘নিশীথজিকে আপনারা সকলে ভোট দিন। উনি লাগাতার সংসদে বাংলার আওয়াজ তুলেছেন। আপনাদের ওঁকে আবার রেকর্ড ভোটে জিতিয়ে লোকসভায় পাঠাতে হবে।’’

লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বঞ্চনাকে অন্যতম প্রধান ইস্যু করেছে তৃণমূল। বৃহস্পতিবারও দু’টি সভা থেকেই মমতা কেন্দ্রের কাছ থেকে বাংলা টাকা না পাওয়ার প্রসঙ্গ তুলেছেন। মোদী তার বিরোধিতা করেন। বাংলাকে টাকা দেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বাংলায় আমরা অনেক টাকা পাঠিয়েছি। কিন্তু এখানকার সরকারের বাধায় অনেক কাজ আটকে গিয়েছে।’’ অর্থাৎ, কেন্দ্রীয় বঞ্চনা প্রসঙ্গে পাল্টা রাজ্য সরকারের ঘাড়েই দায় চাপালেন প্রধানমন্ত্রী।

আগামী ১৯ এপ্রিল থেকে দেশে সাত দফার লোকসভা নির্বাচন শুরু। প্রথম দফাতেই ভোট রয়েছে বাংলার তিনটি কেন্দ্রে। উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারে ভোটগ্রহণের আগে তাই প্রচারে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়েছে তৃণমূল এবং বিজেপি। সেই আবহে বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গে মোদী, মমতার সম্মুখসমর দেখা গেল। দু’জনেই কোচবিহারে সভা করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন