Arvind Kejrwal

যোগসূত্র কেজরী, মার্চেই ‘ইন্ডিয়া’র জনসভা হতে পারে

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইডি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে গ্রেফতারের পর থেকেই আম আদমি পার্টি দিল্লিতে বিক্ষোভ শুরু করেছিল। যা অব্যাহত রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৪ ০৬:২৪
Share:

অরবিন্দ কেজরীওয়াল। ছবি: পিটিআই।

অরবিন্দ কেজরীওয়ালের গ্রেফতারি ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের নতুন অনুঘটক হয়ে উঠতে চলেছে। আম আদমি পার্টি ‘ইন্ডিয়া’-র শরিক দলগুলিকে সঙ্গে নিয়ে দিল্লিতে জনসভা করে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে চাইছে। এখনও পর্যন্ত বিরোধী দলগুলির মধ্যে যে কথাবার্তা হয়েছে, তাতে ৩১ মার্চ দিল্লিতে জনসভা করার পরিকল্পনা রয়েছে।

Advertisement

আম আদমি পার্টি সূত্রের খবর, তাঁদের তরফে মূলত পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান বিরোধী শিবিরের নেতানেত্রীদের সঙ্গে কথা বলছেন। যে হেতু অনেক রাজ্যেই ভোট দোরগোড়ায়, তাই কারা কারা আগামী সপ্তাহে দিল্লিতে আসতে পারবেন, তা বিচারবিবেচনা করেই জনসভার রূপরেখা চূড়ান্ত হবে।

উল্টো দিকে বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছেন, কেজরীওয়ালকে গ্রেফতারের পাল্টা প্রতিক্রিয়া হবেই। তবে তা সামলে নেওয়া যাবে। কারণ, কেজরীওয়ালই আম আদমি পার্টির একমাত্র মুখ ও প্রধান মস্তিষ্ক। তিনি জেলে থাকলে, আম আদমি পার্টির নেতারা বিশেষ কিছু করে উঠতে পারবেন না। দিল্লিতে লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণের এখনও প্রায় দু’মাস দেরি। কেজরীওয়ালের গ্রেফতারের বিরুদ্ধে অসন্তোষ তৈরি হলেও তা কেটে যাবে। তত দিনে
অন্য বিরোধী দলের নেতানেত্রীরাও নির্বাচন নিয়ে নিজের এলাকায় ব্যস্ত হয়ে পড়বেন।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইডি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে গ্রেফতারের পর থেকেই আম আদমি পার্টি দিল্লিতে বিক্ষোভ শুরু করেছিল। যা অব্যাহত রয়েছে। শনিবার দিল্লিতে আম আদমি পার্টির সঙ্গে কংগ্রেস, বাম দলও রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। সিপিএম আলাদা ভাবেও দিল্লির একাধিক এলাকায় বিক্ষোভ দেখিয়েছে। সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা কেজরীওয়ালের বাড়িতে গিয়ে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। বিরোধী নেতারা মনে করছেন, পদে থাকা অবস্থায় কোনও মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতারের ঘটনা ইতিহাসে বিরল। এই ঘটনা বিরোধীদের ফাটল ঢেকে দিতে পারে।

কংগ্রেস, আপ নেতৃত্বের মতে, মোদী সরকার যে বিরোধীদের জেলে পুরে, তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে, বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ভোটের আগে তাদের পঙ্গু করে দিতে চাইছে, তা স্পষ্ট। মোদী সরকার প্রত্যাশামতো জয়ের সম্ভাবনা দেখছে না। সেই কারণে ইডি, সিবিআইয়ের মতো তদন্তকারী সংস্থাকে কাজে লাগানো হচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ। সাধারণ মানুষ সব বুঝতে পারলেও বিরোধী মঞ্চ থেকে সম্মিলিত ভাবে এই বার্তা দেওয়া জরুরি বলেও তারা মনে করছে।

কংগ্রেস নেতাদের যুক্তি, প্রথমে ঝাড়খণ্ডের হেমন্ত সোরেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার পরে বিআরএস নেত্রী কে কবিতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কংগ্রেসের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লেনদেন বন্ধ করা হয়েছে। এরপরে কেজরীওয়ালকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার তৃণমূলের মহুয়া মৈত্রের ঠিকানায় তল্লাশি হয়েছে। বিরোধী শিবির এ নিয়ে নরেন্দ্র মোদী তথা বিজেপিকে ‘ভয় পেয়ে যাওয়া স্বৈরাচারী’ বলে তকমা দিতে চাইলেও বিজেপি শিবির মনে করছে, কেজরীওয়ালকে জেলে পোরার ধাক্কা আম আদমি পার্টি সামলাতে পারবে না।

দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে কেজরীওয়াল বার বার বিজেপিকে হারালেও লোকসভা ভোটে দিল্লির সাতটি লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপিই জয়ের রথ ছুটিয়েছে। এ বার কংগ্রেস, আপ আসন সমঝোতা করে দিল্লিতে লড়ছে। তবে বিজেপি নেতারা মনে করছেন, কেজরীওয়াল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে জনমুখী কাজ করেছেন। তিনি সুবক্তা, মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক ভূমিকা নিতে পারেন। তিনি জেলে থাকলে ভোটের সময় বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচারের ধার ও ভার কমে যাবে। মণীশ সিসৌদিয়া, সঞ্জয় সিংহের মতো নেতাদেরও আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে। পড়ে রয়েছেন শুধু সৌরভ ভরদ্বাজ, অতিশীর মতো নবীনরা। তা ছাড়া, যত বড় নেতা হোন না কেন, দুর্নীতি করলে রেয়াত না করার বিষয়ে মোদী সরকারের নীতিরও বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়বে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন