Lok Sabha Election 2024

‘কে অর্জুন না কৃষ্ণ পুরস্কার পেলেন, ভোটে ফ্যাক্টর নয়’, প্রসূনকে কটাক্ষ তৃণমূল বিধায়কের! শোরগোল

হাওড়ার সালকিয়ায় বসন্ত উৎসবের অনুষ্ঠানে প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক অশোক ঘোষের মেয়ে সুজাতা দত্তকে দেখিয়ে প্রসূন বলেন, ‘ও ভাল করে কাজ করছে। ও কাউন্সিলর হোক। তার পর এমএলএ হবে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৪ ২০:৫৫
Share:

প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ই প্রথম রাজনীতিবিদ যিনি ফুটবলার থেকে সাংসদ হয়েছেন। ক্রীড়াজগতে প্রচুর সম্মান অর্জন করেছেন। আবার ভোট রাজনীতিতেও সফল। কিন্তু এ বার লোকসভা ভোটে শুরু থেকে দলের মধ্যেই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে হাওড়া সদরের তৃণমূল প্রার্থী প্রসূনকে। কিছু দিন আগে তাঁর বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহোদর বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার ১৯৭৯ সালে অর্জুন পুরস্কার জয়ী প্রসূনকে কটাক্ষ করলেন তৃণমূলেরই বিধায়ক গৌতম চৌধুরী। দলীয় প্রার্থীর উদ্দেশে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘কে অর্জুন কিংবা কৃষ্ণ পুরস্কার পেল তা ভোটে কোনও ফ্যাক্টর নয়।’’ ইতিমধ্যে এ নিয়ে হাওড়া তৃণমূলের মধ্যে শুরু হয়েছে তরজা।

Advertisement

ঘটনার সূত্রপাত রবিবার। হাওড়ার সালকিয়ায় বসন্ত উৎসবের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন বিদায়ী সাংসদ তথা ’২৪-এর লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন। তিনি মঞ্চে বক্তৃতা করতে গিয়ে উত্তর হাওড়ার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক অশোক ঘোষের মেয়ে সুজাতা দত্তকে দেখিয়ে বলেন, ‘ও ভাল করে কাজ করছে। ও কাউন্সিলর হোক। তার পর এমএলএ হবে।’’ ওই বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হতেই সকাল-সকাল হাওড়া পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় শুরু হয় উত্তেজনা। ওই এলাকার বাসিন্দা গৌতম চৌধুরী হাওড়া উত্তর কেন্দ্রে বিধায়ক। প্রসূনের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তাঁকে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন গৌতম। লোকসভার তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে ক্ষোভও চাপা রাখেননি বিধায়ক। তাঁর কথায়, ‘‘যে ভাবে প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে এক জনকে কাউন্সিলর অথবা বিধায়ক হওয়ার রাজনৈতিক টোপ দিচ্ছেন তা ঠিক নয়।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘প্রয়োজনে ভোটের পর দলের মধ্যে সুজাতা দত্তের নাম কাউন্সিলরের টিকিটের জন্য প্রস্তাব দিতে পারতেন। তা-না করে প্রকাশ্যে এ ভাবে মন্তব্য করছেন। এতে দলীয় কর্মীরা মানসিক ভাবে আহত হয়েছেন।’’ এখানেই থামেননি ওই তৃণমূল বিধায়ক। হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বলেন, ‘‘উনি (প্রসূন)১০ শতাংশ কর্মীকে (তৃণমূল) খুশি করতে গিয়ে যদি ৯০ শতাংশ কর্মী ভোটের সময় বসে যান, তা হলে কী হবে?’’

প্রসূন হাওড়া সদর কেন্দ্রের তিন বারের সাংসদ। চতুর্থ বার সাংসদ হওয়ার লড়াইয়ে নেমেছেন। কিন্তু প্রসূনকে প্রার্থী হিসাবে পছন্দ নয় বলে মুখ্যমন্ত্রীর ভাই বাবুন জানিয়েছিলেন, প্রয়োজনে তিনি নির্দল হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। যদিও ঘটনাক্রমে তৃণমূল নেত্রী মমতার হুঁশিয়ারি এবং ভাইয়ের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের কথা বলার পরেই বাবুনের ‘বিদ্রোহ’ থেমে গিয়েছে। তবে প্রসূনকে নিয়ে তৃণমূল বিধায়ক গৌতম বলেন, ‘‘কে অর্জুন বা কৃষ্ণ পুরস্কার পেল সেটা ফ্যাক্টর নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই শেষ কথা। মুখ্যমন্ত্রী এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ব্রিগেড সমাবেশে প্রসূনবাবুর নাম ঘোষণা করতেই আমরা তাঁর জন্য প্রচার শুরু করেছি। তাঁকে জেতানোর চেষ্টা করব।’’ এ নিয়ে প্রসূন আর কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। অন্য দিকে, প্রসূনকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির রাজ্য সম্পাদক উমেশ রাই। তিনি বলেন, ‘‘প্রসূন হাওড়া সদর থেকে তিন বার সাংসদ হওয়া সত্ত্বেও মানুষের জন্য কোনও উল্লেখযোগ্য কোনও কাজ করেননি। তাই তিনি এখন প্রকাশ্যে ‘কাউন্সিলর করে দেব’, ‘এমএলএ করে দেব’— এই সব প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। ভোটের সময় সাধারণ মানুষের উন্নয়নের জন্য কোনও প্রতিশ্রুতি না-দিয়ে নিজের দলের কর্মীদের নানা রকমের টোপ দিচ্ছেন। এটা তৃণমূলেই সম্ভব। তবে এ বার মানুষ আর এ সব বরদাস্ত করবে না। বিজেপি এখানে জিতবে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement