হুলের দংশনটা এ বার ভাল মতোই টের পাচ্ছেন তৃণমূল নেতারা। প্রথম দিকে ফুত্কারে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা ছিল ঠিকই, দিন যত গড়াচ্ছে, শিবিরের সেনাপতিরা টের পাচ্ছেন নারদের হুল শাঁখের করাত হয়ে চেপে বসছে। আসতেও কাটছে, যেতেও কাটছে।
এবং যেমনটা হয়ে থাকে, ওষুধটা গোড়াতেই না পড়লে শরীরের সর্বত্র ছড়িয়ে যাওয়া বিষ প্রকট হতে শুরু করে। হচ্ছেও তাই। কথায় কথায় ইস্তফা দাবি করা দাপুটে তৃণমূল শিবির, স্টিং কাণ্ডের কারণেই বঙ্গারু লক্ষ্মণ-জর্জ ফার্নান্ডেজের ইস্তফার দাবিতে দেশ তোলপাড় করা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অস্বস্তিটা অতএব বোধগম্য। নিজেরই রাজ্যের এক পুলিশ অফিসারের মুখে যে সব বয়ান বেরিয়ে আসছে, যে বয়ানে দলের মন্দ বই ভাল কিছু হচ্ছে না, তাঁকেও স্বপদে বহাল রাখতে বাধ্য হচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী ওই একটাই কারণে— শাঁখের করাত।
ব্যবস্থা নিলেও কাটবে। এক পঙ্ক্তিতে বসে যাবে মির্জা-ববি-শোভন-মদনরা। অতএব ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না, অতএব কাটুক। তৃণমূলের পা কাটছে এখন পচা শামুকে। মির্জা-দত্তদের হুলে আপাতত বিদ্ধ তৃণমূল।
ভাগ্যের পরিহাস এমনই, ঠিক পাঁচ বছর আগে সততাকেই প্রধান মূলধন করে রাজ্যপাটে আসার পর তৃণমূলকে প্রধান পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে ঠিক ওই শব্দটাকে ঘিরেই। পরীক্ষাটা কঠিন হয়ে আসছে ক্রমেই বুঝতে পারছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ লড়াইটা শুধু একটা নির্বাচন জেতাই নয়, তিলে তিলে গড়ে তোলা একটা ভাবমূর্তির এই ভাবে আচমকা পতনের বিরুদ্ধেও লড়াই।