প্রায় ছ’বছর পর আবার পাকাপাকি ভাবে কলকাতায় থাকতে এলাম। সবার আগে যেটা চোখে পড়েছে সেটা হল, কলকাতা অনেক সুন্দর ভাবে সেজে উঠেছে। চারিদিকে নীল-সাদা রঙের ব্যারিকেড পড়েছে। প্রচুর আলো। বাইপাসে ঝর্না বসেছে। কোথাও বিগ বেন হয়েছে। কালীঘাট শ্মশানের চেহারা বদলে গিয়েছে। মানে, এককথায় গত পাঁচ বছরে এই সরকার আসার পরে বেশ পজিটিভ চেঞ্জ হয়েছে বলতে পারেন। অন্তত আমার তো তেমনই চোখে পড়েছে।
আর বিশেষ ভাবে বলব, আমি যে প্রফেশনে রয়েছি তার পরিবর্তনের কথা। মুখ্যমন্ত্রী স্টুডিও পাড়ার খোলনোলচে বদলে দিয়েছেন। প্রায় সব কটা স্টুডিওর চেহারা আমূল পাল্টে গিয়েছে। রুলিং গর্ভনমেন্ট অনেক শিল্পী-বুদ্ধিজীবীকে সরকারি পদমর্যাদা দিয়েছেন। মানে বলতে চাইছি, আগের সরকারের থেকে এই সরকারের আমলে অনেক বেশি অভিনেতা-অভিনেত্রী বিধায়ক বা সাংসদ হয়েছেন। আমার কাছে অনেকে জানতে চান, দিদি আপনি কেন রাজনীতিতে এলেন না? আমার সহজ স্ট্যান্ডপয়েন্ট হল, আমি পলিটিক্স বুঝি না। আর যেটা বুঝি না সেটা করব না। দূর থেকে ঠিক আছে। সত্যি কথা কি জানেন, রুলিং পার্টি বাদে আমার কাছে এ বারের ভোটে দাঁড়ানোর জন্য প্রচুর অফার ছিল। আসানসোল থেকে দাঁড়াতে বলা হয়েছিল। দিল্লি থেকে বড় মাপের নেতারা ফোন করে রিকোয়েস্ট করেছেন। কিন্তু আমার ওই এক কথা। রাজনীতি বুঝি না। তাই ভোটে লড়ার কোনও প্রশ্নই নেই। আমার কাজ নিয়ে আমি বেশ আছি।
তবে কলকাতা যতই ভাল হোক না কেন, মফসসল কিন্তু আগের জায়গাতেই পড়ে রয়েছে। ক’দিন আগেই বারুইপুর থেকে আরও ভিতরে শুটিংয়ে গিয়েছিলাম। কোনও উন্নতি নেই জানেন। আলো নেই, রাস্তা খারাপ। ওখানকার লোকেরা আমাকে বলছে, দিদি আপনারা তো এক দিন-দু’দিনের জন্য আসেন, চলে যান। কিন্তু আমাদের এই অবস্থার মধ্যেই থাকতে হয়। তাই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমার বিনীত আবেদন, ভোট আসছে। শুধু কলকাতার দিকে না তাকিয়ে এ দিকেও এ বার একটু নজর দিন। আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের ভাল করার চেষ্টা করেন। এটা আমার বার বার মনে হয়েছে। হয়তো সব সময় সেটা হয়ে ওঠে না। তবে চেষ্টাটা কোনও ভাবেই অস্বীকার করা যাবে না।
ভোটের বাদ্যি বাজলেই একটা ভয়ের কথা খুব মনে হয়। সেটা হল ভোট সংক্রান্ত গন্ডগোল। দেখুন, গন্ডগোল হবেই। কিন্তু সেটা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা থাকতে হবে। যাই হোক না কেন, ভোট দেওয়াটা খুব জরুরি। আমি মনে করি, এটা আমার সমাজের প্রতি কমিটমেন্ট। যখন মুম্বইতে ছিলাম, কলকাতায় এসে ভোট দিয়ে যেতাম। আর এখন তো এখানেই আছি। সুতরাং ভোট দেবই।