মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি কেন্দ্রের নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিচ্ছেন তৃণমূলের গৌতম কীর্তনীয়া। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
দলের নির্দেশ মেনে শিলিগুড়ির মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি কেন্দ্রে তৃণমূলের তরফে ইতিমধ্যে মনোনয়ন জমা করেছেন অমর সিংহ। সোমবার ওই আসনেই নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দিলেন তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ নেতা গৌতম কীর্তনীয়া। যিনি দীর্ঘ দিন নকশালবাড়ি এলাকায় দলের ব্লক সভাপতি ছিলেন।
ওই আসনে জোটের প্রার্থী হয়েছেন কংগ্রেসের জেলা সভাপতি শঙ্কর মালাকার। বিক্ষুব্ধ নেতা গৌতমবাবু মনোনয়ন তুলে না নিলে ওই আসনে তৃণমূল বেকায়দায় পড়বে বলে আশঙ্কা করছে দলই। গৌতমবাবুর অভিযোগ, ‘‘দুটি বিয়ে করেছেন অমরবাবু। অবৈধ ভাবে দুটি বিয়ে থাকা নিয়ে অমরবাবুর মনোনয়ন বাতিল হলে দল বিপাকে পড়তে পারে। তাতে শঙ্করবাবু লড়াইতে ফাঁকা মাঠে পেয়ে যাবেন। তা যাতে না হয় সে জন্যই নির্দল হিসাবে দাঁড়িয়েছি।’’ অমরবাবুর দাবি, ‘‘বিয়ে নিয়ে কুৎসা রটানো হচ্ছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘দলের তরফে আমাকে প্রার্থী করা হয়েছে। এ ব্যাপারে যা বলার, ব্যবস্থা নেওয়ার, দলই নেবে।’’
গৌতমবাবুর দাবি, ‘‘আমি বিক্ষুব্ধ বা দল বিরোধী কাজ করছি বলে কোনও ব্যাপার নেই। দলের জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার এবং অন্যতম মুখ্য উপদেষ্টা গৌতম দেবের সঙ্গে এ ব্যাপারে গত ১৫ দিন ধরেই যোগাযোগ রেখে চলেছি। তাঁদের জানিয়েই এ দিন মনোনয়ন জমা দিয়েছি। আমি তৃণমূলেই রয়েছি।’’ তাঁর কথায়, ওই কেন্দ্রে যিনি বিরোধী জোটের প্রার্থী হয়েছেন সেই শঙ্করবাবুর তফসিলি জাতির শংসাপত্র জাল বলে তিনিই অভিযোগ তুলেছেন।
তৃণমূলের গৌতম দেব বলেন, ‘‘আমি কিছু জানি না। বিষয়টি দেখতে হবে।’’ বর্তমানে তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার জানান, দলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেই যা বলার বলবেন। তিনি বলেন, ‘‘গৌতমবাবু দলের প্রার্থী নন। দল ইতিমধ্যেই ওই আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। তিনি মনোনয়নও জমা করেছেন। অন্য যে কেউ নির্দল হিসাবে দাঁড়াতেই পারেন। সেই অধিকার সকলেরই আছে।’’
যদিও তৃণমূলের নকশালবাড়ি ১ এবং ২ নম্বর ব্লকের দুই সভাপতি পৃথ্বীশ রায় এবং আনন্দ ঘোষ জানান, গৌতমবাবুর গ্রহণযোগ্যতা নেই। জেলা সভাপতি রঞ্জনবাবুকে তিন পাতার একটি চিঠি লিখে কেন তিনি নির্দল হিসাবে দাঁড়াতে চান, তা জানিয়েছেন। গৌতমবাবু জানান, শঙ্করবাবুর জাল শংসাপত্র নিয়ে তিনি কমিশনে অভিযোগ জানাবেন। শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘ওঁকে ভাল করে চিনিও না। ওঁর অভিযোগ বা কথার কোনও গুরুত্ব আমার কাছ নেই।’’