তৃণমূল ছেড়ে আসা প্রাক্তন বিধায়ক দুলাল বরকে বাগদা কেন্দ্রে প্রার্থী করল কংগ্রেস। বামফ্রন্টের তরফে এর আগে উত্তর ২৪ পরগনায় তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত ওই আসনে ফরওয়ার্ড ব্লকের মৃণাল সিকদারকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছিল। কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি বুধবার সন্ধ্যায় যে সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছে, তার ফলে এখন ২৩টি আসনে বাম ও কংগ্রেস, দু’পক্ষেরই প্রার্থী থাকল।
বহু বছর ধরেই বামফ্রন্টের শরিক হিসাবে বাগদা কেন্দ্রটিতে লড়ে ফব। কিন্তু ২০০৬ সালে আসনটি তাদের হাতছাড়া হয়। তৃণমূলের প্রার্থী হিসাবে দুলালবাবুই সে বার ফব-কে হারিয়ে বিধায়ক হয়েছিলেন। আবার ২০১১ সালে পরিবর্তনের ভোটে দুলালবাবুর পরিবর্তে কংগ্রেস-তৃণমূলের জোট প্রার্থী হিসাবে বাগদায় দাঁড়িয়েছিলেন প্রাক্তন সিবিআই কর্তা উপেন বিশ্বাস। জিতে উপেনবাবু মন্ত্রী হয়েছেন আর অন্য দিকে দুলালবাবুর সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব ক্রমশ বেড়েছে। সারদা-কাণ্ডের জেরে দলের মধ্যে মুকুল রায় যখন ব্রাত্য হয়ে পড়েছিলেন, তাঁর অনুগামী বলে পরিচিত দুলালবাবুর সঙ্গেও তৃণমূলের বিরোধ তখন চরমে উঠেছিল। শাসক দলের নেতৃত্ব প্রাক্তন বিধায়কের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত এ বার ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসেই যোগ দেন দুলালবাবু। এ বার তাঁকে উপেনবাবুর বিরুদ্ধে প্রার্থীও করে দেওয়া হল।
ফব নেতৃত্বের একাংশ কংগ্রেসের এমন সিদ্ধান্তে বিস্মিত। তাঁদের বক্তব্য, বহু আগেই ওই আসনে বামফ্রন্টের প্রার্থী ঘোষণা হওয়া সত্ত্বেও কংগ্রেস কি এখন সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা বলে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই’য়ের ক্ষেত্র বাড়াতে চাইছে? আবার ফ ব-রই অন্য একাংশ এবং সিপিএমের একাংশ মনে করছে, তৃণমূলের বিরুদ্ধে বাগদায় লড়াই দিতে হলে দুলালবাবুই উপযুক্ত প্রার্থী। ওই এলাকার তৃণমূলের সংগঠন ও পঞ্চায়েত স্তরের বিক্ষুব্ধ অংশকে তিনি কাছে টানতে পারবেন। যা ফব প্রার্থীর পক্ষে সম্ভব হতো না। আগে ঘোষণা হলেও ফব প্রার্থী মৃণালবাবু এখনও সে ভাবে বাগদায় প্রচার শুরু করেননি বলেও বাম শিবিরের একটি সূত্রের বক্তব্য। ওই অংশের আশা, তৃণমূলকে হারানোর স্বার্থে এখানে ‘শক্তিশালী প্রার্থী’কে সামনে রেখে এক পক্ষের পিছিয়ে আসতে খুব বেশি সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
বাগদায় প্রার্থী দেওয়ার পাশাপাশিই মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি আসনে প্রার্থী বদলও করেছে কংগ্রেস। জহুরুল হকের পরিবর্তে ওখানে নতুন প্রার্থী হচ্ছেন আমিনুল ইসলাম। মুর্শিদাবাদে একমাত্র এই আসনটিই পাঁচ বছর আগে জিতেছিল তৃণমূল।