মহাকরণ যার, তিনি তারই

মহাকরণ যার, আমি তার! কালো গাড়িতে হলুদ পতাকা— বেশ লাগছে কিন্তু। কর্মীদের কেউ একটা ফুটনোট দিয়েছিলেন। শুনে মনমরা হুমায়ুন বলছেন, ‘‘তা কী হয় রে, তেরঙার একটা আলাদা ইজ্জত আছে!’’ মানে?

Advertisement

সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়

রেজিনগর শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:০৮
Share:

ভোটের গরমে। — নিজস্ব চিত্র

মহাকরণ যার, আমি তার!

Advertisement

কালো গাড়িতে হলুদ পতাকা— বেশ লাগছে কিন্তু। কর্মীদের কেউ একটা ফুটনোট দিয়েছিলেন। শুনে মনমরা হুমায়ুন বলছেন, ‘‘তা কী হয় রে, তেরঙার একটা আলাদা ইজ্জত আছে!’’ মানে?

কংগ্রেস কিংবা ঘাসফুল— তাঁর পুরনো দু’টো দলের পতাকাতেই রয়েছে ত্রিবর্ণ। হাত-ফুল যাই হোক, বাকিটা তো তেরঙা। কোন পথে হাঁটছেন তিনি?

Advertisement

হুমায়ুন বলছেন, ‘‘দেখুন আমি রেখে ঢেকে কথা বলি না। দিদির ঘাসফুল, দাদার জোট যেই ক্ষমতায় আসবে আমি তার দিকে।’’ তার পর নিজের রসিকতাতে নিজেই মজে থাকছেন।

বৃহস্পতিবার খুব সকালেই উঠে পড়েছিলেন তিনি। সকাল থেকেই কোথায় কোন এজেন্ট— লম্বা খাতায় তার হিসেব কষে গাড়ি বের করায় হুকুম দিচ্ছেন তিনি। তার পর ফোন, খাতা আর এক বোতল জল নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন।

কোনও দল নেই তাঁর। সেই সব সাঙ্গোপাঙ্গোরাও উধাও। বলছেন, ‘সুখের পায়রা’ কী আর অসময়ে থাকে!’’ তবে, নিজেই শুধরে দিচ্ছেন, ‘অসময়ই বা বলি কী করে জিতব তো বটেই।’’ এতটাই প্রত্যয়ী তিনি। হবেন নাই বা কেন। গত কয়েক দিনে তাঁর মিছিল দেকে চোখ কপালে উঠেছে স্থানীয় জোট প্রার্থীর। তাঁর সমাবেশে আটকে গিয়েছে রেজিনগরের রেলপথ। ‘‘এত লোক হবে নিজেও বুঝিনি গো!’’ অকপট হুমায়ুন।।

সেই সূত্রেই ভোটের সকালে প্রায় ঘোড়া ছোটাচ্ছেন হুমায়ুন কবীর। তিন সঙ্গীকে নিয়ে চকলেট রঙের সাফারি গাড়িতে চেপে কখনও কাপালডাঙা কখনও আরও দূরে গঙ্গা পাড়ের এলাকা দাপিয়ে বেড়ালেন অবিকল আগের মতো।

ঘুরে পিরে বেড়ানোর পাঁকে মনে পড়ছে— সেই মন্ত্রী তাকার দিনগুলো। কিংবা আরও দূরের সেই কংগ্রেসের ‘দাদার ছায়া’। নিজেই ভোটের সামনে দাঁডডিয়ে পুরনো কংগ্রেস সমর্থককে বলছেন, ‘‘কী গো ভোটটা কিন্তু.....।’’

মির্জাপুর গ্রামের চৌধুরীপাড়া, মোল্লাপাড়া, ছুঁয়ে বেরিয়ে যাও।ার মুখে বেশ কয়েক জন গ্রামবাসী ছুটে আসছেন, ‘‘দাদা ভোট দিতে পারছি না।’’ গাড়ি থেকে নেমে অভয় দিচ্ছেন যেন পুরনো দাপটই রয়ে গিয়েছে। জানাচ্ছেমন, সেক্টর অফিসারের সঙ্গে কথা বলে, ‘সব ব্যবস্থা করে দেব।’ পৌঁছালেন স্বরূপনগর স্কুলে। ছুটে এলো কেন্দ্রীয় বাহিনীর পুলিশ। তাদের এড়িয়ে সোজা চললেন ৩৫ নম্বর বুথে। হাঁটাচলায় যেন এখনও মন্ত্রী। যা শুনে বিশ কিলোমিটার দূরে তাঁর কার্য়ালয়ে বসে অধীর চৌধুরীও কপালে বাঁজ ফেলে বলছেন, ‘‘কী রে হুমায়ুন জিতে যাবে নাকি রে!’’

জেতা হারার জন্য আরও সপ্তাহ দুয়েকের অপেক্ষা। তবে ভোটের ভোরে স্পষ্ট— হুমায়ুন আছেন হুমায়ুনেই!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন