পূর্ব ঘোষিত জনসভা। বেলুড় নেতাজি পার্কের মাঠে আয়োজনও ছিল ষোল আনা। সেই সভা শুরুও হল সময়ে। অথচ তাঁর দেখা নেই। শেষমেশ বলা হল, তিনি মানে তৃণমূলের মুখ্য সচেতক তথা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় খুব অসুস্থ, তাই আসতে পারছেন না।
বালি বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী বৈশালী ডালমিয়ার সমর্থনে সোমবার সন্ধ্যে ছ’টা নাগাদ বেলুড়ের ওই সভার প্রধান বক্তা হিসেবে পার্থবাবুর আসার কথা ছিল। কয়েক দিন আগেই সেই কর্মসূচী স্থির হয়েছিল। সেই মতো এলাকায় প্রচারও চলেছিল। কিন্তু আসল সময়ে পার্থর দেখা না মেলায় প্রশ্ন উঠে গেল তৃণমূলের মধ্যেই। যদিও বৈশালীর দাবি, ‘‘প্রচণ্ড গরমে পার্থবাবু অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ঠিক মতো কথাও বলতে পারছিলেন না। তাই আসতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। অন্য কোনও ব্যাপার নেই।’’
তাই কি? দলেরই একাংশের ব্যাখ্যা ভিন্ন। এক সময়ে নিজেদের মধ্যে চাপানউতোর ছিল মাঠ ছোট পড়বে। ও মাঠে চারশোর বেশি লোক ধরে না। সোমবার বিকেলে দেখা যায়, সে মাঠেরও অর্ধেকের বেশি খালি। খাঁ খাঁ করছে। আগাম সে খবর পেয়েই সেখানে হাজির হননি পার্থবাবু।
বালির এই সভা ব্যতিক্রমী ঘটনা নয়। বালিতে এর আগেও একটি সভায় দলের এক শীর্ষ নেতা উপস্থিত হলেও লোক সমাগম হয়েছিল অনেক কম। রাজনৈতিক শিবিরের ধারনা এলাকায় তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের কারণেই এ ভাবে মুখ পুড়ছে। এ কথা অবশ্য মানতে নারাজ তৃণমূলের হাওড়া জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী অরূপ রায়। তাঁর দাবি, ‘‘বালিতে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। সবাই একজোট হয়েই কাজ করছেন।’’ তিনিও বলেন,‘‘পার্থ দা অসুস্থ, তাই আসতে পারেননি। সভায় লোক হয়নি বলে মিথ্যা গুজব ছড়ানো হচ্ছে। মাঠ ও রাস্তায় উপচে পড়েছে লোক।’’ পার্থবাবু উপস্থিত না হলেও বালির সভায় ছিলেন অরূপ রায়। হাওড়ার ও মেয়র তথা বালির পর্যবেক্ষক রথীন চক্রবর্তীও মঞ্চে ছিলেন। ৬ টা নাগাদ তাঁরা বক্তৃতা দিয়ে চলে যাওয়ার পরে কয়েকজন কাউন্সিলরও মঞ্চের তাপ ধরে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যান। অপেক্ষারত কর্মীদের আশা ছিল পার্থবাবু বুঝি দেরি হলেও আসবেন। কিন্তু ঘড়ির কাঁটা যখন প্রায় সাড়ে সাতটা ছুঁইছুঁই তখনই প্রার্থী বৈশালী ঘোষণা করেন, পার্থবাবু আসতে পারছেন না।
ঘটনা হল বালিতে তাঁর অনুপস্থিতির ব্যাপারে বৈশালীদের সঙ্গে পার্থবাবুর নিজের ব্যাখার একটু ফারাক রয়েছে। এ ব্যাপারে তাঁকে ফোন করা হলে বলেন, ‘‘সারাদিন অনেক রোদ্দুর লেগেছিল। অন্যান্য প্রচারও ছিল। তাই যে সময় বালিতে যাওয়ার কথা ছিল তখন গিয়ে পৌঁছতে পারতাম না। তাই যাইনি। তবে বৈশালীর পাশে একশো শতাংশ আছি। তেমন হলে পরে এক দিনে দুটো সভা করে আসবো।’’