ভোট মিটতে না মিটতেই শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ফের মাথাচাড়া দিল হুগলির চণ্ডীতলায়।
দুর্নীতি, স্বজনপোষণ-সহ নানা অভিযোগ তুলে হুগলির চণ্ডীতলা ১ ব্লকের নবাবপুর পঞ্চায়েতের দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলেন দলেরই সদস্যরা। সোমবার অনাস্থাপত্র জমা দেওয়া হয় বিডিও দফতরে। পঞ্চায়েতের কার্যালয়েও অনাস্থাপত্রের প্রতিলিপি জমা দেওয়া হয়।
তৃণমূলের অন্দরের খবর, দুর্নীতি-স্বজনপোষণের অভিযোগ আনা হলেও অনাস্থার পিছনে মূল কারণ শাসক দলের গোষ্ঠী রাজনীতি। ভোটে দলীয় প্রার্থী স্বাতী খোন্দকারের বিরোধিতা করার অভিযোগ ওঠে নবাবপুরের তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ আসফার হোসেনের বিরুদ্ধে। নবাবপুরের প্রধান শেখ মইদুল ইসলাম সম্পর্কে আসফারের ভাইপো। গোষ্ঠী-বিভাজনের প্রভাব পঞ্চায়েতের কাজেও পড়ছে বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ।
এই পঞ্চায়েতের ২০টি আসনের মধ্যে ১৮টি তৃণমূলের দখলে রয়েছে। গত কয়েক দিন ধরেই মইদুলের সঙ্গে দলের কয়েক জন পঞ্চায়েত সদস্যদের মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না। সোমবার দলের ১১ জন সদস্যের সই করা অনাস্থাপত্র জমা দেওয়া হয় বিডিও-র কাছে। পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য জাহাঙ্গির মল্লিকের দাবি, ‘‘প্রধান দলের অর্ধেক সদস্যকে সম্মান দেন না। একতরফা ভাবে পঞ্চায়েতের কাজ পরিচালনা করেন। নানা কাজে দুর্নীতি হয়েছে।’’
বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিম্নমানের কাজের অভিযোগও তুলেছেন অনাস্থার পক্ষে থাকা সদস্যরা। মঙ্গলবার কিছু গ্রামবাসী পঞ্চায়েতের সামনে গিয়ে প্রধানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান।
নবাবপুর অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি আনিসুর রহমানের কথায়, ‘‘কর্মাধ্যক্ষ এবং প্রধানের দলবল অন্তর্ঘাত করেছেন। যদিও ওঁদের প্রচেষ্টা সফল হয়নি। মেজদিই (স্বাতী খোন্দকার) জিতেছেন।’’
আসফার বা মইদুল অবশ্য অন্তর্ঘাতের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। আসফার দাবি করেছেন, ‘‘আমি পঞ্চায়েতের কাজে হস্তক্ষেপ করি না। বেচারাম মান্না, প্রবীর ঘোষাল, তপন দাশগুপ্তের হয়ে যেমন প্রচার করেছি, স্বাতী খোন্দকারের সমর্থনেও প্রচার করেছি। দলবিরোধী কাজ করিনি। দল তদন্ত করে দেখুক।’’ অন্য দিকে মইদুলেরও দাবি, পঞ্চায়েতে কোনও দুর্নীতি বা স্বজনপোষণ হয়নি। পঞ্চায়েতে কেউ কেউ ইচ্ছেমতো কাজ না পেরে মনগড়া অভিযোগ করছেন। বিষয়টি উচ্চ নেতৃত্বকে জানাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।