ওয়াল দাপাচ্ছে বিরোধীরা

দেওয়াল দখলে পিছিয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। সেই আক্ষেপ মিটিয়ে নিচ্ছেন ‘ওয়াল’-এ সক্রিয় হয়ে। ভোট ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে দলের প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করে দিয়েছিল তৃণমূল। দলের কর্মীরা তার আগে থেকেই প্রচারের জন্য বেশির ভাগ দেওয়াল দখল করে ফেলেছিলেন।

Advertisement

অর্পিতা মজুমদার

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৬ ০১:০৬
Share:

সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে প্রচার নানা দলের।

দেওয়াল দখলে পিছিয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। সেই আক্ষেপ মিটিয়ে নিচ্ছেন ‘ওয়াল’-এ সক্রিয় হয়ে।

Advertisement

ভোট ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে দলের প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করে দিয়েছিল তৃণমূল। দলের কর্মীরা তার আগে থেকেই প্রচারের জন্য বেশির ভাগ দেওয়াল দখল করে ফেলেছিলেন। বিরোধী দলগুলি প্রার্থী ঘোষণা করে পরে। তাদের কর্মীরা ময়দানে নেমে দেখেন, ঘাসফুল ফুটে রয়েছে বেশির ভাগ দেওয়ালেই। তাতে অবশ্য দমে না গিয়ে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটকে হাতিয়ার করেছে তারা। ফেসবুক বা হোয়াটসঅ্যাপে জোরকদমে প্রচার সারছে সিপিএম। নেমে পড়েছে বিজেপি-ও। তবে তৃণমূলকে রাস্তায় নেমে প্রচারে যতটা দেখা যাচ্ছে, সেই তুলনায় এই মাঠে তারা কিছুটা পিছিয়ে।

ভোটের প্রচারে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ব্যবহারে এ বার গোড়া থেকে উৎসাহ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নানা দলের নেতাদের ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট থাকলেও অনেককেই সেখানে তেমন সক্রিয় দেখা যায় না। তবে ভোট আসতেই গা ঝাড়া দিয়েছেন তাঁরা। সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাক্তন বিধায়ক বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী ২০১১ সালে ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খোলেন। তিনি বলেন, ‘‘পরিচিতরা তো বটেই, দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গেও এর মাধ্যমে যোগাযোগ রাখা যায়। ফোনে তো সব সময় সম্ভব হয় না।’’

Advertisement

২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে সিপিএমের তরফে খোলা হয়েছে ‘সিপিআইএম বর্ধমান ডিস্ট্রিক্ট কমিটি’ পেজ। সেখানেও নিয়মিত পোস্ট করছেন দুর্গাপুরের নেতা-কর্মীরা। যেমন দুর্গাপুরের গোগলায় সম্প্রতি সভা করেন দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। সভা শেষ হতে না হতেই তা আপলোড হয়ে যায় পেজ-এ। ভোট উপলক্ষে হোয়াটসঅ্যাপেও সিপিএমের তরফে বেশ কিছু গ্রুপ খোলা হয়েছে। তবে গ্রুপের নামের সঙ্গে সিপিএমের যোগ রাখা হয়নি। সাধারণ মানুষও যাতে একাত্ম হতে পারেন, সে কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে নেতাদের দাবি।

দুর্গাপুর পশ্চিমের তৃণমূল প্রার্থী অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট আছে। তবে সারা বছর সেটি বিশেষ কাজে লাগান না তিনি। ভোটের মরসুমে এখন তা ব্যবহার করছেন তিনি। প্রচারের ছবি পোস্ট করছেন। কিন্তু তা-ও বেশ অনিয়মিত। ২৩ মার্চের পরের পোস্ট ২৯ মার্চ। প্রার্থী হিসেবে অপূর্ববাবুর নাম ঘোষণার পরে তাঁর অনুগামীরা সংবাদমাধ্যমকে প্রচারের সূচি জানাতে ও ছবি পাঠাতে হোয়াটসঅ্যাপে একটি গ্রুপ খোলেন। কিন্তু উদ্যোগের ইতি সেখানেই। সেই গ্রুপ কার্যত নিষ্ক্রিয় বলে অভিযোগ।

দুর্গাপুর পূর্বের তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপ মজুমদারের সমর্থনে কোনও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের খোঁজ মেলেনি। তবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ওই এলাকার তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের অনেকে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ দুবের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। ভোট উপলক্ষে তাঁর অনুগামীরা হোয়াটসঅ্যাপেও গ্রুপ খুলেছেন। সেখানে প্রচারও চালাচ্ছেন।

শহরের সিপিএম নেতাদের মধ্যে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে সবচেয়ে সক্রিয় দেখা যায় দুর্গাপুর ২ পূর্ব জোনালেল সম্পাদক পঙ্কজ রায় সরকারকে। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষের কাছে পৌঁছনোর অন্যতম কার্যকর মাধ্যম এই সোশ্যাল নেটওয়ার্ক। এ বার ভোট প্রচারে তা আমরা নানা ভাবে কাজে লাগাচ্ছি।’’ যদিও সিপিএমের এই উদ্যোগকে কটাক্ষ করে তৃণমূলের দুর্গাপুর জেলা শিল্পাঞ্চল সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মানুষের সঙ্গে যোগ নেই, তাই সিপিএম শুধু সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে ব্যস্ত। আমরা মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি, তাঁদের পাশে আছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন