পুড়ে যাওয়া সেই বাড়ি। নিজস্ব চিত্র।
বৃহস্পতিবার দিনভর ভোটের দায়িত্ব পালন করে, ক্লান্তি জড়িয়ে ছিল সারা শরীর জুড়ে। চোখ ভেঙে নেমে আসছিল গভীর ঘুম। তাই রাতের বেলা স্ত্রী আর ১৩ বছরের ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছিলেন হরিণঘাটার পারুলিয়ার বাসিন্দা সুকুর আলি মণ্ডল। রাত দু’টো নাগাদ টের পেলেন ঘরের তাপটা কেমন যেন বেড়ে গেছে। নাকে আসছে কেরোসিনের চড়া গন্ধ। চোখ খুলতেই দেখলেন সারা ঘরটা ভরে গেছে কালো ধোয়ায়। মাটির দেওয়াল আর টালির চালার ঘরটা পুরোটাই তখন আগুনের কবলে। বিছানায় তখনও ঘুমোচ্ছে স্ত্রী ও পুত্র। ঘুম থেকে তাঁদের তুলে কোনওক্রমে প্রাণে বেচেঁছেন তিনজনে। ঘরের কোনও জিনিসই আর আস্ত নেই। প্রায় কয়েক লক্ষ টাকার সম্পত্তি ভস্মীভূত।
কালকের রাতটার কথা ভেবে এখনও শিউরে উঠছেন সুকুর আলি। ঘরের ধ্বংসাবশেষ সরাতে সরাতে বললেন, ‘বেশ কয়েক মাস ধরে, আমায় তৃণমূলের লোকেরা প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছিল। আজ রাতে তাই জ্যান্ত পুড়িয়ে মারতেই ঘরে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে ওরা।’
সুকুর আলি পারুলিয়ার তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি ছিলেন। গত পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের দু্র্নীতি সহ্য করতে না পেরে তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন। এর পর থেকেই তাঁকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে জানান সুকুর আলির স্ত্রী রোকেয়া বিবি মণ্ডল। পুলিশকে জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি।
গতকাল স্থানীয় জোট সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী অজয় দাশের পোলিং এজেন্ট হয়েছিলেন সুকুর। সেই সময় পুলিশের সামনেও তাঁকে হুমকি দেন তৃণমূল কর্মীরা। স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হলেও পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এই ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে হরিণঘাটা-হাবড়া রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন বাম-কংগ্রেস সমর্থরা। যদিও সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে তৃণমূল। এলাকায় এখনও উত্তেজনা রয়েছে।
আরও পড়ুন:
বড়জোর মেরে ফেলবে, তবু পিছু হটবো না