শিরদাঁড়ার ‘শক্তি’ পরীক্ষা, বাড়তি পুলিশ গণনা পর্যন্ত

সোজা না বাঁকা— শিরদাঁড়ার অবস্থান নিয়ে দড়ি টানাটানি চলছে পুলিশের অন্দরমহলে। এক দিকে উর্দির মর্যাদা রক্ষার মরিয়া চেষ্টা, অন্য দিকে ‘চাপের’ কাছে নতিস্বীকারের প্রবণতা। কখনও মেরুদণ্ড উঁকি দিচ্ছে, কখনও বা গুরুতর প্রশ্ন উঠছে উর্দিধারীদের ভূমিকা নিয়ে। নির্বাচন-পরবর্তী সন্ত্রাসের পরপর ঘটনায় এই চিত্র স্পষ্ট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৬ ০২:০০
Share:

লালবাজার। — ফাইল চিত্র

সোজা না বাঁকা— শিরদাঁড়ার অবস্থান নিয়ে দড়ি টানাটানি চলছে পুলিশের অন্দরমহলে। এক দিকে উর্দির মর্যাদা রক্ষার মরিয়া চেষ্টা, অন্য দিকে ‘চাপের’ কাছে নতিস্বীকারের প্রবণতা। কখনও মেরুদণ্ড উঁকি দিচ্ছে, কখনও বা গুরুতর প্রশ্ন উঠছে উর্দিধারীদের ভূমিকা নিয়ে। নির্বাচন-পরবর্তী সন্ত্রাসের পরপর ঘটনায় এই চিত্র স্পষ্ট।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা হওয়া পর্যন্ত সম্ভাব্য গোলমাল রুখতে শহর কলকাতার প্রতিটি থানায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। আশঙ্কা, নির্বাচনের ফল ঘোষণা পর্যন্ত যে কোনও সময়ে গণ্ডগোল হতে পারে। তা সামলাতে কাজে লাগবে অতিরিক্ত ওই বাহিনী। অতিরিক্ত বাহিনী পাঠানো হয়েছে প্রত্যেক ডিভিশনাল কমিশনারের কাছেও।

আর মেরুদণ্ড যাতে আবার আগের মতো বেঁকে-নুইয়ে যায়, তার জন্য দড়ি ধরে উল্টো দিকে টান দিচ্ছেন সেই ‘মাথা নত’ করা, নিজেদের বিকিয়ে দেওয়া, দলদাসে পরিণত হওয়া অনুগত পেয়াদারা, যাঁরা যেনতেন প্রকারে খুশি রাখতে চান শাসক দলকে। অভিযোগ, যে কারণে গত কয়েক দিনে হরিদেবপুর-বালিগঞ্জ-পাটুলি-বেহালায় বিরোধী দলের কর্মী-এজেন্টরা শাসকদলের হাতে আক্রান্ত হলেও, এখনও অধরা থেকে যায় অভিযুক্তেরা।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, ১ মে পাটুলিতে প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে শাসকদলের বহিরাগতদের তাণ্ডবের ঘটনায় এখনও এক জন অভিযুক্তের চুলও ছুঁতে পারেনি পুলিশ। এমনকী, ওই দিন পাটুলি থানার ওসিকে ধাক্কা মারার পরেও অধরা অভিযুক্ত। উঠে এসেছে আনুগত্যের অভিযোগ।

মঙ্গলবার রাতে বেহালায় সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক কুমকুম চক্রবর্তীর বাড়িতেও বোমা ছোড়ার অভিযোগ ওঠে শাসকদলের বিরুদ্ধে। শাসকদলের পাল্টা অভিযোগ, দলের মধ্যে গোষ্ঠী সংঘর্ষের শিকার কুমকুমদেবী। যা-ই হোক না কেন, বোমা যে ছোড়া হয়েছে, তার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। অথচ, সেই ঘটনায় গ্রেফতার তো দূরের কথা, অভিযুক্তদের শনাক্ত পর্যন্ত করতে পারেনি পুলিশ। ফের উঠে এসেছে সেই আনুগত্যের অভিযোগ।

গত ৪ মে বেহালার বামাচরণ রায় রোডে সেনহাটি এলাকায় সিপিএম নেতা অরিন্দম ঝা-র বাড়ি লক্ষ করে গুলি চলে। অভিযোগের তির সেই শাসক দলের দিকে। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত উত্তম দাসকে এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ। অথচ তিনি বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার তাঁকে আলিপুর আদালত চত্বরেও দেখা গিয়েছে বলে সূত্রের খবর। এখানেও সেই আনুগত্যের প্রসঙ্গই উঠে এসেছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, বিরোধীদের উপরে হামলার কয়েকটি ঘটনায় থানার পাশাপাশি তদন্ত শুরু করেছেন গোয়েন্দারা। লালবাজারের এক কর্তা জানান, ভোটের পরে পাটুলি থানার ওসি-সহ বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগ এসেছে। সব কিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। লালবাজার সূত্রের খবর, ভোট পরবর্তী হামলা ঠেকাতে পুলিশ কমিশনার প্রতিটি থানায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছেন। জানা গিয়েছে, প্রতিটি থানায় এক জন অফিসারের নেতৃত্বে ওই বাহিনী থাকবে। সে রকম পরিস্থিতি দেখা দিলে লালবাজারের কন্ট্রোল রুমের নির্দেশে বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যাবেন সেই অফিসার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement