শিলিগুড়ি ছুঁয়েই প্রচারে সীতা

শিলিগুড়ি থেকেই ‘শিলিগুড়ি লাইন’-কে হাতিয়ার করে প্রচারে নামছেন সীতারাম ইয়েচুরি।দু’দিন আগেই রাহুল গাঁধী কলকাতায় গিয়ে কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের বলে এসেছেন, আপনারা সিপিএমের হাত ধরে মানুষের কাছে যান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করুন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৫৯
Share:

—ফাইল চিত্র

শিলিগুড়ি থেকেই ‘শিলিগুড়ি লাইন’-কে হাতিয়ার করে প্রচারে নামছেন সীতারাম ইয়েচুরি।

Advertisement

দু’দিন আগেই রাহুল গাঁধী কলকাতায় গিয়ে কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের বলে এসেছেন, আপনারা সিপিএমের হাত ধরে মানুষের কাছে যান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করুন।

এ বার পশ্চিমবঙ্গের সিপিএম তথা বাম দলের নেতা-কর্মীদের জন্য ইয়েচুরি বার্তা নিয়ে যাচ্ছেন, কংগ্রেস তো বটেই। সমস্ত ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের হাত ধরুন।

Advertisement

বুধবার থেকে পশ্চিমবঙ্গে ইয়েচুরির প্রচারের প্রথম দফায় থাকছে তিনটি জনসভা। মালবাজার, ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি, তার পর শিলিগুড়ি। ফিরে এসে আগামী সপ্তাহে ফের যাবেন বঙ্গে। তাৎপর্যপূর্ণ হল, এই শিলিগুড়ি থেকেই তৃণমূলের হিংসার বিরুদ্ধে বাম ও কংগ্রেস মিলে ভোটারদের ভোটকেন্দ্র পর্যন্ত নিয়ে আসার কথা বলেছিলেন অশোক ভট্টাচার্য। এর পর সেই ‘শিলিগুড়ি লাইন’ ধরেই কংগ্রেসের সঙ্গে অলিখিত জোটের রাস্তা খুলে দিয়েছেন ইয়েচুরি। ঘটনাচক্রে সেই শিলিগুড়ি থেকেই ইয়েচুরির প্রচার শুরু হচ্ছে দেখে অশোকবাবু খুশি। ইয়েচুরির
সভায় কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদেরও আমন্ত্রণ থাকছে। তবে আমন্ত্রণ না করলেও যে লাল ঝাণ্ডার
সঙ্গে কংগ্রেসের পতাকা দলে দলে এসে মিশে যাবে, তাতে সন্দেহ নেই।

প্রকাশ কারাট তথা কেরল নেতৃত্বের প্রবল আপত্তি সত্বেও কার্যত নিজের সাধারণ সম্পাদক পদকে বাজি ধরে ইয়েচুরি কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের রাস্তা খুলেছিলেন। কারণ পশ্চিমবঙ্গে সাফল্য না মিললে দলের মধ্যে তাঁকে প্রবল প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে। পশ্চিমবঙ্গে প্রচারে যাওয়ার আগে ইয়েচুরি অবশ্য আশাবাদী। তাঁর কথায়, অবাধ ভোট হলে ১৯ মে-র ফলাফল তৃণমূলের জন্য মোটেই সুখকর হবে না। এই ভোট অবাধ করতে গত কয়েক সপ্তাহে বারবার নির্বাচন কমিশনে ছুটেছেন তিনি। নসীম জৈদীর সঙ্গে বৈঠক করে তৃণমূলের হিংসা, রাজীব কুমার-ভারতী ঘোষদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন।

তৃণমূলের বিরুদ্ধে সারদা-কেলেঙ্কারি, নারদ-হুল, সিন্ডিকেট দুর্নীতির অস্ত্র তো থাকছেই। এ বার প্রচারে গিয়ে ইয়েচুরি ‘দিদিভাই’ ও ‘মোদীভাই’ গোপন আঁতাতের কথা তুলতে চান। মোদী পশ্চিমবঙ্গে ভোটের প্রচারে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করলেও ইয়েচুরির দাবি, এর পুরোটাই লোক দেখানো। আসলে বিজেপি ও তৃণমূল একে অপরকে আক্রমণ করলে দু’তরফেরই লাভ। লোকসভা ভোটে এই ভাবেই লাভ কুড়িয়েছিল তৃণমূল ও বিজেপি। তৃণমূলনেত্রী বিজেপির জুজু দেখিয়ে সংখ্যালঘু ভোট টানার চেষ্টা করবেন। আবার বিজেপি নেতারা মুখে আক্রমণ করলেও সংসদে সমর্থনের বিনিময়ে সারদা কেলেঙ্কারির সিবিআই তদন্তে ধীরে চলো নীতি নেবেন। এবার আর তাই দুই শিবিরকে ফায়দা লোটার সুযোগ করে দিতে চান না ইয়েচুরির মতো নেতারা।

সিপিএম নেতারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, তাঁরা এ বার অষ্টম বামফ্রন্ট সরকার গঠনের ডাক দেননি। সব ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক শক্তিকে এক জায়গায় আনার কথা বলেছেন। মানুষের জোট গড়ে তোলার কথা বলেছেন। ইয়েচুরি পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে সেই কথাই বলবেন। বোঝাবেন, তৃণমূল ও বিজেপি, দুই-ই বড় বিপদ। কংগ্রেস ও বাম ভোট একত্র করে জোটের অঙ্ক মেলানোটাই এখন সিপিএম সাধারণ সম্পাদকের
প্রধান লক্ষ্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন