দুঃসময়েও বাম-মৈত্র বাদশাকে নতুন আলো দিল ব্রিগেডের মঞ্চ, ভোটে লড়ছেন কি?

আবার ব্রিগেডে শেষে বিরোধী শিবিরকে খোঁচা দিয়ে বলেছেন, ‘‘এই ব্রিগেড হল, কিন্তু কোনও তুই তোকারির ব্রিগেড হল না।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২০:০৬
Share:

‘দুঃসময়’ সিপিএমের। সেই সময়ও পার্টির সঙ্গ ছেড়ে দলবদল করেননি তিনি। বামমনস্ক শিল্পী হিসেবেই পরিচিত বাদশা মৈত্র। রবিবারের ব্রিগেডে সিপিএম নেতৃত্ব নতুন করে আলো দিল সেই বাদশার দিকেই। জোটের ব্রিগেডে বর্ষীয়ান রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য সভার পরিচালনার জন্য বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর নাম যখন প্রস্তাব করেন, তখন বেলা ১টা। সেই প্রস্তাব সমর্থন করেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। কিন্তু কয়েক জন বক্তার পরেই বিমানবাবু স্বয়ং ঘোষণা করে দিলেন, এ বার থেকে সভার সঞ্চালনা করবেন বাদশা।

Advertisement

রবিবার সকাল থেকেই ব্রিগেড মঞ্চের নীচে বামমনস্ক শিল্পীদের গান-আবৃত্তি-কবিতার মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানোর পৃথক মঞ্চ গড়া হয়েছিল। সেই মঞ্চেই অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন বাদশাই। বেলা ১২টা নাগাদ সেই মঞ্চে বাদশার সঙ্গেই হাজির হন প্রবীন চিত্র পরিচালক তরুণ মজুমদার, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, অভিনেতা সব্যসাচী চত্রবর্তী ও অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্ররা। অল্প সময় বক্তৃতা করার সুযোগও পান তাঁরা। সমাবেশ শুরু হওয়ার পর একসময় দলীয় স্বেচ্ছাসেবক মারফত মঞ্চের নীচে থাকা বাদশাকে ডেকে নেন মহম্মদ সেলিম। তখনই তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়, এ বার সঞ্চালনার দায়িত্ব সামলাতে হবে তাঁকেই।

তারপর একে একে সূর্যকান্ত থেকে শুরু করে অধীর চৌধুরী, পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি, ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভুপেশ বাঘেল, সীতারাম ইয়েচুরি, দেবলীনা হেমব্রমকে বক্তৃতার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বাদশাই। সিপিএম নেতৃত্ব বাদশাকে এই গুরুত্ব দেওয়ার পরেই ব্রিগেডে আগত জনতার মধ্যে আলোচনা শুরু হয়, তা হলে বাদশা এ বার পার্টির হয়ে ভোটেও প্রার্থী হবেন? কিন্তু সমাবেশ শেষে গাড়িতে ওঠার পর এই সংক্রান্ত প্রশ্নের যাবতীয় জল্পনা উড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি একজন শিল্পী। সঙ্গে আমি বামপন্থীও। তাই বলে ভোটে দাঁড়াব না। দল চাইলে নির্বাচনে সাহায্য করতে রাজি আছি।’’

Advertisement

কলেজ জীবনে বাম ছাত্র সংগঠনের সক্রিয় হলেও, পরবর্তী সময়ে অভিনয় জগতে আসায় আর সক্রিয় রাজনীতিতে আসেননি বাদশা। কিন্তু বরাবরই নিজেকে সিপিএমের সমর্থক বলেই পরিচয় দিয়েছেন। বাম জমানারা শেষের দিকে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় বামফ্রন্ট সরকার ও সিপিএম নেতৃত্ব প্রবল সমালোচনার মুখে পড়লেও বাদশা ছিলেন দলের পাশেই। ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতা বদলের পর একে একে বামমনস্ক শিল্পীরা তৃণমূল শিবিরে গেলেও, বাদশা থেকেছেন সিপিএম নেতৃত্বের পাশেই। যখনই তাঁকে সিপিএম নেতৃত্ব কোনও দায়িত্ব দিয়েছে, একাগ্র চিত্তে সেই দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। রবিবারও দক্ষ সঞ্চালকের মতোই সামলেছেন ব্রিগেডের মতো বৃহৎ রাজনৈতিক সমাবেশ। কিন্তু বিনিময়ে কিছু চাই না বলেই ব্রিগেড ছেড়েছেন বাদশা। আবার ব্রিগেডে শেষে বিরোধী শিবিরকে খোঁচা দিয়ে বলেছেন, ‘‘এই ব্রিগেড হল, কিন্তু কোনও তুই তোকারির ব্রিগেড হল না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement