হাসপাতালে তৃণমূলের অভিযুক্ত কাউন্সিলর বিমল সাহা।— নিজস্ব চিত্র
কামারহাটিতে চিটফান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারীদের সভায় হামলার ঘটনায় গ্রেফতার হলেন কাউন্সিলর-সহ তৃণমূলের চার নেতা-কর্মী। ওই ঘটনায় এক সিপিএম কর্মীকেও গ্রেফতার করা হয়। সকলেই অবশ্য জামিন পেয়ে গিয়েছেন।
অভিযুক্ত বিমল সাহা কামারহাটি পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। ওই পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদও। সোমবার রাতে তৃণমূল-সিপিএমের মারামারিতে জখম হয়ে সাগর দত্ত হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। রাতেই তাঁকে হাসপাতালে গ্রেফতার করে নজরবন্দি করেছিল পুলিশ। এখনও তিনি হাসপাতালে।
সোমবার রাতে কামারহাটিতে আমানতকারী সুরক্ষা মঞ্চের সভা হচ্ছিল। ছিলেন ‘আমরা আক্রান্ত’-র সদস্য মৌসুমি কয়াল, প্রদীপ মুখোপাধ্যায়, দেবাশিস সরকার-সহ কয়েক জন। সভা-আয়োজকদের দাবি, তৃণমূল কর্মীরা বাঁশ, ইট নিয়ে হামলা চালায়। অভিযোগের তির ছিল শাসক দলের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, হামলা করেছে সিপিএম-ই। রাতে দু’ পক্ষই থানায় অভিযোগ দায়ের করে।
আহত হয়ে বিমল সাহা-সহ ১৩ জন তৃণমূল নেতা-কর্মী হাসপাতালে ভর্তি হন। পুলিশ সূত্রের খবর, দু’জন এসআই, এক জন এএসআই আর বন্দুকধারী চার-পাঁচ জন কনস্টেবলকে নিয়ে গিয়ে রাতে হাসপাতালেই বিমলবাবুকে নজরবন্দি করে পুলিশ। চার তৃণমূল আর এক সিপিএম কর্মীর নামে অভিযোগ করা হয়। মঙ্গলবার ব্যারাকপুর আদালতে চার জনকে হাজির করে পুলিশ। অসুস্থতার কারণে বিমলবাবুকে আনা যায়নি।
প্রতিবাদে এ দিন সকালে কামারহাটির রথতলা মোড় থেকে বেলঘরিয়া থানা পর্যন্ত মিছিল করে তৃণমূল। ছিলেন বরানগরের তৃণমূল প্রার্থী তাপস রায়, সাংসদ সৌগত রায়, কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা এবং এলাকার সব কাউন্সিলর। থানায় গিয়ে তাঁরা ঘটনার প্রতিবাদে স্মারকলিপি জমা দেন।
পরে চেয়ারম্যান পারিষদ বিমলবাবু বলেন, ‘‘সিপিএম ওখানে সভা করাচ্ছিল। সেখান থেকে কামারহাটির দলীয় প্রার্থী মদন মিত্রের নামে আপত্তিকর কথা বলা হয়েছিল বলেই প্রতিবাদ করেছিলাম। সিপিএম কর্মীরা আমাদের মারধর করে।’’ সৌগত রায়েরও দাবি, ‘‘আমাদের কাউন্সিলর আর কর্মীদের মারধর করা হল। আবার পুলিশ তাঁদেরই গ্রেফতার করল।’’ কেন কামারহাটির সিপিএম প্রার্থী মানস মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হল না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন সৌগতবাবু।
মানসবাবুর দাবি, ‘‘গোলমালের খবর পেয়ে সেখানে যাই। তৃণমূলই আমাদের মারধর করে।’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রও তৃণমূলকে বিঁধে বলেন, ‘‘তৃণমূলের সবাই চোর নন। হাতে গোনা কয়েক জন। তার মধ্যে কামারহাটিতেই রয়েছেন কয়েক জন’’।
পুলিশের বিরুদ্ধেও ‘পাল্টি খাওয়ার’ অভিযোগ এনেছেন সৌগত। যা শুনে ব্যারাকপুরের কমিশনার নীরজকুমার সিংহ বলেন, ‘‘দু’তরফের অভিযোগ পেয়েই তদন্ত করা হচ্ছে।’’