আড়াই কিমি লম্বা মিছিল জোটের

প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ মিছিলের সামনে প্রার্থী। বিদায়ী কংগ্রেস বিধায়ক প্রার্থীর এক পাশে সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক-সহ একঝাঁক বাম নেতা। অন্য পাশে ব্লক কংগ্রেস সভাপতি থেকে শুরু করে অন্য নেতারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চাঁচল শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৬ ০১:২০
Share:

চাঁচলে জোটের মহামিছিল।—নিজস্ব চিত্র

প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ মিছিলের সামনে প্রার্থী। বিদায়ী কংগ্রেস বিধায়ক প্রার্থীর এক পাশে সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক-সহ একঝাঁক বাম নেতা। অন্য পাশে ব্লক কংগ্রেস সভাপতি থেকে শুরু করে অন্য নেতারা। থেকে থেকে মিছিলের গর্জন—আসিফ মেহবুব লাল, লাল লাল সেলাম। আবার কখনও ইনক্লাব জিন্দাবাদ, তো কখনও বন্দেমাতরম। কংগ্রেস নেতা হাতে নিয়েছেন সিপিএমের পতাকা তো বাম নেতার হাতে শোভা পাচ্ছে কংগ্রেসের তেরঙ্গা পতাকা।

Advertisement

না কোনও হেভিওয়েট নেতার টানে নয়। স্থানীয় বাম-কংগ্রেস নেতাদের নিয়েই সোমবার বিকেলে জোটপ্রার্থীর সমর্থনে প্রায় পঁচিশ হাজার মানুষের মহামিছিলে এমন ছবিই দেখল মালদহের চাঁচল। শুধু হাতে হাতে রেখে মিছিলই নয়। সন্ধেয় মহা মিছিলের পর আয়োজিত পথসভাতেও সভাপতি হিসেবে বক্তব্য রাখলেন সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক নজমুল হক।

জোট সূত্র মেনে চাঁচল বিধানসভা কেন্দ্রে এ বার সিপিএম প্রার্থী দেয়নি। এই কেন্দ্রে গত দু’বারের বিধানসভা নির্বাচনে লড়েও হেরে গিয়েছিলেন সিপিএম নেত্রী আন্জুমানারা বেগম। তিনি ছাড়াও এ দিনের মিছিলে পা মিলিয়েছেন তাঁর স্বামী তথা সিপিএম নেতা রব্বুল হোসেনও। এ দিন ওই মহামিছিলের জেরে দুপুর থেকেই কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে গোটা চাঁচল শহর। এক সময় যানজট সামলাতে পথে নামতে হয় স্বয়ং চাঁচল থানার আইসি তুলসিদাস ভট্টাচার্যকেও। তবে মহামিছিলে প্রচুর মানুষ অংশ নেওয়ায় সৃষ্টি হয় বিশৃঙ্খলারও। মিছিলের আগাগোড়া খুঁজে না পেয়ে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ঢুকে পড়তে দেখা যায় মিছিলে যোগ দেওয়া লোকজনকে।

Advertisement

মিছিলে ৩০ হাজার মানুষ যোগ দিয়েছিলেন বলে জোটের নেতারা দাবি করেছেন। তবে এ দিন অন্তত ২৫ হাজার মানুষ মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন বলে পুলিশ সূত্রের খবর। স্বভাবতই এ দিনের মহামিছিল দেখে বেজায় খুশি জোটের নেতারা। যদিও মিছিলে না গেলে পঞ্চায়েতের সুযোগ সুবিধে থেকে বঞ্চিত করার ভয় দেখিয়ে লোক নিয়ে আসা হয়েছে বলে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।

খরবার (এখন চাঁচল) প্রাক্তন বিধায়ক নজমুল হক বলেন, ‘‘সূর্যকান্ত মিশ্রই তো বলে দিয়েছেন, নেতাদের মধ্যে নয়, এ বার জোট হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। মানুষের জোট যে সফল তা এ দিনের মহামিছিল থেকেই স্পষ্ট।’’ চাঁচল-১ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি ইন্দ্রনারায়ণ মজুমদার বলেন, ‘‘মহামিছিল দেখে ভয় পেয়ে এখন আমাদের বিরুদ্ধেই ভয় দেখিয়ে লোকজনকে আনা হয়েছে বলে হাস্যকর অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’’

এ দিন ওই মহামিছিলের আয়োজক সিটু এবং আইএনটিইউসি। সিটুর চাঁচল-১ ব্লক সম্পাদক মনওয়ারুল আলম এবং আইএনটিএউসির ব্লক সভাপতি কাজী আতাউর রহমানের উদ্যোগেই মূলত মহামিছিলের উদ্যোগ হয়।

চাঁচলের তৃণমূল প্রার্থী সৌমিত্র রায়ের নির্বাচনী প্রতিনিধি তথা তৃণমূল নেতা মজিবর রহমানের অবশ্য দাবি, ‘‘সব ক‘টি পঞ্চায়েতই সিপিএম বা কংগ্রেসের দখলে। ফলে কাউকে ভাতা থেকে নাম কেটে দেওয়া, কাউকে পঞ্চায়েতের সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ওরা মিছিলে লোক নিয়ে এসেছে বলে শুনেছি। ওরা যতই মিছিল করুক, দিন কয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রীর জনসভাই প্রমাণ করে দিয়েছে যে, ভোটে এই আসনের ফলাফল কী হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন