‘চিমটিতেই’ মেতে সোশ্যাল মিডিয়া

সবুজ পাড় সাদা শাড়ি, পায়ে হাওয়াই চটি। এটাই তাঁর ব্র্যান্ড। ছবিতে শুধু পায়ের ওই অংশ। সবাই জানেন, উনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই ছবিটা দিয়েই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে একটা পোস্ট এল বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ। বিপুল ভাবে মমতার প্রত্যাবর্তন ততক্ষণে নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। ছবিতে লেখা— ‘যতই নাড়ো কলকাঠি / নবান্নে এ বারেও হাওয়াই চটি।’ সঙ্গে ফুটনোট: ‘দ্যাখ কেমন লাগে’।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৬ ০০:৪২
Share:

সবুজ পাড় সাদা শাড়ি, পায়ে হাওয়াই চটি। এটাই তাঁর ব্র্যান্ড। ছবিতে শুধু পায়ের ওই অংশ। সবাই জানেন, উনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই ছবিটা দিয়েই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে একটা পোস্ট এল বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ। বিপুল ভাবে মমতার প্রত্যাবর্তন ততক্ষণে নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। ছবিতে লেখা— ‘যতই নাড়ো কলকাঠি / নবান্নে এ বারেও হাওয়াই চটি।’ সঙ্গে ফুটনোট: ‘দ্যাখ কেমন লাগে’।

Advertisement

সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়াল গত ক’মাস ধরেই ছিল ভোটের প্রচারের জায়গা। ফল বেরোনোর পরে সেখানেই জয়ীদের উল্লাস, পরাজিতদের প্রতি কটাক্ষের ছবি, কার্টুন, শব্দময় প্রতিচ্ছবি।

একটি ছবিতে অচেতন সূর্যকান্ত মিশ্রকে পাঁজাকোলা করে ধরে গম্ভীর মুখে বুদ্ধদেব ভটাচার্য বলছেন, ‘ঘুরলো অনেক, কিন্তু দাঁড়াতে পারল না।’ আর একটি ছবিতে খোল-করতাল বাজাতে বাজাতে কংগ্রেস ও সিপিএমের নেতানেত্রীরা রাস্তা দিয়ে চলেছেন। ছবির ক্যাপশন- ‘জোটের শোকগাথা’। ছবিতে রয়েছেন বুদ্ধদেব, সূর্যকান্ত, মহম্মদ সেলিমদের সঙ্গে দীপা দাশমুন্সিও।

Advertisement

ভবানীপুর কেন্দ্রের ফল প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে এক জন পোস্ট করলেন, ‘দীপা’বলির শুভেচ্ছা! সরাসরি কিছুই বলা হল না, আবার অনেক কিছু বলা হল। ‘আজ সকাল থেকে মেঘের আড়ালে সূর্য মুখ লুকিয়েছে, আর বৃষ্টির পরে ঘাসফুলগুলো আরও সতেজ হয়ে উঠেছে।’ সূর্যবাবুর দল সিপিএম তথা বামফ্রন্ট কংগ্রেসের চেয়েও কম আসন পেয়েছে। তাঁদের কটাক্ষ করে এক জনের মন্তব্য, ‘এ বার থেকে বাম শুধু ওষুধের দোকানেই মিলবে; ঝান্ডু বাম, টাইগার বাম এ সব।’ বেলা ১২টার আগেই একটু লম্বা এক ছড়া উড়ে এল— ‘সূর্যি মামা জোট করেছে/ আম বাঙালি হাসছে যে/ সাদা শাড়ি, সঙ্গে মিছিল হ্যাঁ ওই তো আসছে সে/ পদ্মফুলও দিচ্ছে মদত রাহুল-বুদ্ধ বন্ধনে/ মমতাদিকে হারাবি না কি, আগে দু’বার জন্ম নে।’

সোশ্যাল মিডিয়ায় এক শিশুর হাস্যমুখর ছবি বেশ কিছু দিন হল ভাইরাল। সেই ছবি দিয়েই লেখা হয়েছে, ‘জোট ভেবেছিল, ট্রেনে উঠে সিটে রুমাল ফেলে দিলেই তাদের হয়ে যাবে। পরে দেখা গেল, ওটা রিজার্ভ়ড কামরা ছিল!’

একটি পোস্ট-এ আবার জোট, তৃণমূল কারও কথা বলা নেই। তা হলে কী আছে? একটি ফুটবল দল খেলা শুরুর আগে নীরবতা পালন করছে অধোবদন হয়ে। ক্যাপশন— ‘২ মিনিট নীরবতা তাদের জন্য, যারা ভেবেছিল আজ লাল আবির খেলবে।’

তৃণমূলের জয়ে উচ্ছ্বসিত সমর্থকেরা ক্রিকেটার রোহিত শর্মার হাসিমুখে একটি কথা নিজেদের মতো বসিয়েছেন— ‘টিএমসি যা খেলছিল, খুব চাপে ছিলাম। যাক আমার ২৬৪-র রেকর্ডটা ভাঙতে পারেনি!’ এ ভাবে আইপিএল এ দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূলের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে। এক হাতে ব্যাট, অন্য হাতে হেলমেট ধরে হাসিমুখে মমতা। ডাবল সেঞ্চুরি। আর একটি ছবিতে আঙুল তুলে মমতা বলছেন, ‘ভেবেছিল ডাবল সেঞ্চুরি করবে, কিন্তু হাফ সেঞ্চুরি করার আগেই আউট করে দিয়েছি।’ ভোট চলাকালীন সূর্যকান্ত মিশ্র দাবি করেন, জোট ডাবল সেঞ্চুরির পথে এগোচ্ছে। সেখানে জোট শেষ পর্যন্ত পেল ৭৬টি, বামফ্রন্ট ৩২।

তবে ক্রিকেটের সঙ্গে ফুটবলেরও ছোঁয়া থাকছে। মোহনবাগানকে ডার্বি ম্যাচে হারালে ইস্টবেঙ্গল এখন স্লোগান দিচ্ছে, ‘যত বার ডার্বি, তত বার হারবি।’ কতকটা সেই ঢঙেই এ দিন সন্ধ্যায় এক তৃণমূল সমর্থক পোস্ট দিলেন, ‘যত বার লড়বি, তত বার হারবি।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন