শান্তি চাইলেও হিংসা অব্যাহত দুই জেলায়

দুই জেলাতেই রাজনৈতিক হিংসা অব্যাহত। হামলার ঘটনায় তৃণমূল এবং জোট (সিপিএম-কংগ্রেস)-এর পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগও অব্যাহত। কিছু জায়গায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ রয়েছে বিজেপিরও।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

হুগলি ও হাওড়া শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৬ ০১:২৩
Share:

ভাঙচুরের পরে। জয়পুরের খালনায়। নিজস্ব চিত্র।

দুই জেলাতেই রাজনৈতিক হিংসা অব্যাহত। হামলার ঘটনায় তৃণমূল এবং জোট (সিপিএম-কংগ্রেস)-এর পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগও অব্যাহত। কিছু জায়গায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ রয়েছে বিজেপিরও।

Advertisement

সোমবার সকালে হাওড়ার জয়পুরের ভাটোরার মিনিবাজারে ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনান পঞ্চায়েতের সিপিএম সদস্য বনমালি মিদ্যার চায়ের দোকানে ভাঙচুর ও লুঠপাট হয়। জয়পুরেরই উত্তর ভাটোরা গায়েন পাড়ায় কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ার অপরাধে বাবলু কাঁজি ও অজিত কাঁজিকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। দু’টিই আমতা বিধানসভাকেন্দ্রে পড়ে। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। তৃণমূল নেতা অশোক গায়েন অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘আমতায় কংগ্রেস জেতার পর থেকেই আমাদের উপরে সিপিএম, কংগ্রেস হামলা চালাচ্ছে।’’ রবিবার রাতে জয়পুরের দক্ষিণ খালনা মুসলিম পাড়ায় সিপিএমের বিরুদ্ধে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি ভেঙে দেওয়া এবং মারধরের অভিযোগ ওঠে। পরদিন সিপিএম সমর্থকদের উপরে চড়াও হওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থলে পুলিশি টহল চলছে। আমতার ঘোড়াদহ গ্রামে সোমবার দুপুরে গোবিন্দ পণ্ডিত নামে এক সিপিএম কর্মীর বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। উদয়নারায়ণপুরের রাজাপুরে আরএসপি নেতা রবীন্দ্রনাথ সামুই-এর বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘বিদায়ী বিধায়ক সমীর পাঁজা নিজে দাঁড়িয়ে ভাঙচুর করান।’’ অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন সমীরবাবু।

এ দিন হাওড়া জেলা বামফ্রন্টের তরফে গ্রামীণ জেলা পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। জেলা পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ গ্রামীণ জেলা তৃণমূল সভাপতি পুলক রায় বলেন, ‘‘বিরোধীদের প্রতিটি অভিযোগ আমরা খতিয়ে দেখেছি। বেশিরভাগই ভিত্তিহীন। জেলায় শান্তি বজায় রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর।’’

Advertisement

রবিবার আরামবাগের রবীন্দ্রভবনে বৈঠক ডেকে সন্ত্রাস নিয়ে তৃণমূলের ‘কড়া নিষেধাজ্ঞা’ সত্ত্বেও রাজনৈতিক হিংসা অব্যাহত। সোমবার সকালে আরামবাগের বাতানল এলাকার চকহাজি দুলে পাড়ায় সকাল থেকে বোমাবাজি হয়। তৃণমূলের লোকজন তিনটি বাড়িতে আগুন লাগায় বলে অভিযোগ। পুলিশ গেলে তাদের লক্ষ্য করেও বোমা ছোড়া হয়। মলয়পুর অঞ্চলের মালিক পাড়ায় তৃণমূলের মারে আহত দুই মহিলা অঞ্জলি মালিক এবং সন্ধ্যা মালিককে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আনা হয়। আরামবাগ ব্লক তৃণমূল সভাপতি স্বপন নন্দী বলেন, “ঘটনাগুলির সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশকে কড়া ভূমিকা নিতে বলা হয়েছে।” রবিবার পান্ডুয়ার তিন্না কলোনিতে দুলালী মণ্ডল নামে সরাই-তিন্না পঞ্চায়েতের এক বিজেপি সদস্যকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তিনি পান্ডুয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পু‌লিশ জানিয়েছে, অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তৃণমূল অবশ্য অভিযোগ মানেনি। নির্বাচনী এজেন্ট হিসাবে কাজ করা দুই সিপিএম কর্মীর বাড়ির সামনে থেকে সোমবার সকালে পুলিশ ৫টি তাজা বোমা উদ্ধার করে। ঘটনাটি ঘটেছে চুঁচুড়ার ধরমপুর এলাকায়।

দিন কয়েক আগে তারকেশ্বরের মালপাহারপুরে সিপিএম সমর্থকদের বাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আহত সুষমা মাঝি ও নকুল মালিককে দেখতে সোমবার শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে যান ‘আমরা আক্রান্ত’-র প্রতিনিধিরা। ছিলেন অম্বিকেশ মহাপাত্র, অরুণাভ গঙ্গোপাধ্যায়, প্রতিমা দত্ত প্রমুখ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন