মানস ভুঁইয়া। — নিজস্ব চিত্র।
মান বাঁচালেন তিনি।
চাচা পারেননি, পারেননি সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকও। তবে গড় রক্ষায় সফল সবংয়ের ভূমিপুত্র মানস ভুঁইয়া।
জেলার অন্যত্র যেখানে খাতাই খুলতে পারেনি জোট, সেখানে সবংয়ে ৪৯,১৬৭ ভোটের ব্যবধানে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূলের নির্মল ঘোষকে হারিয়েছেন মানসবাবু।
বৃহস্পতিবার গণনা শুরু হওয়ার পর প্রথম থেকেই এগিয়ে ছিলেন মানসবাবু। বেলা যত গড়ায় বাড়তে থাকে ব্যবধান। এ দিন জয়ের পরে মানসবাবু বলেন, “সবংয়ের মানুষ আমাকে কোনও দিন বিমুখ করেনি। আশা ছিল জয়ী হব। তবে জোটের কারণে ভোটসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তৃণমূলের অনেকেই আমাকে ভোট দিয়েছে। এ জন্য সবং ও পিংলার মানুষকে ধন্যবাদ জানাই।”
১৯৬৯ সালে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির হাত ধরেই ছাত্র রাজনীতিতে প্রবেশ মানসবাবুর। এরপরে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে তিনি ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি ‘জুনিয়র ডাক্তার অ্যাসোশিয়েশন’-র প্রতিষ্ঠাতা সদস্যও হন। পরে মানসবাবু প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সদস্য হন। বছর ছ’য়েক প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদক হিসেবেও তিনি দায়িত্ব সামলেছেন। ১৯৮২ সালে প্রথম বার সবং থেকে ভোটে জয়ী হন এই কংগ্রেস নেতা। ২০১০ সালে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন সবংয়ের ভূমিপুত্র। ২০১১ সালে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট সরকারে সেচমন্ত্রী ছিলেন মানসবাবু।
মানসবাবু বলছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকায় দেখতে চেয়েছিলাম। প্রতিদ্বন্দ্বিতা চেয়েছিলাম, প্রতিহিংসা চাইনি।” এরপরে তাঁর সংযোজন, “সারা বাংলায় মানুষ যে ভাবে তৃণমূলের প্রতি আস্থা রেখেছেন। মানুষের সেই রায় আমি নতমস্তকে মেনে নিয়েছি। আশা করব তৃণমূল এই প্রতিহিংসার রাজনীতি বন্ধ করবে।”
এ বার জোটের সমর্থনে সূর্যকান্ত মিশ্রের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রচার করতে দেখা গিয়েছে মানসবাবুকে। যদিও ভোটে সূর্যকান্তবাবু পরাজিত হয়েছেন। সবংয়ে বড় ব্যবধানে কংগ্রেসের জয় প্রসঙ্গে দলের যুব নেতা বিশ্বজিৎ গিরি বলেন, “কংগ্রেস-বাম জোটের কারণেই এই ব্যবধান। এরপরেও মিলিতভাবেই লড়াই চলবে।”
তৃণমূলের এক সূত্রে খবর, ‘বহিরাগত’ নির্মল ঘোষকে প্রার্থী করায় দলের একটি অংশের কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ছিলই। ফলে দলের একাংশ নেতা-কর্মী বিপক্ষে ভোট দিতে পারেন বলে আশঙ্কা রয়েছে। পরাজয়ের পরে তৃণমূল প্রার্থী নির্মল ঘোষও বলেন, “প্রথম পর্যায়ে আমাদের দলে যে ত্রুটি ছিল তা পরে কেটে গিয়েছিল। তবে বামেদের সম্পূর্ণ ভোট কংগ্রেসের দিকে যাওয়ায় ও দলবদল করে আমাদের দলে আসা মানুষ কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ায় ওদের ফল ভাল হয়েছে।’’