West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls 2021: ঘুরে-ঘুরে চা বিক্রির ফাঁকে ভোট-সচেতনতার প্রচারে বৃদ্ধ

গত ২০ বছর ধরে কেটলি হাতে ঘুরে-ঘুরে আদালত সংলগ্ন এলাকায় চা বিক্রি করছেন তিনি। পাশাপাশি, বিধানসভা ভোটে শান্তি বজায় রাখার আহ্বানও জানাচ্ছেন আদালত চত্বরে আসা লোকজনের কাছে।

Advertisement

প্রণব দেবনাথ

শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২১ ০৫:৩৯
Share:

নিমাই চন্দ্র। নিজস্ব চিত্র।

‘নিজের ভোটে নিজে দিন’— চায়ের কাপ হাতে ধরিয়ে বলছেন বছর পঁয়ষট্টির চা বিক্রেতা নিমাই চন্দ্র।

Advertisement

কাটোয়া আদালত চত্বরে যাওয়া আসা এমন সকলেই নিমাইবাবুকে চেনেন। গত ২০ বছর ধরে কেটলি হাতে ঘুরে-ঘুরে আদালত সংলগ্ন এলাকায় চা বিক্রি করছেন তিনি। পাশাপাশি, বিধানসভা ভোটে শান্তি বজায় রাখার আহ্বানও জানাচ্ছেন আদালত চত্বরে আসা লোকজনের কাছে।

রাজ্যের অনেক জায়গার মতো কাটোয়াতেও ভোটের উত্তাপ ক্রমশ বাড়ছে। নিমাইবাবুর বক্তব্য, ‘‘ভোট নিয়ে কমিশনের নির্দেশে প্রশাসন নানা সচেতনতা-প্রচার করছে। সে নির্দেশগুলো আমিও চা বিক্রির মাঝে মানুষজনকে জানাচ্ছি। সকলে যাতে শান্তিপূর্ণ ভাবে নিজের ভোট দিতে পারেন, সে কথা বলছি।’’

Advertisement

নিমাইবাবুর উদ্যোগে খুশি প্রশাসনের কর্তা থেকে সাধারণ মানুষ। উজ্জ্বল পাল নামে মঙ্গলকোটের এক বাসিন্দা বুধবার আদালত চত্বরে কাজে এসেছিলেন। তিনি বলেন, “ওই বৃদ্ধের থেকে চা কিনেছিলাম। কথা প্রসঙ্গে ভোটের কথা তুলে তিনি আমাদের কাছে ‘নিজের ভোট নিজে দেওয়ার’ আর্জি জানান। উনি সকলকেই এই কথা বলছেন। ভোটে নিরাপত্তার কথা বলছেন। শুনে ভাল লাগল।’’

কাটোয়া মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় ভোটকে কেন্দ্র করে অতীতে অশান্তির একাধিক ঘটনা ঘটেছে। ভোট এলেই মঙ্গলকোটের মতো অনেক এলাকায় সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি হয় বলে অভিযোগ ভাটারদের একাংশের। নিমাইবাবু বলেন, ‘‘মানুষ রাজনৈতিক ভাবে সচেতন হলে অনেক কিছুই আটকানো যায়। মানুষ যাতে নিজের ভোট নিজে দিতে পারে, সে পরিস্থিতি তৈরি করতে সব রাজনৈতিক দলকেও এগিয়ে আসতে হবে।’’

নিমাইবাবুর বাড়ি কাটোয়া শহরের পাবনা কলোনিতে। বাড়িতে রয়েছেন অসুস্থ স্ত্রী। ছেলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে যা উপার্জন করেন, তাতে সংসার চলে না। তাই, বাধ্য হয়েই রাস্তায় চায়ের কেটলি নিয়ে বেরতে হয় ওই বৃদ্ধকে। লকডাউন চলার সময় আয় শূন্যে এসে দাঁড়িয়েছিল। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পরে, ফের চা বিক্রি শুরু করেন নিমাইবাবু। এরই মাঝে পড়ে গিয়ে পা ভাঙেন তিনি। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড না থাকায় ধার-দেনা করে চিকিৎসা করাতে হয়।

বৃদ্ধ বলেন, ‘‘মাস দু’য়েক আগে বার্ধক্যভাতা পেয়েছি। তাতে কিছুটা সুরাহা হয়েছে। সারাদিন ঘুরে চা বিক্রি করে মাসে মেরেকেটে হাজার তিনেক টাকা রোজগার হয়। অসুস্থ স্ত্রীর ওষুধ কিনতে অনেক টাকা খরচ।’’ কাটোয়া পুরসভার এক কর্মী সুকুমার সরকার বলেন, “ওই মানুষটি অসুস্থতাকে উপেক্ষা করে ভোট নিয়ে মানুষকে সচেতন করছেন। এটা দেখে আমাদেরও গর্ব হয়।” প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘ওঁর এই ভাবনাকে কুর্নিশ।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement