Death

Bengal Polls: ছেলে কী দোষ করেছিল, উত্তর খুঁজছে পরিবার

বাবা-মায়ের সঙ্গে ওই ঝুপড়ি ঘরেই থাকত বছর সাতেকের আফরোজ। বোমা ফেটে তার মৃত্যুর পরে মা সোনিয়া বেগমকে ঘিরে রেখেছেন পড়শিরা।

Advertisement

সুপ্রকাশ চৌধুরী

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২১ ০৫:৫১
Share:

আফরোজ শেখ।

গাছ লাগানোর জন্য বাঁধানো উঁচু জায়গার সামনে ছড়িয়ে রয়েছে রক্ত। পুলিশ ঘিরে দিয়েছে জায়গাটি। তার অদূরেই ত্রিপলের ছাউনি দেওয়া ঝুপড়ি ঘরের সামনে পাড়ার মহিলাদের ভিড়। তাঁদের চোখেমুখে আতঙ্ক। সেই ভিড়ের মধ্যে থেকেই ভেসে আসছিল আর্তনাদ, ‘‘আমার ছেলেকে ফিরিয়ে এনে দাও। আমার বুক ফেটে যাচ্ছে।’’

Advertisement

বাবা-মায়ের সঙ্গে ওই ঝুপড়ি ঘরেই থাকত বছর সাতেকের আফরোজ। বোমা ফেটে তার মৃত্যুর পরে মা সোনিয়া বেগমকে ঘিরে রেখেছেন পড়শিরা। তাঁরা জানান, রক্তাক্ত অবস্থায় যে ভাবে পড়েছিল ছোট ছেলেটি, তা চোখে দেখা যায় না। জরিনা বিবি, সেলিমা বিবিদের দাবি, ‘‘রাস্তা থেকে রক্তাক্ত ছেলেকে তুলেছে যে মা, সে কী ভাবে শান্ত থাকবে!’’ পরিজনেরা জানান, সোনিয়া বারবার অচেতন হয়ে পড়ছেন। ছেলের কাছে যেতে চাইছেন। আফরোজের একটি বোন রয়েছে। তার খেয়াল রাখতে হবে, সে কথা বলে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। স্ত্রীকে ধরে বসেছিলেন আফরোজের বাবা, পেশায় গাড়ি চালক বাবলু শেখ। সোনিয়া স্বামীকে বারবার বলছিলেন, ‘‘ছেলেকে ফিরিয়ে এনে দাও।’’

পরিজনেরা জানান, সোনিয়া কাগজের ঠোঙা তৈরি করে বিক্রি করেন। সেই রোজগারে ছেলের জন্যে গৃহশিক্ষকও রেখেছিলেন। আশা করেছিলেন, ছেলে পড়াশোনা করে বড় হবে। কিন্তু একটি বিস্ফোরণে সেই আশা শেষ হয়ে গেল। আফরোজের সঙ্গেই গামলায় করে মাটি আনতে গিয়েছিল শেখ ইব্রাহিম। তার বাড়ি মেমারির বিজরা গ্রামে। সে সপ্তাহখানেক ধরে এখানে মামারবাড়িতে রয়েছে। আফরোজের পাশের বাড়িতেই ইব্রাহিমের মামারা থাকেন। তার মা মিলি বিবি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘প্রতিদিন পাড়ার ছেলেদের সঙ্গে খেলা করে। এ দিনও করছিল। কী ভাবে এ রকম ঘটনা ঘটল, কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।’’

Advertisement

ঘটনাস্থলের কাছে ছিলেন দাবি করে পারুল শেখ, শেখ রুফাতরাদের বক্তব্য, ‘‘ক্লাবের পাশে এই জায়গায় প্রতিদিন এলাকার ছোটরা খেলা করে। সেখানেই বোমা রাখা হল! আরও অনেকে থাকলে কী মারাত্মক পরিণতি হত, ভেবেই আতঙ্কিত হচ্ছি।’’ আফরোজের কাকা শেখ ফিরোজ বলেন, ‘‘হঠাৎ দু’টি বোমা ফাটার আওয়াজ পাই। এসে দেখি, আমার ভাইপো কাতরাচ্ছে। কেন এ রকম হল?’’

উত্তর খুঁজছে আফরোজের পরিবার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন