Mamata Thakur

Bengal Polls: তৃণমূল প্রার্থীকে নিয়ে ক্ষোভ মমতা ঠাকুরের

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গাইঘাটা শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২১ ০৫:৩৮
Share:

মমতা ঠাকুর ফাইল চিত্র।

মতুয়া ভোটব্যাঙ্ককে পাখির চোখ করেছে সব দল। তার মধ্যে হঠাৎ দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে তোপ দেগে বসলেন তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুর। মমতার সঙ্গে যে তাঁর ‘নীতিগত বিরোধ’ আছে, সে কথা মেনে নিলেন প্রার্থী নিজেও।

Advertisement

কিন্তু কেন এই বিরোধ?

উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী নরোত্তম বিশ্বাস প্রচারে বেরিয়ে মতুয়াদের ঠাকুরবাড়ি-বিরোধী কথা বলছেন বলে অভিযোগ করছেন মমতা ঠাকুর। রবিবার নিজের বাড়িতে এ নিয়ে ডাকা সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বলেন, ‘‘গাইঘাটার তৃণমূল প্রার্থী প্রচারে বেরিয়ে মতুয়া ঠাকুরবাড়ি নিয়ে নোংরা কথা বলছেন। বলছেন, কেউ ঠাকুরবাড়ি যাবেন না। কেউ প্রণামী দেবেন না। ওঁকে ঠাকুরবাড়ি-বিরোধী কথা বলার অধিকার কে দিল?’’ মমতা স্পষ্টই বলেন, ‘‘ভোটে এর প্রভাব পড়বে। বিষয়টি দলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’’

Advertisement

নরোত্তম অবশ্য বলেন, ‘‘আমি জীবনে কখনওই ঠাকুরবাড়ি-বিরোধী ছিলাম না। এখনও নই। ভবিষ্যতেও থাকব না। হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুর আমার আরাধ্য দেবতা। ঠাকুরবাড়ির কোনও কোনও সদস্যের সঙ্গে আমার নীতিগত বিরোধ থাকতে পারে। সেটা অন্য প্রসঙ্গ। ঠাকুরবাড়ি-বিরোধী কথা বলেছি, এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারবেন না। উনি কিসের ভিত্তিতে এ সব বলছেন, জানি না।’’

এ বিষয়ে জেলা তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, অতীতে মমতা ঠাকুরের সঙ্গে নরোত্তমের সুসম্পর্কই ছিল। কয়েক মাস আগে গোপালনগরে মুখ্যমন্ত্রী জনসভা করেন। সেই মঞ্চে মমতা ঠাকুর বক্তৃতা করার সুযোগ না পেলেও মতুয়া হিসেবে বক্তব্য রেখেছিলেন নরোত্তম। যা নিয়ে নিজের ক্ষোভের কথা ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছিলেন মমতা ঠাকুর।

দলের একটি সূত্রের মতে, তৃণমূল নেতৃত্ব তাঁর থেকে নরোত্তমকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে মনে করেন মমতা। যা তিনি ভাল চোখে নিতে দেখছেন না বলে জানাচ্ছেন মমতা ঠাকুরের ঘনিষ্ঠেরা। দলের একটি সূত্রের দাবি, নরোত্তম প্রার্থী হোন, সেটাও চাননি মমতা।

সাংবাদিক বৈঠকে মমতা এ দিন বলেন, ‘‘অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্গে নরোত্তম যুক্ত নন। ঠাকুরবাড়ির সঙ্গে তিনি জড়িত নন। উনি মতুয়া কিনা, তা-ও আমি জানি না। কবিগান গায়ক অসীম সরকার তাঁর গুরুদেব বলেই জানি।’’

পাশাপাশি মমতা এ-ও বলেন, ‘‘ওঁকে একটা সুযোগ দেব। কারণ, তিনি তৃণমূল প্রার্থী। আমিও তৃণমূল করি। ওঁকে বলব, ঠাকুরবাড়ি-বিরোধী বক্তব্য থেকে বিরত থাকতে।’’

মমতা ঠাকুরের সমালোচনার জবাবে নরোত্তম নিজেকে মতুয়া প্রমাণে তৎপর। তাঁর কথায়, ‘‘কে মতুয়া আর কে মতুয়া নন, সেটা উনি (মমতা) বলতে পারেন না। আমি মতুয়া না হলে ওড়াকান্দিতে মন্দির সংস্কার, হরিচাঁদ ঠাকুরের বাড়ি সংস্কার, ঠাকুরবাড়িতে গুরুচাঁদ ঠাকুরের মন্দির তৈরিতে আমার অবদান থাকত না। ওঁর সঙ্গে আমার নীতিগত বিরোধ থাকতে পারে। তা বলে ঠাকুরবাড়ি সম্পর্কে আমি কোনও মন্তব্য করি না।’’

নরোত্তম ও মমতা ঠাকুরের এই দ্বৈরথ নিয়ে জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর গোপাল শেঠ বলেন, ‘‘নরোত্তম মতুয়া ধর্ম প্রচারক। মমতা ঠাকুরকে তিনি মা বলে ডাকেন। বিরোধীরা ভুল বুঝিয়ে তাঁদের মধ্যে দূরত্ব বাড়ানোর চেষ্টা করছে। ওঁদের মধ্যে কোনও ভুল বোঝাবুঝি থাকলে কথা বলে মিটিয়ে ফেলা হবে।’’

এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলকে কটাক্ষ করার সুযোগ ছাড়ছে না বিজেপি। দলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘‘নরোত্তম মতুয়া নন, এটা বলছেন মমতা ঠাকুর। যিনি ঠাকুরবাড়ির ঘরের লোক। স্বাভাবিক ভাবেই তিনি মতুয়া হতে পারেন না। মতুয়া হলে ঠাকুরবাড়ি সম্পর্কে কুকথা বলতেন না। মতুয়ারা তৃণমূলের সঙ্গে নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন