West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls: ‘জল দাও, ভোট নাও’, বার্তা ভোটারের

জল-সমস্যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও।

Advertisement

সুশান্ত বণিক এবং সুব্রত সীট

আসানসোল ও দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২১ ০৫:৪৭
Share:

এ ভাবেই জল আনতে হয় কুলটির বিভিন্ন এলাকায়। ছবি: পাপন চৌধুরী।

ভোটের আগে জল, কান পাতলে এমন বার্তাই শোনা যাবে, দাবি আসানসোলের বিভিন্ন এলাকার ভোটারদের একাংশের। এ দিকে, দুর্গাপুরে ভোটারদের একাংশের প্রশ্ন, কেন এত দিনেও দুর্গাপুর ব্যারাজ ছাড়া, জলের বিকল্প ব্যবস্থা সে ভাবে তৈরি হয়নি। বিষয়টি উঠে আসছে ভোটের প্রচারেও।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কুলটির ২৮টি ওয়ার্ডের জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ উদ্যোগে ২৩৯ কোটি টাকায় তৈরি হয়েছে জলপ্রকল্প। পাশাপাশি, প্রায় ১০০ কোটি টাকা খরচ করে আসানসোলের ভূতাবুড়ি ও কালাঝরিয়া জলপ্রকল্পের আধুনিকীকরণ হয়েছে। একের পরে এক জলপ্রকল্প তৈরি হয়েছে সালানপুর, বারাবনিতে। কিন্তু তার পরেও কুলটি, আসানসোল, বার্নপুর, সালানপুর-বারাবনির নানা এলাকা এখনও নির্জলা বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের একাংশের।

সম্প্রতি সারদাপল্লি ও হনুমানচড়াইতে ঘণ্টার পরে ঘণ্টা পথ অবরোধ করে জলের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। পুর-কর্তাদের দাবি, কয়েকটি এলাকায় পাইপলাইন পাতা হয়নি। রয়েছে কারিগরি সমস্যাও। এই পরিস্থিতিতে কুলটির মনোজ প্রসাদ, পুষ্পরানি মণ্ডল প্রমুখের বক্তব্য, ‘‘প্রতিটি রাজনৈতিক দলই জল-সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিচ্ছে। কিন্তু আমাদের বক্তব্য, জল দাও, ভোট নাও।’’ পাশাপাশি, জলের দাবিতে সালানপুর ও বারাবনি ব্লকেও নিয়মিত বিক্ষোভ হচ্ছে বলে
জানা গিয়েছে।

Advertisement

এ দিকে, দুর্গাপুরে জলের মূল উৎস দুর্গাপুর ব্যারাজ। কিন্তু সেখানে বিপত্তি ঘটলে জলের হাহাকার, ‘কালোবাজারি’ কী পর্যায়ে যেতে পারে, তা গত চার বছরে দু’বার টের পাওয়া গিয়েছে বলে জানান শহরবাসী। এই অবস্থায় ভোটারদের একাংশের প্রশ্ন, ব্যারাজের বিকল্প জলের উৎস এখনও তৈরি হয়নি। যদিও, দুর্গাপুর পুরসভা জানিয়েছে, ১৯টি গভীর নলকূপ বসানো হয়েছে শহর জুড়ে। কিন্তু পুরসভা সূত্রেই জানা যায়, ৩৬টি গভীর নলকূপ বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি, ব্যারাজের কাছে দামোদরের পাড় ও বীরভানপুর গ্রামের মাঝে প্রায় এক কিলোমিটার লম্বা ও কয়েকশো মিটার চওড়া মজা জলাশয়টি ও নাচন জলাধার সংস্কার করে জলের বিকল্প উৎস তৈরির পরিকল্পনা এখনও রূপায়িত হয়নি বলে অভিযোগ। পাশাপাশি, গরম পড়তেই দুর্গাপুর পুরসভার সাতটি ওয়ার্ডে পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে বলে অভিযোগ। ওই সব এলাকার বাসিন্দারা জানান, কোথাও এক বেলা জল আসে। তা-ও নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আসে না। সম্প্রতি ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা পুরসভায় গিয়ে পানীয় জলের জন্য বিক্ষোভও দেখিয়েছেন।

দুই মহকুমার এই জল-সমস্যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। দুর্গাপুর পূর্বের সিপিএম প্রার্থী আভাস রায়চৌধুরী, দুর্গাপুর পশ্চিমের কংগ্রেস প্রার্থী দেবেশ চক্রবর্তীরা ব্যারাজ সংস্কার না হওয়ার জন্য রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারকে বিঁধে প্রচার চালাচ্ছেন। তবে দুর্গাপুর পূর্বের তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপ মজুমদার সংস্কার না হওয়ার দায় কেন্দ্রের উপরেই ঠেলেছেন। কিন্তু দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি প্রার্থী লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, ‘‘কেন্দ্র যথেষ্ট উদ্যোগী হয়েছে। কিন্তু রাজ্যের কোনও উদ্যোগ ছিল না।’’ যদিও ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বনাথ পাড়িয়াল এই সমস্যা মেটাতে পুরসভার আরও বেশি ‘উদ্যোগ’ দাবি করেছেন। এ দিকে, বিজেপির জেলা সভাপতি শিবরাম বর্মন বলেন, ‘‘বাম ও তৃণমূল, দুই আমলেই জল-সহ ন্যূনতম নাগরিক পরিকাঠামো ঠিক হল না।’’ যদিও বিরোধীদের প্রচারকে ‘বিভ্রান্তিমূলক’ বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন