‘যতই মারো, যতই ভয় দেখাও, আমার ভোট আমি দেবই দেব’

ভোটের আগের রাতে শাসকের হুমকির হাত থেকে রক্ষা পেল না সাড়ে তিন বছরের শিশুও। বীজপুরে বারেন্দ্র গলিতে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকে সাড়ে তিন বছরের টোটো সমাজপতি। তার বাবা-মা এলাকায় সিপিএম সমর্থক বলেই পরিচিত। অভিযোগ রবিবার রাতে তাঁদের বাড়িতে হামলা চালায় কয়েক জন তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী। টোটোর বাবা মায়ের হাত-পা ভেঙে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ওই ছোট শিশুকেও গলা টিপে খুনের হুমকি দেয় তারা। কিন্তু এত কিছুর পরেও হাল ছাড়তে নারাজ টোটোর বাবা-মা। তার বলেছেন, ‘যতই মারো, যতই ভয় দেখাও, আমার ভোট আমি দেবই দেব’।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৬ ০৯:৫১
Share:

আহত প্রদীপ মাজি। ছবি: সুদীপ ঘোষ।

ভোটের আগের রাতে শাসকের হুমকির হাত থেকে রক্ষা পেল না সাড়ে তিন বছরের শিশুও। বীজপুরে বারেন্দ্র গলিতে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকে সাড়ে তিন বছরের সায়ন্তুিকা ঘোষ। তার বাবা-মা এলাকায় সিপিএম সমর্থক বলেই পরিচিত। অভিযোগ রবিবার রাতে তাঁদের বাড়িতে হামলা চালায় কয়েক জন তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী। টোটোর বাবা মায়ের হাত-পা ভেঙে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ওই ছোট শিশুকেও গলা টিপে খুনের হুমকি দেয় তারা। কিন্তু এত কিছুর পরেও হাল ছাড়তে নারাজ সায়ন্তীকার বাবা-মা। তার বলেছেন, ‘যতই মারো, যতই ভয় দেখাও, আমার ভোট আমি দেবই দেব’।

Advertisement

অন্য দিকে, ভোট শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই হালিশহরেই তৃণমূল কর্মীদের হাতে ঋষভ মণ্ডলকে মারধরের অভিযোগ করা হয়েছে। চারটি বুথে বিরোধীদের বসতেই দেওয়া হয়নি। বেলা যত গড়াচ্ছে তত বেশি শাসকের মরিয়া গা জোয়ারির খবর আসছে। নিউ টাউনে বাম এজেন্টকে মারধরে অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মীকে আটক করা হয়েছে। ব্যারাপুরে ৫টি, দমদমে দু’টি বুথে বিরোধী এজেন্টকে বসতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গতকাল রাতে উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙার সমাদ্দারপাড়ায় মুখে কাপড় বেঁধে স্থানীয় ও বহিরাগত তৃণমূল কর্মীরা রীতিমত সন্ত্রাস চালিয়েছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, সিপিএম কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অবাধে চলেছে হুমকি, ভাঙচুর, গালাগালি। প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা সিপিএম নেতা বাপি ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা অনেকেই ভোট দিতে আসতে ভয় পাচ্ছি। ইতিমধ্যেই কাউকে কাউকে মেরে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সে জন্য দলবদ্ধ ভোট দিতে যাচ্ছি।’’

Advertisement

মধ্যমগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের কৈপুল গ্রামে ২৬৭ নম্বর বুথ থেকে ভোট দিয়ে ফেরার পথে বেধড়ক মারধর করা হল এক সিপিএম সমর্থককে। প্রদীপ মাঝি নামে ওই ব্যক্তিকে বাঁশ ও লোহার রড দিয়ে পেটানো হয়েছে বলে অভিযোগ। শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। সিপিএমের দাবি, গত সাত-আট বছর ধরে প্রদীপবাবু এলাকাছা়ড়া ছিলেন। ভোটের দিন সকালেই তিনি পুলিশি নিরাপত্তায় গ্রামে ভোট দিতে ফিরেছিলেন। সেই ভোট দিয়ে ফেরার পথেই আক্রান্ত হন তিনি। তাঁকে মধ্যগ্রাম গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। স্থানীয় সিপিএম নেতা আহমেদ খানের অভিযোগ, ‘‘খামারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন বুথে জোট প্রার্থীর এজেন্টদের বসতে বাধা দিচ্ছে তৃণমূল। প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না।’’

কিন্তু এত করেও আটকানো যাচ্ছে না সাধারণ মানুষের ভোট দেওয়ার অধিকার প্রয়োগের ইচ্ছাকে— ‘যতই মারো, ভয় দেখাও, ভোট দিতে যাবই’। বুথগুলির সামনে লম্বা লাইনই প্রমাণ করছে এই মানসিকতাকেই।

আরও পড়ুন
‘কালকে খাওয়ানোটা দেখছি ফালতুই হল, এখন কেউ হেল্প করছে না’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন