কৃষ্ণ শুয়ে রয়েছেন। ঘুমোচ্ছেন তিনি। চিরন্তন দুই শত্রু, তাঁরই আশীর্বাদ প্রার্থনায়। প্রথমে ঢুকলেন দুর্যোধন। তাঁর পরেই অর্জুন। কৃষ্ণের মাথার কাছেই বসলেন দুর্যোধন, তাঁর অহং সেখানেই তাঁকে বসাল। পায়ের দিক বেছে নিলেন বিনম্র অর্জুন। ঘুম ভাঙতেই কৃষ্ণের চোখ পড়ল অর্জুনের মুখে। কী চাও? কৃষ্ণকে চেয়ে নিলেন অর্জুন। দ্বিতীয় বাছাইয়ে দুর্যোধন পেলেন এক অক্ষৌহিণী নারায়ণী সেনা।
এক অহংবোধ দুর্যোধনের ভবিষ্যৎ লিখনের কাজ করেছিল, মহাভারতের কথায়। অনেক সহস্র বছর পর আজ সেই কথাটা মনে পড়ে গেল। যখন মাত্স্যন্যায়ের চূড়ান্ত চেহারা প্রকট, যখন বিশৃঙ্খলাই দাঁড়াচ্ছে সমাজের নিয়ম হয়ে, যখন বে-আইনটাই আইন বলে প্রতিভাত করার বেশ একটা তৃণমূলবদ্ধ প্রয়াস চলছে, তখন আরও এক বার প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠেন শয়ান ওই কৃষ্ণ।
আজব খেলা চলছে। রাজনৈতিক নেত্রীকে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া কড়া চিঠির উত্তর পাঠাচ্ছেন সরকারের প্রধান, মুখ্যসচিব। নির্বাচন কমিশনের নজরদারিতে কিছু এসে যায় না বলছেন দূর রণপ্রান্তের কোনও এক অনুব্রত মণ্ডল। গুড়-বাতাসা তৈরি থাকছে, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের পরবর্তী পর্বের জন্য। এক দিকে নিয়ম, নিষ্ঠা, ন্যায়ের সার্বিক আচ্ছাদন অন্য দিকে তীব্র অহংয়ে তাকে উপেক্ষার আহ্বান— কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে এহেন পরিস্থিতিতে অর্জুন পেয়েছিলেন কৃষ্ণকে। দুর্যোধন পেয়েছিলেন সে যুগের অজস্র দীপক ঘোষ, অভিজিত্ সিংহদের।
মহাভারত সাক্ষী, জয় হয়েছিল ন্যায়ের। বীরভূমের রণভূমে তার ব্যতিক্রম হবে কী ভাবে?