নবান্ন অভিযানের ডাক। নিজস্ব চিত্র।
চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীরা এ বার ডাক দিল নবান্ন অভিযানের। ‘যোগ্য’- ‘অযোগ্য’-দের তালিকা প্রকাশের দাবিতেই তাঁদের এই আন্দোলন। তাঁদের অভিযোগ, একাধিক বার কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেও কোনও লাভ হয়নি। কমিশনের তরফে বার বার জানানো হয়েছে ‘যোগ্য’দের তালিকা সরকারের কাছে পাঠানো হয়ে গিয়েছে। তাই শিক্ষা কর্মীদের অভিযোগ, সরকারের কাছে তথ্য পাঠানো হলেও কমিশন স্পষ্ট জবাব দিতে নারাজ।
গ্রুপ সি চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষাকর্মী অমিত কুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা বহু বার বৈঠক করেছি। কিন্তু বৈঠকে কোনও আশানুরূপ ফল হয়নি। তাই এ বার নবান্ন অভিযানে নামছি আমরা।’’
৩ জুলাই নবান্ন অভিযান করবেন বলে জানিয়েছেন চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীরা। স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে দু’দিন অন্তর বৈঠক করেছেন শিক্ষাকর্মীরা। গত সপ্তাহের বৈঠকের পর সোমবার ফের দীর্ঘক্ষণ বৈঠক হয় চেয়ারম্যানের সঙ্গে। তাঁদের দাবি, ওই বৈঠকে জানানো হয়ছে আইনি পরামর্শ ছাড়া ‘যোগ্য’- ‘অযোগ্য’-র তালিকা প্রকাশ করা সম্ভব নয়। চাকরিহারাদের অভিযোগ, সরকারের দুর্নীতির কারণে তাঁদের চাকরি গিয়েছে। দীর্ঘ তিন মাস বেতন বন্ধ চাকরিহারাদের। তাই চাকরি পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে নবান্ন অভিযানে নামছেন শিক্ষাকর্মীরা।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে তাঁরা দীর্ঘ চার ঘন্টার বৈঠক করেন এসএসসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে। বৈঠকে চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীরা যে সমস্ত দাবি জানিয়েছিলেন—
১) দ্রুত সার্টিফায়েড লিস্ট প্রকাশ করতে হবে।
২) সিবিআই যে ২২ লক্ষ ওএমআর শিটের কপি উদ্ধার করেছে, সেই সমস্ত নথি এসএসসি-র ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।
৩) ‘যোগ্য’ শিক্ষাকর্মীদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে।
এই দাবিতে সোমবার বৈঠক করলেও শেষে হতাশ চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীরা। তাই বৃহস্পতিবার নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে তাঁরা।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেলে থাকা প্রায় ২৬ হাজার জনের চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এঁদের মধ্যে রয়েছেন ১,২৫৫ গ্রুপ-সি এবং ২,১৩৯ জন গ্রুপ-ডি শিক্ষাকর্মীও। মে মাসে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেয় চাকরিহারা গ্রুপ-সি কর্মীদের প্রতি মাসে ২৫ হাজার এবং গ্রুপ-ডি কর্মীদের ২০ হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হবে। রাজ্যের সেই সিদ্ধান্তে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট।