Bengal Teacher Recruitment Case

এসএসসি ভবনের সামনে জমায়েত চাকরিহারাদের, ভিড় না সরলে আলোচনায় বসতে নারাজ এসএসসি

এক দিকে যখন এসএসসি ভবন অভিযান চলছে, ঠিক তখনই এপ্রিলে এসএসসি ভবন অভিযান কাণ্ডে চাকরিহারা শিক্ষকদের তলব করেছে বিধাননগর গোয়েন্দা পুলিশ।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২৫ ১৪:৫১
Share:

রাজপথে ‘যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ’। নিজস্ব চিত্র।

রাজপথে নেমেছে ‘যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ’। চাকরিহারা শিক্ষকেরা এসএসসি ভবনে পৌঁছেছেন। তবে, আগের বারের তুলনায় মিছিলে শামিল হয়েছেন কম সংখ্যক ‘চাকরিহারা’ শিক্ষকেরা। মিছিল থেকেই ‘যোগ্য’রা আরও জানিয়েছেন, তাঁদের দাবি না মানা হলে ফের অবস্থান-বিক্ষোভে বসবেন এবং পরবর্তী কর্মসূচি এসএসসি ভবনের সামনে থেকেই ঘোষণা করা হবে।

Advertisement

শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, এসএসসি অফিসের সামনে জমায়েত, ঘেরাও বিক্ষোভের কারণে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পালনে ব্যাঘাত ঘটছে। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে আলোচনা করেও সমাধান মিলবে না। একই সঙ্গে শিক্ষা দফতরের তরফে পুলিশ চাকরিহারা শিক্ষকদের জানিয়েছে, যত ক্ষণ না স্কুল সার্ভিস কমিশনের দফতরের সামনে থাকা জমায়েত সরানো হবে, তত ক্ষণ কোনও আলোচনা হবে না। আদালতের নির্দেশ মেনেই নির্দিষ্ট স্থানে শিক্ষকদের যেতে হবে।

এ ছাড়াও স্মারকলিপি জমা দেওয়া এবং আলোচনার জন্য আটজন প্রতিনিধি ভেতরে যেতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে। এই নিয়ে পর পর দু’বার পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছেন ‘যোগ্য’রা। পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা নিয়ে তাঁরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা শুরু করেছেন।

Advertisement

বৃহস্পতিবার করুণাময়ী থেকে মিছিল শুরু হয়। শিক্ষক-শিক্ষিকারা যে সমস্ত দাবি নিয়ে এসএসসির চেয়ারম্যানের কাছে ডেপুটেশন জমা দেবেন, সেগুলি হল—

১. ‘যোগ্য’ এবং ‘অযোগ্য’-দের ওএমআর শিটের মিরর ইমেজ প্রকাশ করতে হবে।

২. পিটিশন রিভিউ এবং কিউরেটিভ সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ফর্ম পূরণ করা বা পরীক্ষা নেওয়া যাবে না।

৩. রি-প্যানেলের ব্যবস্থা করতে হবে এসএসসিকে।

৪. যাঁরা ‘যোগ্য’, তাঁদের নামের তালিকা প্রকাশ করে, তা যাচাই ও প্রত্যয়িত করতে হবে এসএসসিকে।

ডেপুটেশন দেওয়ার জন্য আট জনের বেশি শিক্ষক এসএসসি ভবনের দফতরে যেতে পারেন। তবে কারা ডেপুটেশন জমা দেবেন, তা এখনও ঠিক করা হয়নি। যদিও এসএসসির চেয়ারম্যান অনুপস্থিত। মিছিল থেকেই আন্দোলনের অন্যতম মুখ চিন্ময় মণ্ডল সাফ জানিয়েছেন, পড়াশোনা করতে পারলেই যে পরীক্ষা দিতে হবে, এটা ঠিক নয়।

রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বুধবার জানিয়েছিলেন, পরীক্ষায় অনেকেই বসতে চাইছেন, যাঁরা চাইছেন না, তাঁদের বিষয়টি জানা নেই তাঁর। যদিও এর বিরোধিতা করেছেন ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের বড় অংশ। তাঁদের দাবি, নতুন করে যোগ্যতার পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়। শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের উত্তরে চিন্ময়ের পাল্টা অভিযোগ, রিভিউ পিটিশনের বিষয়টি নিয়ে উচ্চবাচ্য নেই সরকারের। ধীরে ধীরে সরকার গোটা বিষয়টি ঠান্ডাঘরে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে।

এরই মধ্যে এপ্রিল মাসে এসএসসি ভবন অভিযানে যে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটেছিল, তার প্রেক্ষিতে চাকরিহারা শিক্ষকদের তলব করেছে বিধাননগর গোয়েন্দা পুলিশ। হাবিবউল্লাহ এবং আবদউল্লাহ নামের দুই শিক্ষকদের দাবি, বিকাশ ভবনে যাঁরা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন কিংবা ডেপুটেশনে নাম রয়েছে, এমন শিক্ষকদেরই বেছে বেছে ডেকে পাঠানো হচ্ছে।

চার দফার দাবিতে অনড় শিক্ষক-শিক্ষিকারা। নিজস্ব চিত্র।

একই সঙ্গে যে ওএমআর শিটগুলি পরীক্ষা করার জন্য সিএফএসএলের কাছে পাঠানো হয়েছিল, তার রিপোর্ট নাকি জমা পড়েছে, এই গুজব রটেছে। সিবিআই দফতরে তার সত্যতা যাচাই করতে উপস্থিত ছিলেন চার জন শিক্ষিকা। সিবিআই আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা জানতে পারেন, সেই রিপোর্ট পাওয়া দীর্ঘমেয়াদি বিষয়। আদালতে এই নিয়ে আলাদা করে মামলা দায়ের করলে, সেই রিপোর্ট দ্রুত পাওয়া গেলেও যেতে পারে। উল্লেখ্য এই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই যোগ্য, অযোগ্য সম্পর্কিত তথ্য পাওয়া সম্ভব।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement