ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল
একটা লম্বা ইন্টারভিউ অনেক সময় ফিল্মের মতো! অঘোষিত কিছু সুখের দৃশ্য থাকে। কিছু দুঃখের সিন থাকে। নাচ থাকে। গান থাকে। ইন্টারভিউয়ারের ক্রূর প্রশ্ন থেকে তৈরি এক-আধটা নীচ মুহূর্তও থাকে। তেমনই কোনও নীচ মুহূর্ত তৈরি হওয়ার ‘অসামান্য’ সুযোগ ইন্টারভিউয়ের একাধিক মোড়ে।
নমুনা? যখন সুস্মিতা সেন উচ্ছ্বসিত ভাবে বলছেন, “আগামী দশ বছর আমি ফাটিয়ে দেব। আই উইল রক।”
তখন আনন্দplus-এর প্রশ্ন, ‘সেটা হবে কী করে? ঐশ্বর্যা মডেলে?’
অগস্টের রগরগে মধ্য দুপুর। সল্ট লেকের সেন্ট্রাল পার্কে দাঁড় করানো মেক আপ ভ্যানের পেটে হচ্ছে ইন্টারভিউ। মুম্বই থেকে আসা সুস্মিতার ব্যক্তিগত সচিব শিনেল ছাড়াও টেপ রেকর্ডারের পাশে সুস্মিতার প্রথম বাংলা ছবির পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। তা প্রশ্ন শুনে সৃজিতের প্রতিক্রিয়ায় মনে হল যেন ব্লটিং পেপার দিয়ে কেউ মুখের রক্ত শুষে নিয়েছে!
কে না জানে, সুশ আর অ্যাশ হলেন কুড়ি বছরেরও বেশি ভারতীয় জনজীবনের বিপরীতমুখী দুই গ্ল্যামারাস জাংশন। যাঁদের সেই মডেলিং জীবনের তীব্র লড়ালড়ির পর কেউ কখনও এক ফ্রেমে দেখেনি। সৃজিত পরে স্বীকার করবেন, প্রশ্নটা শুনে তীব্র শিরশিরানি সমেত তাঁর মনে হয়েছিল অন্তত আজকের মতো শ্যুটিংটা বাতিল হয়ে গেল!
তার পরেও প্রাণোচ্ছল ভদ্রতার আবহে যে ইন্টারভিউটা শেষ করা গেল তার একমাত্র কারণ স্বয়ং সুস্মিতা।
বিস্ময়কর? না। বহু বছর ধরেই তো আবিষ্কৃত হয়ে রয়েছে নিছক আভিজাত্যে বলিউডের সব হিরোইন এক দিকে। তিনি সুস্মিতা সেন আর এক দিকে!
আর এটা তো তাঁর একরকম ঘরে ফেরা। শট দিতে কখনও বাটানগর। কখনও সেন্ট্রাল পার্ক। কখনও চৌরঙ্গী। কখনও যাদবপুর।
সব পাখি ঘরে ফেরে
সব নদী ফুরায় এ জীবনের সব লেনদেন
থাকে শুধু অন্ধকার
মুখোমুখি বসিবার নয়াদিল্লির সুস্মিতা সেন।
দু’টো বাঘা ব্যাচেলরকে নিয়ে আপনার কলকাতার সংসার কেমন চলছে?
দু’টো ব্যাচেলর মানে?
সৃজিত আর যিশু টালিগঞ্জের সবচেয়ে এলিজিবল দুই ব্যাচেলর!
ওহ্ (হাহা) সেটে প্রচণ্ড ফ্লার্টিং চলছে... অনবরত যে পারছে ফ্লার্ট করছে। বাট হোল্ড অন, যিশু তো ব্যাচেলর নয়। আই মিন... (সৃজিতের দিকে জিজ্ঞাসু চোখ)।
যিশু টেকনিক্যালি ম্যারেড, কিন্তু স্পিরিটে ফুল ব্যাচেলর।
ওহ্! হাহা। যিশু ইজ আ ভেরি নাইস অ্যান্ড কেয়ারিং গাই। সেটে সব সময় ফ্রেন্ডলি। বাট আমার কাছে সবচেয়ে এলিজিবল এই ফিল্মটা ‘নির্বাক’। কোনও মানুষের এলিজিবিলিটি নয়।
তাও বলুন না। এই যে সৃজিত। ওঁকে কেমন লাগছে?
ডিরেক্টরবাবু দুর্ধর্ষ স্ক্রিপ্টটা করেছেন এই ছবির (সৃজিতের দিকে হেসে)। আমি শুনে জাস্ট হাঁ হয়ে গিয়েছিলাম।মনে আছে আমি কত বছর ধরে বলছিলাম বাংলা ছবিতে কাজ করব? কত প্ল্যানিং! কত স্টোরি শুনেছি। সব ফাইনাল হয়ে গিয়েও হয়নি। সৃজিতের স্ক্রিপ্টটা শোনার পর আমরা দু’জনেই আর বেশি দেরি করিনি। পাছে দেরি করতে গিয়ে ব্যাপারটা সেই আগের প্রজেক্টগুলোর মতো ঝুলে যায়। সৃজিতের বডি অব ওয়ার্ক সম্পর্কে আমি খুব সশ্রদ্ধ। ‘অটোগ্রাফ’টা শুধু আমার দেখা হয়নি। ওর বাকি সব ক’টা ফিল্ম আমি দেখেছি। আমার সব পরিচালকদেরই আমি বিশ্বাস করে এসেছি। সৃজিতকে তো খুবই বিশ্বাস করে যাচ্ছি। এমন সব ট্রিটমেন্ট ছবিতে আছে বা এমন ড্রেসও হয়তো সাজেস্ট করছে, আমি কখনও কোনও প্রশ্ন করিনি। যে ভাবে ও গোটা ছবিটা দেখে। যে ভাবে সংলাপগুলো সাজায়। সেটা ভেরি সেক্সি। তবে আমার কাছে আকর্ষণটা ওখানেই শেষ।
সৃজিত: যাব্বাবা। আমি চলি তা হলে।
সুস্মিতা: হাহা। না না বসো বসো।
আচ্ছা, আপনার প্রেমকাহিনি নিয়ে এত চর্চা হয়। আপনি তিন খানের কারও সঙ্গে গুছিয়ে প্রেম করলেন না কেন?
মানে?
‘নির্বাক সেলফি’: দুই ‘ব্যাচেলর’ সৃজিত-যিশু। এক নায়িকা
মানে, তা হলে তো অনেক দিক থেকেই সুবিধে হত।
আমি এ ভাবে কখনও ভাবিনি। তাছাড়া খানদের সঙ্গে প্রেম হত কী করে? সলমন তো আমার খুব বন্ধু। ভেরি ক্লোজ। যাকে সব মনের কথা খুলে বলা যায়। সমস্যায় পড়লে নিরাপত্তা চাওয়া যায়। সলমন ফিল্মে উল্টো দিকে থাকলে আরাম করে হিল পরা যায়। প্রেম হতে তো অনেক কিছু জিনিস লাগে। এত ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সঙ্গে প্রেম হয় নাকি? সেটা তা হলে ভয়ঙ্কর কমপ্লিকেটেড হয়ে যায়। দ্বিতীয় জন আমির, ঠিক কেমন আমি জানি না। ওর সঙ্গে আমার কাজ করার অভিজ্ঞতা নেই। প্রেম নিয়ে ভাবার সুযোগই হয়নি। শাহরুখের সঙ্গে কাজ করেছি। যখনই কাজ করেছি, উই হ্যাড আ ব্লাস্ট। বারবার দারুণ জমেছে আমাদের। এখনও পার্টিতে আমি আর শাহরুখ এক হওয়া মানেই ফুল মস্তি।
কিন্তু ‘ম্যায় হুঁ না’ এত ভাল চলার পরেও তো আপনাদের জুটিকে আর রিপিট করা হল না।
তা হয়নি।
সেই সুন্দরী কেমিস্ট্রি টিচারের কী হল?
কী আর হবে... কালের নিয়মে সে একদিন রিটায়ার করে গেল!
ট্র্যাজেডিটা তো এখানেই যে আপনি এসআরকে ক্যাম্পের অংশ হতে পারেননি।
আমি আশা করব আবার একদিন আমি আর শাহরুখ একসঙ্গে ছবি করব। আমরা একসঙ্গে স্ক্রিনে আসা মানেই দারুণ কেমিস্ট্রি। আর একটা কথা বলি, শাহরুখ আর সলমন দু’জনেই ব্যক্তিগত জীবনে আমায় নানা ভাবে সাহায্য করেছে। দু’জনেই খুব বন্ধু।
কিন্তু এই যে ১৮ বছরের মতো বলিউডে কাটিয়েও আপনার ছবির সংখ্যা মাত্র ৩৫। তার নেপথ্যে নিশ্চয়ই একটা কারণ থাকবে।
কারণ আমি টিপিকাল হিন্দি ফিল্ম হিরোইনের ছাঁচে ফিট করিনি। সেই ছাঁচটার মধ্যে অনেক জিনিস আছে, যা আমার দ্বারা সম্ভব হয়নি।
যেমন?
যেমন লবিং। যেমন ক্যাম্পে ঢুকে পড়া। যেমন অহর্নিশি সুযোগ খোঁজা। এগুলো আমি পারিনি। বিউটিফুল ফিল্ম আমার কাছে ভীষণ ভীষণ স্যাটিসফাইং একটা ব্যাপার। তা বলে জীবনের ফার্স্ট অ্যান্ড লাস্ট স্টেশন নয়। নিজের রুচিকে বিসর্জন দিয়ে নয়। প্যাক আপের পরেও আমার জীবনে অনেক ইন্টারেস্টের বিষয় থেকে যায়।
কিন্তু ঐশ্বর্যা রাইয়ের তো অসুবিধে হয়নি।
আমাদের দু’জনের ডিএনএ-টা আলাদা।
আপনার আর ঐশ্বর্যার একটা ঐতিহাসিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা কুড়ি বছর আগে শুরু হয়েছিল। আজ সেটা কোন চেহারায়?
আমাদের জীবন প্যারালাল লাইনে চলে আসছে। একজন মিস ইউনিভার্স হল তো আর একজন মিস ওয়ার্ল্ড। একজন পেপসির মডেল তো আর একজন কোক-য়ের। একজন দক্ষিণী ছবিতে সই করল তো আর একজন বলিউড। এ ভাবেই তো চলে আসছে। আসলে আমাদের জীবনের প্রায়োরিটিগুলোই আলাদা।
একটা সত্যি কথা বলুন তো। প্রতি বার যখন ঐশ্বর্যা কান-য়ে রেড কার্পেটে হাঁটেন, মন খারাপ হয় না?
মন খারাপ করবে কেন? আই হ্যাভ গ্রেট অ্যাডমিরেশন ফর ঐশ্বর্যা। কিন্তু ও ওর জীবনটা ওর মতো করে বেছে নিয়েছে। যেখানে হয়তো বলিউড আরও বেশি আছে। কান আছে। আমি আমার মতো একটা ডিফারেন্ট লাইফ বেছেছি। সেটা আঁকড়ে থাকতে চেয়েছি। এ বার সেই মোড়ের কোথাও যদি কান-য়ের রেড কার্পেট থাকে, তো থাকবে। যখন সে রকম একটা ফিল্ম করব। যখন আমার সেই সময়টা আসবে তখন।
মমতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে আপনাদের ডেকে সংবর্ধনা দিলেন। আপনাকে, রানিকে, বিপাশাকে। ওঁদের দুজনের সঙ্গেই আপনাকে খুব স্বচ্ছন্দ দেখাল। কিন্তু অ্যাশের বেলা আপনি আড়ষ্ট আর এত পোশাকি কেন? আজও কি গোপনে লড়াইটা চলে?
আরে কী প্রশ্ন! একটা জিনিস বুঝতে হবে। রানির সঙ্গে এক ফিল্মে আমি কাজ করেছি। বিপাশা আর আমি একসঙ্গে বেশ কিছু পাবলিক অ্যাপিয়ারেন্স করেছি। ওদের সঙ্গে একটা বোঝাপড়া আমার তৈরি ছিলই।
বুঝলাম। মানে আপনার কাছে ঐশ্বর্যার মোবাইল নম্বরও নেই। বা ওঁর কাছে আপনার?
না, না, সেটা আছে। একটা কথা বলি, আমি দূর থেকেও দেখতে পাই মাতৃত্ব অ্যাশকে অনেক বদলে দিয়েছে।
আপনার বেলায়?
আমি তো সেই ১৭-১৮ বছর বয়স থেকেই নিজের জীবনের দায়িত্বে। তখনও জানতাম একদিন মা হব, জীবন বদলে যাবে... ২৪ বছর বয়সে যখন মা হই, সেই অভিজ্ঞতা আমাকে অনেকটাই বদলে দেয়।
প্রিয়ঙ্কা চোপড়া কি অনেকটা ঐশ্বর্যা মডেলে তৈরি?
মনে হয় না। প্রিয়ঙ্কা অনেক বেশি ঝুঁকি নেয়।
মেয়েদের এক নম্বর কি প্রিয়ঙ্কা?
সেটা বলব না। ওটা ছবি থেকে ছবির উপর নির্ভর করে। যার ছবি যখন চলছে, তখন সে এক নম্বর।
তবু যদি এক নম্বর বাছতে হয় দীপিকা, প্রিয়ঙ্কা, ক্যাটরিনা? কে?
সে ভাবে বললে আমি বলব বিদ্যা বালন। যে ছবিতে থাকলে হিরো কে, লোকে অর্ধেক সময় জিজ্ঞেসও করে না। যেমন একটা সময় শ্রীদেবীর বেলায় ছিল।
কিন্তু আমার কাছে যে এক নম্বর হতে এসেছে, সে অলরেডি এসে গিয়েছে।
সে কে?
আলিয়া ভট্ট। দুর্ধর্ষ পোটেনশিয়াল। হাতে ওর অনেক সময়।
আর হিরোদের এক নম্বর?
সলমন। এত হিরো তো আছে। কিন্তু সলমন থাকা মানে ডিস্ট্রিবিউটররা সবচেয়ে নিরাপদ ফিল করে। একটা মোস্ট রদ্দি ছবিকেও সলমন দাঁড় করিয়ে দিতে পারে।
বলিউডে নতুন ঢুকেছে এই শ্রেণিকে আপনার ১৮ বছরের বলিউডি ব্রেন কী টিপস দেবে?
বলব দিগ্বিদিকশূন্য হয়ে দুম করে লাফিয়ে পোড়ো না। স্রোতেও ভেসে যেয়ো না। তোমার নিজের সিস্টেমে যেটুকু আসে, সেটাকেই ফলো করো। কখনও খুব ডেসপারেট হয়ে যেয়ো না। বলিউডে তোমার সামনে যাই ঘটতে থাকুক না কেন, নিজের সততাটা কখনও বিসর্জন দিও না। আর একটা জিনিস খুব ইম্পর্ট্যান্ট। তুমি যখন কাজে মন দেওয়ার চেষ্টা করছ, বাইরে অবিরত চিল্লামি হবে। প্রতি সেকেন্ডে সেই আওয়াজটা তুমি শুনতে পাবে যে তোমার কী করা উচিত। বাকি পৃথিবী কোন দিকে যাচ্ছে! এ বার তোমার কাজ হবে সেই আওয়াজটাকে পাত্তা না দিয়ে নিজের কাজটা করে যাওয়া।
ডেসপারেট হয়ে না ঝাঁপালে সে ইমপ্যাক্ট তৈরি করবে কী করে? রোল পাবে কী করে?
না, কখনও ডেসপারেট হতে নেই। আমার অ্যাডভাইস হল নেভার গেট ডেসপারেট। না হলে পরে এমন অনেক দুঃখ থেকে যাবে যা জীবনভর পিছু ছাড়বে না।
মনে করুন, আপনাকে বলা হল যাও, এই ১৮ বছরটা ইচ্ছে মতো পাল্টাও। কী কী বদলাবেন?
আমার নিজের?
হ্যা।ঁ যা যা ভুল হয়েছে এই বছরগুলোয়!
ভুলটা বড্ড স্ট্রং শব্দ। এ ভাবে বলতে পারি চিন্তাভাবনার দিক দিয়ে কিছু বদল করতাম। আমি যেমন স্ক্রিপ্ট নিয়ে বারবার মেতে থেকেছি। ওটাতেই আচ্ছন্ন থেকেছি। পরিচালক পছন্দ হলেই মনে করেছি এ কিছুতেই খারাপ ছবি বানাতে পারে না। আমি মাথাতেই রাখিনি যে শুধু স্ক্রিপ্ট আর পরিচালক দিয়ে ছবি হয় না। একটা ছবি দাঁড় করাতে টাকা লাগে। পিআর মেটেরিয়াল লাগে। ছবিটা ভাল ভাবে ডিস্ট্রিবিউট করতে হয়। স্যাটেলাইট রাইটস ভাল টাকা নিয়ে বেচতে হয়। ‘সময়’ যখন করি, আমি এগুলো সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ। এত ভাল ফিল্ম হয়েও আমরা মানুষের কাছে পৌঁছতেই পারিনি। খেলাটার নিয়মই যে তখন জানতাম না।
বলিউড আপনার নম্বর দৌড়ে পিছিয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে বলে মহিলার ভীষণ ট্যানট্রামস। সামলানো যায় না। কলকাতার শ্যুটে কিন্তু তেমন কোনও খবর নেই। বরং ইউনিটের সবাই বলছে আপনি না কি ট্যানট্রামস ফ্রি। কোনটা আসল সুস্মিতা?
আসলে আমি খুব ভাল ‘না’ বলতে জানি। অপছন্দ হলে ‘না’ বলাতে আমার কোনও সমস্যা নেই। বলিউড সেটা মেনে নিতে অনেক সময় পারেনি। বাংলা কিন্তু এই ‘না’র সঙ্গে খুব স্বচ্ছন্দ। আর এর উপরে যেটা আছে, তা হল মানুষের ইমেজকে সত্যি ভাবা। পারসেপশনকে সত্যি ভাবা। এটা নিয়ে আমার কিছু করার নেই।
বয়ফ্রেন্ডের এত লম্বা লিস্ট আপনার। নতুন করে শুরু করার সুযোগ হলে মনে হয় না তাদের অনেককেই আপনি ছেঁটে ফেলতেন?
সেটা আবার কী কথা (চোখেমুখে তীব্র বিস্ময়)!
কারণ আপনার স্ট্যান্ডার্ডে বেশ কয়েক জনকে জাস্ট পাতে দেওয়া যায় না। সেগুলো কি মারাত্মক ভুল সিলেকশন ছিল না?
এ ভাবে জাজমেন্টাল হওয়াটা বোধহয় আপনার ঠিক নয় (একটু আপসেট)। আমার যা যা সিলেকশন, তাদের সবার মধ্যেই আমি কোনও না কোনও ভাবে রয়েছি। কম হোক, বেশি হোক, আছি। সেই চয়েসগুলোও কিন্তু সুস্মিতা!
তাই?
সিওর।
কয়েকটা উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা করবেন?
একদম নয় (দাঁতে দাঁত চেপে)। বাবা ইন্টারভিউটা পড়বে। পরশুই মুম্বই থেকে ফিরছে।
কুড়ি বছর তো চলে গেল। আগামী দশ বছর কী ভাবে কাটাবেন ভেবেছেন?
ভেবেছি। আগামী দশ বছরে আই উইল রক। আমি জাস্ট ফাটিয়ে দেব। দেখে নেবেন (আত্মপ্রত্যয়ের হাসি। সৃজিত আর ব্যক্তিগত সচিবও হাসছেন)।
সেটা কি নতুন মডেলে? অ্যাশ মডেল!
(কয়েক সেকেন্ড হতাশ চাউনি সহ নির্বাক) আপনার ভাবনাচিন্তাকে এত সঙ্কুচিত করে রেখেছেন কেন?
অ্যাবা-র সেই বিখ্যাত গানের লাইনটা আছে না, হোয়্যার ইজ দ্য স্প্রিং অ্যান্ড দ্য সামার? সে ভাবেই জিজ্ঞেস করি, হোয়্যার ইজ দ্য হাজব্যান্ড অ্যান্ড দ্য ম্যারেজ?
আহহ্...
জানি এই প্রশ্নটা আপনার কাছে যে কোনও ইন্টারভিউয়ের সবচেয়ে অসহ্য জায়গা...
আসলে কেউ কেউ এমন ভাবে প্রশ্ন করে না, যেন আমার বিয়ের বয়স পেরিয়ে গিয়েছে! (ম্লান হাসি)
আপনার স্ট্যান্ডার্ড উত্তরটাই তা হলে চলবে যে ঠিক সময় আসুক। ঠিক মানুষটা আসুক।
ইয়েস, লেট দ্য রাইট টাইম কাম। লেট দ্য রাইট ম্যান কাম।