Rajshekhar Basu Docu Film

বাংলা ভাষাকে কোণঠাসা করার চেষ্টা, প্রতিবাদ জানাতে আনা হচ্ছে ‘রাজশেখর বসু’কে! আর কারা থাকছেন?

রাজশেখর বসু কি শুধুই সাহিত্যিক? না কি সাহিত্যচর্চার আড়ালে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন? কেন তাঁকে নিয়ে তৈরি হল তথ্যচিত্র?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২৫ ১৪:৪২
Share:

‘রাজশেখর বসু’ বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী। ছবি: সংগৃহীত।

‘মোদের গরব মোদের আশা, আ-মরি বাংলা ভাষা’র বুঝি সত্যিই দুর্দিন! রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম বা সাহিত্যিক রাজশেখর বসু এই সময় যদি বাংলায় থাকতেন তা হলে কী করতেন? তাঁরা মাতৃভাষাতেই কবিতা, উপন্যাস, গল্প লিখে বিশ্বের দরবারে সম্মান কুড়িয়েছিলেন! পরিচালক অভিজিৎ পাল বলছেন, “রাজশেখর বসু তখনও বাংলা ভাষা এবং দেশের জন্য লড়াই করেছিলেন। এখন থাকলে একই কাজ করতেন।” কারণ, তাঁর সময়ে ‘পরশুরাম’ ছদ্মনামে, শাণিত ভাষায় এমন অনেক সাহিত্য রচনা করেছেন যা সেই সময়ের সমাজের অন্যায়ের মূলে কুঠারাঘাত করেছিল।

Advertisement

অপ্রতিম চট্টোপাধ্যায়, খরাজ মুখোপাধ্যায়, প্রসেন। ছবি: সংগৃহীত।

তাঁর এই উপলব্ধি থেকেই রাজশেখর বসুর জীবন নিয়ে প্রথম তথ্যচিত্র বানিয়েছেন, ‘পরশুরাম, দ্য আনটোল্ড স্টোরি’। নামভূমিকায় বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী। রয়েছেন কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, দেবশঙ্কর হালদার, প্রদীপ ভট্টাচার্য, খরাজ মুখোপাধ্যায়, অপ্রতিম চট্টোপাধ্যায়, প্রসেন-সহ বাংলা বিনোদন দুনিয়ার খ্যাতনামী অভিনেতারা। সাহিত্যেকের ছোটবেলা করেছেন বিহান চন্দ।

কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, সোমনাথ ভদ্র, প্রদীপ ভট্টাচার্য। ছবি: সংগৃহীত।

বাংলার বিপ্লবীদের নিয়ে হাতেগোনা ছবি আগেও হয়েছে। এখনও তৈরি হচ্ছে। কিন্তু সাহিত্যিকদের নিয়ে সে ভাবে কাজ হয় কই? সেই কারণেই কি পরিচালক রাজশেখর বসুকে বেছেছেন? প্রশ্ন ছিল অভিজিতের কাছে। পরিচালকের কথায়, “আমরা এক দিকে দেশের স্বাধীনতা দিবস পালন করি। অন্য দিকে, ইংরেজি ভাষায় আগামী প্রজন্মকে শিক্ষিত করছি।” পরিচালকের আফসোস, রাজ্যে ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ের বাড়বাড়ন্ত। বাংলা মাধ্যম স্কুল তাই পিছিয়ে পড়ছে। অন্য দিকে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘বাংলা ভাষা বাঁচাও’ আন্দোলনে পথে নামছেন। একটি ভাষার অপমৃত্যুর আশঙ্কা থেকেই তাঁর মনে হয়েছে, রাজশেখর বসুর অবদান এবং দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁর ভূমিকার কথা এই প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা উচিত।

Advertisement

দেবশঙ্কর হালদার ‘রাজশেখর বসু’ ছবির দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত।

এখানেই শেষ নয়, অভিজিৎ আরও জানান, সাহিত্যকে সামনে রেখে তৎকালীন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে গোপনে জড়িত ছিলেন রাজশেখর বসু। শোনা যায়, আলিপুর বোমা মামলা-সহ বিভিন্ন বিপ্লবাত্মক কার্যকলাপের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি। সে সব কথা এখনও অনেকে জানেন না। তাঁর তথ্যচিত্র তৈরির আরও একটি কারণ এটিও। অভিজিতের এই কাজ সফল করতে এগিয়ে এসেছেন তাঁরা বন্ধুরা। রাজশেখর বসু, শশিশেখর বসু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ক্ষুদিরাম বসু, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, কাজী নজরুল ইসলাম, গিরিন্দ্রশেখর বসু-সহ সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রদের দেখা যাবে এই তথ্যচিত্রে। শুটিং হয়েছে নদিয়ার বীরনগর, কলকাতা, দ্বারভাঙ্গা থেকে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাগানবাড়ি হয়ে পটনায়।

‘রাজশেখর বসু’ ছবির দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত।

তথ্যচিত্রে বিপ্লবী-সাহিত্যিক সম্পর্কে বলবেন সাহিত্যিক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, কাজী অনির্বাণ, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, পরিচালক সন্দীপ রায়, নেতাজির পৌত্র চন্দ্রকুমার বোস-সহ বহু বিশিষ্ট মানুষ। ক্যামেরায় সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী। সুব্রত মাইতি। গানের দায়িত্বে সপ্তক সানাই। কণ্ঠে নচিকেতা চক্রবর্তী, খ্যাদা (অনন্যা চট্টোপাধ্যায়), সপ্তক নিজে। নিজের শহরে মুক্তির আগে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব মঞ্চে ছবি পাঠাবেন পরিচালক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement