Anindya Chatterjee

International Mother Language Day: বাংলার প্রতিটি শব্দকে উদ্‌যাপন করলে বাংলা খিস্তিখেউড়কেও এই উৎসবে শামিল করা উচিত

এখনকার রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে বলতে চাই, এখন দ্বন্দ্ব কেবল হিন্দি ভাষার সঙ্গে। যে ভাষার আধিপত্য কোথাও গিয়ে বাংলাকে অপমান করছে। গায়ের জোরে কোনও ভাষা কারও উপর চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়। ইংরেজির ক্ষেত্রে কখনও সেই ধারণা তৈরি করানো হয়নি আমাদের মধ্যে।

Advertisement

অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৪:১৮
Share:

ভাষা দিবসে লিখলেন অনিন্দ্য

শহর কলকাতার উত্তরে বড় হয়েছি। স্কটিশ চার্চে পড়াশোনা। বাংলা মাধ্যম। পড়েছি বাংলায়। লিখেছি বাংলায়। ভেবেওছি বাংলায়। আজও ইংরেজিতে ভেবে বাংলায় অনুবাদ করি না। কেবলই বাংলায় ভাবি। দরকারে ইংরেজিতে অনুবাদ করে কথা বলি বা লিখি। আজ সেই অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় যদি এটুকু গর্ব না করে, তা হলে হয়?

Advertisement

ভাষার স্বাধীনতার দিন আজ। তাই মনে পড়ছে, ইংরেজি মাধ্যমে পড়া ছাত্রছাত্রীর অভিভাবকদের হেয় করা চোখে চোখ পড়লেও বাংলায় বসে খিস্তিখেউড় করা বা বাংলা গদ্য পড়ার মধ্যে মস্ত এক স্বাধীনতা ছিল। তা তুলনা করা যায় না।

আজ যদি বাংলা ভাষার প্রত্যেকটি শব্দকে উদ্‌যাপন করি, তা হলে একই ভাবে বাংলা খিস্তিখেউড়কেও এই উৎসবে শামিল করা উচিত। চার দেওয়ালের মধ্যে বসে বন্ধুরা খিস্তিখেউড় দিয়েই কথা বলি। তাতে মনের অভিব্যক্তি প্রকাশে কখনও কখনও সুবিধা হয়। গাড়ি চালানোর সময়ে কোনও গাড়ি চেপে দিলে জানলার কাঁচ খুলে প্রথমে খিস্তিখেউড় দিয়েই শুরু হয়। যদিও হ্যাঁ, অভিনেতা হওয়ার পরে পরিচিত মুখ বলে রাস্তাঘাটে শব্দ চয়নে সাবধান হতেই হয়। কিন্তু মনের মধ্যে সেই সব তথাকথিত অশ্লীল শব্দগুলিই ঘোরাফেরা করে।

Advertisement

ছোটবেলায় টিউশন ক্লাসে বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রী ইংরেজি ভাষায় পড়াশোনা করত বলে শিক্ষক-শিক্ষিকাও ইংরেজিতে পড়াতেন। অসুবিধা হত। কিন্তু আমরা যে ভাবে এবং যে বয়সে অমিত্রাক্ষর ছন্দ বুঝেছি, তা তো তারা অনেক পরে বুঝেছে। সেই গর্ব ছিলই।

ইংরেজি ভাষা জানা দরকার। সে কথা ঠিক। তাই উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত বাংলায় পড়াশোনা করার পরে ইংরেজি খবরের কাগজ বা বই পড়ে পড়ে নিজেকে তৈরি করেছি। তাই ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখার পরে আর সকলের সঙ্গে তাল মেলাতে অসুবিধা হয়নি। এখন ইংরেজি ভাষার সঙ্গে আর দ্বন্দ্ব নেই।

কিন্তু এখনকার রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে বলতে চাই, দ্বন্দ্ব কেবল হিন্দি ভাষার সঙ্গে। যে ভাষার আধিপত্য কোথাও গিয়ে বাংলাকে অপমান করছে। গায়ের জোরে কোনও ভাষা কারও উপর চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়। ইংরেজির ক্ষেত্রে কখনও সেই ধারণা তৈরি করানো হয়নি আমাদের। কিন্তু হিন্দি ভাষা প্রয়োগের জন্য চোখরাঙানি মেনে নেওয়া যাবে না। কেবল হিন্দি কেন? ঊর্দু, ওড়িয়া, ইংরেজি, সমস্ত ভাষার ক্ষেত্রেই যেন সহিষ্ণুতা থেকে যায় চিরকাল। তবেই তো ভারতবর্ষ। সমস্ত ভাষার সহাবস্থান। তাই হিন্দি ভাষার বিরুদ্ধে এখন লড়াই জারি থাকবে। বাংলা ভাষার জয়গান গাইতে গাইতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন