মেহের আলির মন ভাল নেই। মানসিক হাসপাতালে দমবন্ধ হয়ে আসছে তার। সে বেরিয়ে পড়ল। রাস্তায় দেখা এক সুন্দরীর সঙ্গে—হিরণ গল্প লিখেছেন তাঁর আগামী ছবি ‘মেহের আলি’র জন্য। মেহের আলি ছবিটির কথা ইতিমধ্যে জানা গেলেও এই প্রথম হিরণ যে ছবি প্রযোজনা করছেন এবং গানও গাইছেন, সেটা কারও জানা ছিল না।
‘জামাই ৪২০’, ‘লে হালুয়া লে’র এইট প্যাকস-এর সেই হিরণ আর যেন নেই! শুকনো মুখ, খাওয়া-দাওয়ায় বাধ্যবাধকতা, চরিত্রের জন্য তাঁকে কমাতে হয়েছে দশ কিলো ওজন।
‘‘আসলে মেহের আলি একজন মানসিক বিকারগ্রস্ত মানুষ। এই চরিত্রটা করার জন্য গত ছ’মাস জিমে যাইনি। এইট প্যাকসের ফিজিক নিয়ে তো আর এই ধরনের চরিত্র করা যায় না! মেন্টাল অ্যাসাইলাম ঘুরে ঘুরে অবজার্ভ করেছি সেখানকার মানুষদের। তাঁরা কী ভাবে কথা বলেন, কী ভাবে রিঅ্যাক্ট করেন,’’ বলছিলেন হিরণ। একটানা কমার্শিয়াল ছবি করলেও সাহিত্যের ছাত্র হিসেবে ইচ্ছে ছিল অন্য রকম ছবি করার, গল্প লেখার। তার জন্যই মেহের আলি।
কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘জ্যাকপট’ করতে করতে মনে হয়েছিল অন্য ধারার গল্প লেখার কথা। সেখান থেকেই শুরু। তার পর কিটস-এর ‘ওড টু নাইটিঙ্গল’-এর ভাবনা নিয়ে রোম্যান্টিক থ্রিলার ‘মেহের আলি’ নিজেই প্রযোজনা করছেন হিরণ। শুধু নিজের গল্প বা প্রযোজনাই নয়, এ ছবিতে গান গাওয়ার কথাও তাঁর।
পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদ আর কলকাতায় শ্যুট হবে ‘মেহের আলি’। ‘ছায়ামানুষ’ ছবির পরিচালক অরিন্দম দে হিরণের সঙ্গে গত ছ’মাস ধরে ছবির গল্প নিয়ে কাজ করে চলেছেন। হিরণ ছাড়াও এই ছবিতে আছেন পায়েল সরকার, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, সোহাগ সেন। অভিনয়-প্রযোজনা-গান এত কিছু সামলাবেন কেমন করে? ‘‘এখন মাল্টিটাস্কিংয়ের যুগ। তবে অরিন্দমদা, সুতপা সরকার আর আমি একটা টিম হয়ে কাজ করছি।’’
বাংলা ছবিতে সাইকো-থ্রিলারে অভিনয় করতে পেরে বেশ উত্তেজিত পায়েল। ‘‘‘ব্যোমকেশ’, ‘ফেলুদা’, ‘...শবর’-এর মতো ছবি এত সফল কারণ মানুষ রহস্যের ছবি দেখতেই ভালবাসে। ‘মেহের আলি’তে রহস্য থাকলেও তা শুধু কোনও গোয়েন্দাকে ঘিরে নয়। এই বিষয়টা আমার কাছে খুব এক্সাইটিং লেগেছিল,’’ বললেন পায়েল।
কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল এই মেহের আলি ‘ক্ষুধিত পাষাণ’-এর মেহের আলি। যদিও হিরণ সাফ জানাচ্ছেন সেটা পুরোপুরি ঠিক নয়। এই মেহের আলি আজকের। তবে ‘ক্ষুধিত পাষাণ’-এর কিছু মুহূর্ত নতুন আঙ্গিকে ধরা পড়বে এই রোম্যান্টিক থ্রিলারে। আপাতত নায়ক, নায়িকা, পরিচালক কেউ এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে চাইলেন না।