The Ashes 2025-26

ভারতের মতোই ইংল্যান্ডের টেস্ট দলেও ডামাডোল! ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ঢোঁক গিললেন ম্যাকালাম, অধিনায়ক স্টোকসের সুরে সুর মেলালেন কোচ

ব্রিসবেনে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের পর ভিন্ন সুর শোনা গিয়েছিল কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালাম ও অধিনায়ক বেন স্টোকসের গলায়। যদিও ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সুর বদলেছেন কোচ।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ২২:৩৫
Share:

ইংল্যান্ডের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালাম (বাঁ দিকে) ও টেস্ট অধিনায়ক বেন স্টোকস। ছবি: এক্স।

হারের অজুহাত দিতে গিয়ে কোচ ও অধিনায়ক দু’রকম কথা বলছেন। আবার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিজের সুর বদলাচ্ছেন কোচ। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, ইংল্যান্ডের টেস্ট দলের সাজঘরের পরিবেশ ভাল না। ঠিক যেমনটা হয়েছে ভারতের। দেশের মাটিতে দুই সিরিজ়ে চুনকামের পর দায় ঠেলাঠেলির খেলা চলছে। সাদা বলের সিরিজ়কে ঢাল করছেন ভারতের কোচ গৌতম গম্ভীর। তেমনটাই প্রয়োজনের তুলনায় বেশি প্রস্তুতিকে অজুহাত হিসাবে দেখিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালাম। কিন্তু অধিনায়ক বেন স্টোকসের বক্তব্যের পর সুর বদলেছেন ম্যাকালাম।

Advertisement

অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দু’টি টেস্টেই দাঁড়াতে পারেনি ইংল্যান্ড। প্রথম টেস্টে দু’দিনে হেরেছে তারা। পরের টেস্টে একটু লড়লেও ছবিটা বদলায়নি। দিন-রাতের টেস্টে হেরে সিরিজ়ে ০-২ পিছিয়ে ইংল্যান্ড। আর একটি টেস্ট হারলেই সিরিজ় খোয়াতে হবে। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট তালিকায় ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে ইংল্যান্ড। যা পরিস্থিতি, তাতে ফাইনাল খেলা কঠিন। কোচ ম্যাকালামের ‘বাজ়বল’-এর সমালোচনা শুরু করেছেন ইংল্যান্ডের প্রাক্তন ক্রিকেটারেরা। কিন্তু ম্যাকালাম নিজের মতোই রয়েছেন। চাপ নিচ্ছেন না। হারের বিভিন্ন রকমের অজুহাত দিচ্ছেন।

অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে ইংল্যান্ডের প্রস্তুতি নিয়ে বার বার সমালোচনা চলছে। পার্‌থে প্রথম টেস্টের আগে লিলাক হিলে নিজেদের মধ্যেই তিন দিনের একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছিল তারা। পার্‌থের সঙ্গে সেই উইকেটের কোনও মিল ছিল না। পরে ব্রিসবেনে দিন-রাতের টেস্টের আগে ক্যানবেরায় প্রধানমন্ত্রী একাদশের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেনি ইংল্যান্ড। বদলে ব্রিসবেনে পাঁচ দিন ধরে প্রস্তুতি সেরেছে তারা। ইংল্যান্ডের এই দলের তিন ক্রিকেটার এর আগে কোনও দিন গোলাপি বলে খেলেননি। তার পরেও প্রস্তুতি ম্যাচ তারা খেলেনি।

Advertisement

ব্রিসবেনে হেরে অবশ্য পাঁচ দিনের প্রস্তুতিকেই দায়ী করেছেন ম্যাকালাম। তিনি বলেন, “আমাদের প্রস্তুতি বেশিই হয়ে গিয়েছে। সে দিকে আমাদের খেয়াল রাখা উচিত ছিল। কখনও কখনও বেশি প্রস্তুতিও হিতে বিপরীত হয়ে যায়। এই ম্যাচে সেটাই হয়েছে।” ম্যাকালামের মতে, শারীরিক ও মানসিক ভাবে চনমনে থাকাটাও গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, “আমরা এত অনুশীলন করেছি যে, ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। আমাদের মানসিক ও শারীরিক ভাবে চনমনে থাকা উচিত ছিল। সেটা পরের ম্যাচ থেকে মাথায় রাখতে হবে। আজ রাতে মদ্যপান করব। তার পর ভাবব, পরের ম্যাচের আগে কী ভাবে প্রস্তুতি নেব।”

স্টোকস অবশ্য তেমনটা মনে করেন না। তাঁর মতে, অস্ট্রেলিয়ার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সমস্যা হয়েছে তাঁদের। স্টোকসের কথা থেকে স্পষ্ট, তাঁদের প্রস্তুতি ভাল ভাবে হয়নি। তাই হারতে হয়েছে। স্টোকস পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে, তাঁর দলে দুর্বল ক্রিকেটারদের কোনও জায়গা নেই। ম্যাচ হেরে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বলেন, “আমি যত দিন অধিনায়ক আছি, তত দিন এই দলে দুর্বল ক্রিকেটারদের জায়গা নেই। এই হারে আমি হতাশ। কঠিন পরিস্থিতি সামলাতে পারিনি। চাপ সামলাতে পারিনি। তা হলে কী ভাবে জিতব? আমাদের আরও সাহসী ক্রিকেট খেলতে হবে।”

স্টোকস বিশ্বাস করেন, তাঁর দলের ক্ষমতা রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট জেতার। কিন্তু পারছেন না তাঁরা। স্টোকস বলেন, “গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আমাদের হাত থেকে খেলা বেরিয়ে গিয়েছে। আমাদের দলে যা প্রতিভা, তার পর এই ফলে আরও হতাশ লাগছে। আমাদের মানসিক ভাবে আরও শক্তিশালী হতে হবে। আরও লড়াই করতে হবে।”

স্টোকসের এই মন্তব্যের পরেই সুর বদলেছেন ম্যাকালাম। বিবিসি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্টোকসের বক্তব্য নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন ম্যাকালাম। তখনই সুর বদলেছেন ইংল্যান্ডের কোচ। তিনি বলেন, “আমিও তো সেটাই (স্টোকসের বক্তব্য) বলতে চেয়েছি। আমরা এমন একটা দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলি, যেখানে নিজের সেরা দেওয়া ছাড়া উপায় নেই।” ম্যাকালাম আরও বলেন, “অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে এসে নিজের উপর বিশ্বাস হারালে চলবে না। এই দেশে এসে এক ঘুষিতে চোয়াল ভেঙে গেলে চলবে না। আরও শক্তিশালী হতে হবে। মার খেয়ে উঠে দাঁড়াতে হবে। তার জন্য ভাল ভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। পাল্টা মার দিতে হবে। আমরা সেটাই করার চেষ্টা করব।”

২৪ ঘণ্টা আগে যে কোচ অতিরিক্ত প্রস্তুতির কথা বলেছিলেন, সেই কোচই এখন ভাল ভাবে প্রস্তুতির কথা বলছেন। তা হলে কোনটা বিশ্বাস করছেন ম্যাকালাম। নাকি স্টোকসের সঙ্গে খুব একটা ভাল সম্পর্ক নেই তাঁর। কিন্তু যাতে সিরিজ়ের মাঝে সেটা প্রকাশ না হয়ে যায়, তাই কথা ঘুরিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছেন তিনি। প্রশ্ন উঠছে। তৃতীয় টেস্টে ফিরতে না পারলে এই প্রশ্ন কিন্তু আরও জোরাল হবে। তখন কী বলবেন ম্যাকালাম? কী অজুহাত দেবেন ইংল্যান্ডের কোচ?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement