অনিন্দিতা বসু আর পল্লব মুখোপাধ্যায় সিরিজ় ‘নিকষ ছায়া’য়। ফাইল চিত্র।
রাত দেড়টার নলবন। চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। মশা কানের কাছে গান শোনাচ্ছে। ঠান্ডায় কাঁপতে কাঁপতে আবছায়া কেউ এসে বসল পরিচালক সায়ন্তন ঘোষালের পাশে। তিনি ততটা খেয়ালও করেননি। হঠাৎ খোনা গলায় কেউ তাঁকে বলল, “আপনার ‘ইন্দু ১’ দেখেছি। ‘ম্যাডাম সেনগুপ্ত’ দেখছি!” কে বলল এ কথা?
পাশের দিকে তাকাতেই কথা বন্ধ পরিচালকের। রাতবিরেতে পিশাচের পাল্লায় পড়লেন নাকি তিনি! কী উত্তর দেবেন তাঁকে?
কথা ফুরোতেই পিশাচ উধাও। পর মুহূর্তেই তাকে দেখা গিয়েছে ঘন জঙ্গলে। এক মহিলাকে তাড়া করে ছুটছে! কলকাতার বুকে এ সব অলৌকিক ঘটনা ঘটছে কবে থেকে?
পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের সিরিজ় ‘নিকষ ছায়া’র পরিচালনা এ বছর সায়ন্তনের হাতে। তাঁর হাত ধরে চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী, কাঞ্চন মল্লিক, গৌরব চক্রবর্তী, অনিন্দিতা বসু, সুরঙ্গনা বন্দ্যোপাধ্যায় ফিরে এসেছেন। পিশাচ ‘গেনু’ হয়ে ফিরেছেন পল্লব মুখোপাধ্যায়ও। ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, তিনিই প্রস্থেটিক রূপটান নিয়ে সায়ন্তনের পাশে এসে বসতেই পরিচালকের ‘বোলতি বন্ধ’!
সাজে খুব যে হেরফের হয়েছে, তা কিন্তু নয়। সেই নিষ্পলক চোখ। ভ্রু-র বালাই নেই। রূপটানে দু’কান কাটা! সারা শরীরের চামড়া গলে পড়ছে। দাঁত দেখে বোধ করি করাত (কাঠ চেরার যন্ত্র) লজ্জা পাবে! ‘গেনু’ একই আছে। তবে এই সিরিজ়ে সে নাকি আরও ভয়ঙ্কর। ফাইট মাস্টারের থেকে তাই অ্যাকশন বুঝতে হচ্ছে চরিত্রাভিনেতা পল্লবকে। শোনা গিয়েছে, এ সব দেখে অভিনেতা নাকি চমৎকৃত।
শুটিং শুরু হয়েছে সম্ভবত ১০ অথবা ১১ নভেম্বর থেকে। শেষ হতে হতে মাসকাবার। তাই আনন্দবাজার ডট কম কথা বলার চেষ্টা করলেও সাড়া মেলেনি কারও।
ভাদুড়িমশাই চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী। ছবি: ফাইল চিত্র।
তবে গত বার যাঁরা ছিলেন, তাঁরাই আছেন এ বারের সিরিজ়েও, এ কথা জানা গিয়েছে। যেমন জানা গিয়েছে, পল্লবের রোজ তিন ঘণ্টা ধরে রূপটান। নকল দাঁত পরা। চোখে লেন্স। একটা সময়ের পরে ভীষণ কড়কড় করতে শুরু করে। ঝাপসা দেখেন অভিনেতা। রূপটানের আগে ভরপেট খেয়ে নেন। কারণ, পরে তো আর খেতে পারবেন না। রূপটান সম্পূর্ণ হওয়ার পরে শুটিংয়ের জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। লেন্সের কারণে দেখতে অসুবিধা হয় বলে, কখনও সহকারী পরিচালক, কখনও সহ-অভিনেতা আগলে রাখেন তাঁকে।
এ বছর নলবন-সহ কলকাতার নানা জায়গায় শুটিং। ঠান্ডার চোটে অভিনেতারা নাকি নিজেদের মেকআপ ভ্যানের দরজা-জানলা বন্ধ করে বসে। ফলে, গত বারের মতো আড্ডা জমেনি।
আগের সিরিজ় দেখিয়েছে, পিঁড়িতে বসেও ভেস্তে গিয়েছে গেনুর বিয়ে। তাই নিয়ে কী আক্ষেপ তার! এ বার কি বিয়ে হবে পিশাচের? শোনা কথা, এ বারেও নাকি সম্ভাবনা নেই। বেচারা এই কারণেই নাকি আরও ভয়ঙ্কর। গত সিরিজ় শেষ হয়েছে সুরঙ্গনার অপহরণ দিয়ে। তাকে ধরে নিয়ে গিয়েছে গেনু। এ বার কার পালা? শীতেই কি মুক্তি পাবে সিরিজ়? কিচ্ছু জানার উপায় নেই। তবে রহস্য-রোমাঞ্চ ঘরানার ছবিতে পোড় খাওয়া সায়ন্তন নাকি শৌভিক চক্রবর্তীর গল্প হুবহু অনুসরণ করেই এগোচ্ছেন। ফলে, গা-ছমছমে ব্যাপার যে এ বারেও পুরোমাত্রায় থাকবে, তা নিয়ে দ্বিমত নেই কারও।