Jeetu Kamal-Ditipriya Roy Conflict

ব্যক্তিগত কলহ প্রকাশ্যে, কালিমালিপ্ত হচ্ছে টেলিপাড়া! জীতু-দিতিপ্রিয়ার কোন্দল নিয়ে টলিউড

প্রত্যেকে চাইছেন মিটমাট হয়ে যাক। প্রত্যেকের মত, পৃথিবীতে এমন কিছু নেই যার সমাধানসূত্র মেলে না।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৫ ০৯:০৩
Share:

জীতু কমল-দিতিপ্রিয়া রায়ের কলহ নিয়ে কী বলছে টেলিপাড়া? ফাইল চিত্র।

জীতু কমল-দিতিপ্রিয়া রায়ের কোন্দল উপলক্ষ মাত্র। আদতে প্রকাশ্যে পেশাদুনিয়ার কালো দিক। সেই দিক, যেখানে প্রতি মুহূর্তে নিজেকে প্রমাণ করার তাগিদ। সহকর্মীদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। তার জেরে পারস্পরিক অসূয়া।

Advertisement

যে কোনও প্রযুক্তিনির্ভর পেশাদুনিয়ায় এই ছবি অতি পরিচিত। প্রতিযোগিতা বা প্রতিদ্বন্দ্বিতার জেরে পারস্পরিক কলহ বা মনোমালিন্যও ঘটে অহরহ। কিন্তু তাতে বিনোদনদুনিয়ার মতো ‘গ্ল্যামার’-এর ছটা নেই। ফলে, সেই খবর কিস্‌সা হয়ে বিকোয় না সংবাদমাধ্যমে। চায়ের টেবিলে তুফান তোলে না। মাথাব্যথাও নেই কারও।

জীতু-দিতিপ্রিয়ার ঘটনা মুখে মুখে ফিরছে কারণ, বিষয়টি বিনোদনদুনিয়ার। এমনও কথা টেলিপাড়ার অন্দরে ঘুরছে, কোন্দলের কারণে নাকি বন্ধ হয়ে যেতে পারে ধারাবাহিক। প্রযোজনা সংস্থা বিষয়টি নিয়ে নাকি বীতশ্রদ্ধ। একদিন নয়, একবার নয়— বারেবারে ঘটছে একই ঘটনা। কী বলছেন বিনোদনদুনিয়ার সঙ্গে যুক্ত বাকি খ্যাতনামীরা? জানতে আনন্দবাজার ডট কম যোগাযোগ করেছিল কাহিনিকার ও চিত্রনাট্যকার লীনা গঙ্গোপাধ্যায়, অভিনেত্রী স্বস্তিকা দত্ত, অভিনেতা ইন্দ্রজিৎ বসু, ধারাবাহিক ‘গৃহপ্রবেশ’-এর পরিচালক অমিত দাস, কেশসজ্জাশিল্পী হেমা মুন্সির সঙ্গে।

Advertisement

টেলিপাড়ার অর্ন্তকলহ নিয়ে লীনা গঙ্গোপাধ্যায়, স্বস্তিকা দত্ত। ছবি: ফেসবুক।

এ রকম ঘটনা টলিউডে আকছার ঘটে, জানিয়েছেন তাঁরা। এ-ও জানিয়েছেন, মিটমাটও হয়ে যায়। সেই জায়গা থেকেই প্রত্যেকে অন্তর থেকে চাইছেন, মিটে যাক সব। প্রত্যেকের মত, পৃথিবীতে এমন কোনও সমস্যা নেই যার সমাধানসূত্র মেলে না।

লীনা জানেন না, প্রকৃত ঘটনা কী। কিছু সমস্যা আছে, সমাজমাধ্যম বা সংবাদমাধ্যমের মারফত জেনেছেন। দু’জন অভিনেতা মিলেমিশে কাজ করবেন, সেটাই কাম্য। তাঁর প্রযোজিত ধারাবাহিকে এ রকম কিছু এখনও ঘটেনি। ফলে, বুঝতে পারছেন না, এ ক্ষেত্রে কী বলা উচিত। “সমস্যা সর্বত্র। যে কোনও পেশাতেই কলহের ছাপ কাজের উপরে পড়ে। এ ক্ষেত্রেও সেটাই হচ্ছে। ধারাবাহিকের শুটিংয়ের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। কাজে ছাপ পড়ছে।” তাই যাঁরা ধারাবাহিকের দায়িত্বে আছেন, যেমন, চ্যানেল কর্তৃপক্ষ বা প্রযোজনা সংস্থার কর্ণধার, বিষয়টি নিয়ে তাঁদের হস্তক্ষেপ করার অনুরোধ জানিয়েছেন লীনা। তাঁর আশা, “নিশ্চয়ই তাঁরা সেই চেষ্টা করছেন। প্রয়োজনে সবাই মিলে আলোচনার মাধ্যমেও মিটিয়ে নিতে পারেন।” জীতু বা দিতিপ্রিয়া এখনও সরাসরি কমিশনের কাছে বা অন্যত্র অভিযোগ জানাননি। লীনার কথায়, “মহিলা কমিশনে অভিনেত্রী অভিযোগ জানালে বিষয়টি নিয়ে তখন যা বলার বলব।”

প্রায় একই সুর শোনা গিয়েছে স্বস্তিকার কথায়। আট বছর পরে তিনি স্নেহাশিস চক্রবর্তীর নতুন ধারাবাহিক ‘বিদ্যা ব্যানার্জি’ দিয়ে ছোটপর্দায় ফিরলেন। তিনি সাফ জানিয়েছেন, “ধারাবাহিক মানে শুধুই নায়ক-নায়িকা, কিছু সহ-অভিনেতা আর পরিচালক নয়। অনেক টেকনিশিয়ান এর সঙ্গে জড়িত। সকলের নিয়মিত উপার্জনের মাধ্যম এটি। তাই ধারাবাহিক বন্ধ মানে প্রত্যেকের রুজি-রুটি বন্ধ।” সেই জায়গা থেকেই ‘বিদ্যা ব্যানার্জি’র অনুরোধ, মানুষ চাইলে সব পারে। এমন কোনও সমস্যা নেই যার সমাধানসূত্র পাওয়া যাবে না। সেই পথেই যেন হাঁটেন সবাই।

রাজ চক্রবর্তীর প্রযোজনায় স্টার জলসায় দেখানো হচ্ছে ধারাবাহিক ‘গৃহপ্রবেশ’। পরিচালক অমিত শুটের ফাঁকে বললেন, “সবিস্তার জানি না। কানাঘুষো আমিও শুনেছি।” তিনি অভিযোগের আঙুল তুলেছেন সমাজমাধ্যমের প্রতি। জানিয়েছেন, এই মাধ্যম ‘ঘরের ঘটনা’ সামনে এনে দিচ্ছে। “জীতু-দিতিপ্রিয়ার কলহ সমাজমাধ্যমে বিনোদনদুনিয়ার অন্দরকাহিনি প্রকাশ্যে এনে দিয়েছে। এতে টেলিপাড়া কালিমালিপ্ত হচ্ছে। ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বিনোদনদুনিয়ার।” তাঁর মতে, ছোটপর্দায় কতটুকুই বা ঘনিষ্ঠ দৃশ্য দেখানো হয়! সেটুকুও না করার মতো সমস্যা তৈরি হলে সত্যিই বিপদ।

জীতু-দিতিপ্রিয়ার কলহ নিয়ে হেমা মুন্সি, ইন্দ্রজিৎ বসু, অমিত দাস। ছবি: ফেসবুক।

ইন্দ্রজিৎ বসু। রেটিং চার্টে প্রথম স্থানে থাকা ধারাবাহিক ‘আজকের পরশুরাম’-এর নায়ক। তিনিও কথা বলে মিটমাট করার পক্ষে। বয়সের পার্থক্যই কি নায়ক-নায়িকার মতান্তরের কারণ? প্রশ্ন ছিল তাঁর কাছে। নায়কের যুক্তি, “ধারাবাহিক ‘ধ্রুবতারা’য় আমার আর নায়িকার মধ্যেও বয়সের ফারাক ছিল। কোনও সমস্যা হয়নি।” ইন্দ্রজিতের মতে, একসঙ্গে অনেকটা সময় কাটালে মনান্তর বা মতান্তর হয়। যেমন, বাসন-কোসনে ঠোকাঠুকি লাগে।

দিতিপ্রিয়া তখন অনেক ছোট। মাত্র পাঁচ। তখন থেকে অভিনয়ে। তখন থেকে তাঁকে চেনেন কেশসজ্জাশিল্পী হেমা। জীতু-দিতিপ্রিয়ার ঘটনা তাই তাঁকে কষ্ট দিচ্ছে। “ওর ছোট্টবেলা থেকে ওকে চিনি। খুব লক্ষ্মী মেয়ে।” দিতিপ্রিয়ার মায়ের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা হেমার। বলেছেন, “ওঁরা খুব ঘরোয়া। কোনও অহঙ্কার নেই।” হেমার আরও মনখারাপ, “প্রত্যেক দিন সমাজমাধ্যমে চোখ রাখলেই ওদের সমস্যার কথা। দেখে বা জেনে ভাল লাগছে না। টলিউডের পরিসর খুবই ছোট। সবাই সেখানে মিলেমিশে কাজ করবেন, এটাই কাম্য।” সেই ভাবনায় যেন ভাটার টান, উপলব্ধি কেশসজ্জাশিল্পীর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement