Birthday Of Biswajit Chatterjee

বিশ্বজিতের প্রথম হিন্দি ছবি হিট, উত্তমকুমারের প্রথম ছবি হিট হয়নি, তাই মুম্বইয়ে বিশু সফল

“যেমন দেখতে মিষ্টি, তেমনই স্বভাবে মিষ্টি। হয়তো বেশি ছবি ওঁর সঙ্গে করা হয়নি। কিন্তু এখনও কলকাতায় দেখা হলে এগিয়ে এসে কথা বলেন।”

Advertisement

সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:১৫
Share:

সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিচারণ বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে। ফাইল চিত্র।

বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়। ঝকঝকে চেহারার এক নায়ক। যেমন দেখতে মিষ্টি, তেমনই স্বভাবেও। সেটে সকলের সঙ্গে হেসে কথা বলতেন। বেশি ছবি করিনি আমরা। মাত্র চারটি ছবি করেছি, ‘দুই ভাই’, ‘বধূ’, ‘নবদিগন্ত’ আর ‘ডাক হরকরা’। সেই স্মৃতি আজও মনে রেখে দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

খুব মিশুকে। এখনও কলকাতায় দেখা হলে এগিয়ে এসে কথা বলেন। তখনও তা-ই। একই সঙ্গে বেশ রোম্যান্টিক, চার্মিং। অর্থাৎ, সব মিলিয়ে ভাললাগার মতোই ব্যক্তিত্ব। কলকাতায় তখন বিশ্বজিতের নামডাক হয়েছে। সন্ধ্যা রায়ের বিপরীতে বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করে সাড়া ফেলে দিয়েছেন। উত্তমকুমারের খুব প্রিয়। বাস্তবেও ওঁরা যেন ‘দুই ভাই’। দুই চট্টোপাধ্যায়ের আড্ডা, আনাগোনা, অন্তরঙ্গতার অনেকটাই নিজের চোখে দেখা। আবার অভিনেতা হিসাবেও খুবই ভাল। যত ক্ষণ সেটে থাকতেন, মাতিয়ে রাখতেন। কিন্তু কখনও সীমা পার করতেন না।

বাংলায় নামডাক হতে না হতেই বম্বে (অধুনা মুম্বই) থেকে ছবির অফার পেলেন বিশ্বজিৎ। আমরা অনেক সময় সংক্ষেপে ওঁকে ‘বিশু’ বলতাম। প্রথম হিন্দি ছবি ‘বিশ সাল বাদ’। প্রথম ছবিতেই হিট। বিশ্বজিৎ বম্বের হয়ে গেলেন! টানা কয়েক বছর সেখানেই থেকে গেলেন। একের পর এক ছবি করছেন। প্রায় প্রত্যেকটি ছবি হিট। সেই সময়েও বাংলা বিনোদনদুনিয়ার অনেক খ্যাতনামী বম্বেতে সফল হয়েছিলেন। বিশ্বজিৎ তাঁদের মধ্যে অন্যতম। ওখানকার একটি বিষয় খেয়াল করেছি, প্রথম ছবি হিট মানেই নায়কের ঝুলিতে একের পর এক ছবি। উত্তমকুমারের ক্ষেত্রে যেটা হয়নি। ওঁর প্রযোজিত এবং অভিনীত হিন্দি ‘অগ্নিপরীক্ষা’ বক্সঅফিসে সাড়া ফেলতে পারেনি। ফলে, বিশ্বজিৎ বম্বেতে নিজেকে গুছিয়ে নিতে পারলেও উত্তমকুমারের পক্ষে সেটা হয়নি।

Advertisement

অনেকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন, বিশ্বজিতের মতো উত্তমকুমারও যদি টানা কয়েক বছর সেখানে থাকতেন তা হলে কি হিন্দি ছবিতেও সফল হতেন?

আমি বলব, তা হলে বাংলা ‘মহানায়ক’কে মিস করত। যেমন আমরা বিশ্বজিৎকে করেছি। বাংলায় ওঁর মতো অভিনেতাকে সেই সময়ে আরও বেশি করে দরকার ছিল। পাশাপাশি গর্বও বোধ করি, বলিউডে উনি বাঙালির মুখ উজ্জ্বল করেছেন। বিশ্বজিতের আতিথেয়তার কথা না বললে বড্ড অন্যায় হয়ে যাবে। আমি কয়েক বার মুম্বইয়ে গিয়েছিলাম। আমি গিয়েছি, জানামাত্র বিশ্বজিৎ ওঁর বাড়িতে নিয়ে গেলেন। কত রকম খাবার খাইয়েছিলেন। যত দিন ছিলাম, নিয়মিত খোঁজ নিতেন। শুট শেষ হলেই আড্ডা দিতে চলে আসতেন।

জানি না, আজ কী ভাবে দিনটা কাটাবেন বিশ্বজিৎ। নিশ্চয়ই এখনও আগের মতোই মিশুকে, ছটফটে, প্রাণবন্ত রয়েছেন। সবার সঙ্গে হইহই করছেন। আসলে সেই আমলের মানুষেরা একই রয়ে গেলেন। বদল হল না তাঁদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement