তারাপীঠের সাধকদের সঙ্গে দেখা হয়েছে সব্যসাচীর। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
দীর্ঘ দিন বামাখ্যাপা ও রামপ্রসাদ সেনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন সব্যসাচী চৌধুরী। ছোটপর্দার পরে বড়পর্দাতেও বামাখ্যাপার চরিত্রে অভিনয় করছেন তিনি। এই চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে তারাপীঠের শ্মশানের অঘোরীদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ হয়েছে তাঁর। সেই অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন সব্যসাচী।
বড়পর্দায় বামাখ্যাপা নিয়ে আসছেন পরিচালক সায়ন্তন ঘোষাল। চিত্রনাট্য লিখছেন সব্যসাচী নিজেই। তাই বাস্তবের সাধকদের সঙ্গে কথাও বলেছেন তিনি। তাঁদের জীবনযাপন, আচরণ সব কিছুই লক্ষ করেছেন। তারাপীঠে সব্যসাচী চেনা মুখ। তাই তথ্য সংগ্রহে সব রকমের সাহায্যও পেয়েছেন তিনি। সব্যসাচীর কথায়, “তারাপীঠে সকলেই আমাকে চেনেন। সকলেই খুব ভালবাসেন। মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও পরিচিতি রয়েছে। বামদেবের দুটি বাড়ি রয়েছে সেখানে। যখনই যাই, ওঁদের বাড়িতে গিয়েও দেখা করে আসি। ফোনেও যোগাযোগ রয়েছে।”
পর্দায় বামাখ্যাপার চরিত্রে অভিনয় করলেও, নিজে ধর্মীয় রীতি পালনে বিশ্বাসী নন সব্যসাচী। তবে সেগুলি জানতে আগ্রহী। যদিও অভিনেতা বিশ্বাস করেন, কোনও এক জাগতিক শক্তির অস্তিত্ব রয়েছে। সাধকদের জীবনযাপন থেকে কি কখনও অনুপ্রাণিত হয়েছেন অভিনেতা? “রীতিতে বিশ্বাসী নই। কিন্তু যেটা নিয়ে কাজ করছি, তা শুধু বইতে পড়ে জানব, এমনটা চাই না। তাই সাধকদের সঙ্গে দেখা করে সবটা জানার চেষ্টা করেছি। তারাপীঠ শ্মশানের সাধু-সন্ন্যাসী ও অঘোরীদের সঙ্গেও দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে। ওঁরাও অনেক গল্প শুনিয়েছেন আমাকে।” অঘোরীদের নিয়ে নানা রকমের লোককথা শোনা যায়। তাঁদের নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে অসংখ্য প্রশ্ন রয়েছে। সব্যসাচীর কী অভিজ্ঞতা? অভিনেতা বলেন, “ওঁদের নিয়ে নানা রহস্যের কথা শোনা যায়। অনেকে ভয়ও পান। কিন্তু ওঁরা বলে থাকেন, ‘শ্মশান খুবই শান্তির জায়গা। এখানে অনেকে বিচরণ করেন। তাঁদের থেকে নানা কিছু জানা যায়।’ এর মধ্যে কতটা সত্য, সেটা আলোচনাসাপেক্ষ বটেই। তবে একটা কথা বলতেই হয়, তারাপীঠ থেকে তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে আমি বহু সাহায্য পেয়েছি । কিন্তু কেউ কখনও টাকাপয়সা লেনদেনের কথা পর্যন্ত বলেননি। ওঁরা শুধুই আমাকে কিছু গল্প বলেছেন। আমি সেগুলি সংগ্রহ করেছি।”
কালীপুজোয় কখনও তারাপীঠ যাওয়া হয়নি সব্যসাচীর। তবে তারাতিথি ও কৌশিকী অমাবস্যায় একাধিক বার তারাপীঠে গিয়েছেন। বামাখ্যাপার আবির্ভাব দিবসেও যান। বাইরে থেকে আসা দর্শনার্থীরা সব্যসাচীকে সামনে দেখে আবেগপ্রবণও হয়ে পড়েন। অভিনেতার কথায়, “বাইরে থেকে আসা মানুষ হয়তো অবাক হন। কিন্তু বামদেবের বাড়ির লোকজন বা মন্দিরের সকলে আমাকে ঘরের ছেলের মতো দেখেন। আমি গেলে, রীতিমতো আদর-আপ্যায়ণ করা হয়।”
স্বভাবে সব্যসাচী মিতভাষী ও শান্ত। এমন চরিত্রে অভিনয় করার প্রভাবেই কি এমন? বাস্তবে কি আধ্যাত্মিক চেতনারও বিকাশ হয়েছে এমন চরিত্রে অভিনয় করে? অভিনেতার স্বীকারোক্তি, “আধ্যাত্মিক চেতনা হয়েছে কি না জানা নেই। তবে বই পড়েছি কিছু, বেশ কিছু বিষয় নতুন করে জেনেছি। জ্ঞানবৃদ্ধি তো হয়েছে বটেই।”