জিয়া খানের মৃত্যু মামলায় মূল অভিযুক্ত সূর্য পাঞ্চোলি।
জিয়া খান মৃত্যু মামলায় অভিনেতা সূর্য পাঞ্চোলির বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে চার্জ গঠনের নির্দেশ দিল মুম্বইয়ের এক আদালত। মামলার পরবর্তী শুনানি ১৪ ফেব্রুয়ারি।
প্রায় ছ’বছর হয়ে গেলেও, এখনও সঠিক কারণ জানা যায়নি জিয়া খানের মৃত্যুর।
ঘটনায় মূল অভিযুক্ত জিয়ার প্রাক্তন বয়ফ্রেন্ড অভিনেতা সূর্য পাঞ্চোলি। মঙ্গলবার মুম্বইয়ের এক আদালত এই মামলায় সূর্যর বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের নির্দেশ দিয়েছে। ২৭ বছরের অভিনেতা সূর্য ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারায় (আত্মহত্যায় প্ররোচনা) অভিযুক্ত।
সূর্যর আইনজীবী প্রশান্ত পাতিল বলেছেন, ‘‘সূর্য এ দিনও নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ফের শুনানি হবে।’’
হিন্দুস্তান টাইমসের খবর অনুযায়ী, আদালতের এই সিদ্ধান্তে খুশি পাঞ্চোলি পরিবার। চার্জ গঠন হওয়ায় ‘আসল লড়াই’ শুরু হল বলে মন্তব্য করে সূর্যর বাবা আদিত্য পাঞ্চোলি বলেন, ‘‘প্রায় সাড়ে চার বছর ধরে এই দিনটার অপেক্ষায় ছিলাম। এ বার আসল লড়াই শুরু হল। সূর্য দোষী হলে অবশ্যই শাস্তি পাবে।’’
২০১৩ সালের ৩ জুন মুম্বইয়ের জুহুতে নিজের বাড়ি থেকেই ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় ‘নিঃশব্দ’, ‘গজনি’র মতো ছবির অভিনেত্রী জিয়া খানের। অভিনেত্রীর মা রাবিয়া খান প্রথম জিয়ার দেহ দেখতে পান।
বলিউড-টলিউড-টেলিউডের হিট খবর জানতে চান? সাপ্তাহিক বিনোদন সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
ঘটনার তদন্ত শুরু করে মু্ম্বই পুলিশ। তদন্তে জিয়া আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করে পুলিশ। কিন্তু জিয়ার মা রাবিয়ার নিয়োগ করা এক ব্রিটিশ ফরেন্সিক এক্সপার্ট দাবি করেন, আত্মহত্যা নয়, জিয়াকে খুন করা হয়েছিল। এর পরই সিবিআই তদন্তের দাবি করেন রাবিয়া।
জিয়ার আত্মহত্যার ঘটনায় অভিযোগের তির ছিল তাঁর বয়ফ্রেন্ড এবং অভিনেতা আদিত্য পাঞ্চোলির ছেলে সূর্য পাঞ্চোলির দিকে। তদন্তভার হস্তান্তরিত হওয়ার পর ২০১৫-র ৯ ডিসেম্বর প্রথম চার্জশিট পেশ করে সিবিআই। চার্জশিটে সূর্যের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ আনে সিবিআই।
আরও পড়ুন, পুলিশের কাছে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করলেন জিনাত আমন
আরও পড়ুন, পদ্মাবত বনাম স্বরা: পুরুষতান্ত্রিক মুখ কি বেরিয়ে আসছে বলিউডের
জিয়ার সুইসাইড নোট দেখার পর, প্রাথমিক তদন্তে সিবিআই দাবি করেছিল, জিয়া সন্তানসম্ভবা ছিলেন। এ কথা জানতে পেরে চিকিৎসকের পরামর্শ নেন তাঁরা। গর্ভপাতের জন্য ওষুধ খেয়ে রক্তপাতজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন জিয়া। ভ্রূণ শরীরের বাইরে বেরোতে না পারায় পরিস্থিতি জটিল হয়। সূর্যের ভয় ছিল এই সম্পর্কের কথা জানাজানি হলে শুরু হওয়ার আগেই তাঁর ফিল্মি কেরিয়ারে খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। বাড়িতে নিজেই মৃত ভ্রূণটি বার করে বাথরুমে ফেলে দেন তিনি। এই ঘটনার পরেই মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছিলেন জিয়া। তিন পাতার সুইসাইড নোটে জিয়া লিখেছিলেন,এর পর থেকেই সূর্য তাঁকে এড়িয়ে চলতেন। জিয়ার মা রাবিয়া দাবি করেছেন, এই সময়েই জিয়া জানতে পেরেছিলেন যে তাঁরই এক বান্ধবীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠছে সূর্যের। মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ে, শেষ পর্যন্ত চরম পথ বেছে নেন জিয়া।