মানসী। ছবি: সুদীপ্ত চন্দ।
বেশ কয়েক দিন হল উজবেকিস্তান থেকে অনিকেত চট্টোপাধ্যায়ের ছবি ‘হইচই আনলিমিটেড’-এর আউটডোর শেষ করে ফিরেছেন মানসী সিংহ। সাক্ষাৎকারের অনেকটা জুড়ে ছিল আউটডোরের গল্প। ‘‘অনেক দিন পরে খরাজদা, অপু (শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়), কনি (কনীনিকা), রনি (রজতাভ দত্ত)... পুরনো বন্ধুরা একজোট হয়ে খুব মজা করেছি। এক দিন তৈমুর লংয়ের কবর দেখতে গিয়ে আমরা এত কথা বলছিলাম যে, স্থানীয় এক ব্যক্তি বিরক্ত হয়ে বললেন, ‘এখানে এত কথা বলবেন না, এটা এক জন সাধুব্যক্তির সমাধি।’ অপু সঙ্গে সঙ্গে বলেছিল, ‘আপনাদের কাছে সাধু হতে পারে, কিন্তু আমাদের কাছে ডেকয়েট!’ আমরা তো হেসে খুন,’’ সেই হাসির রেশ নিয়ে বললেন মানসী। এই ছবির প্রযোজক দেবকে কত নম্বর দেবেন? ‘‘অনেক পরিণত, দায়িত্বশীল এখন দেব। আউটডোরে সবার আগে মেকআপ করে রুমটা ছেড়ে দিত।’’
গান্ধার-এর ‘চার দুয়ার’ নাটকে মানসীকে দেখে তরুণ মজুমদার তাঁর ছবি ‘আলো’য় তাঁকে নিয়েছিলেন। সেই প্রথম তাঁর পর্দায় অভিনয়। মাত্র তিন বছর বয়সে নাটকে হাতেখড়ি মানসীর। ‘‘প্রথম নাটকে আমি আমার মায়ের (মণিদীপা রায়) ছেলে হয়েছিলাম। প্রথম দৃশ্য ছিল, আমি ভুল নামতা পড়ব আর আমাকে মারতে মারতে মা নিয়ে যাবে। কিন্তু মঞ্চে উঠে মনে হল, সকলের সামনে ভুল নামতা বলব। মা যদি বকুনি দেয়! তাই ঠিক নামতা বললাম। ব্যস! পুরো গন্ডগোল হয়ে গেল। মা মারতে মারতে নিয়ে গেলেন মঞ্চের বাইরে। ঠিক বলার জন্যও মার খেতে হয়, সে দিন বুঝেছিলাম,’’ গলায় কৌতুক মানসীর। ‘প্রথম প্রতিশ্রুতি’ ও ‘জয় কালী কলকাত্তাওয়ালি’ দুটো ধারাবাহিক ও পরপর সিনেমার কাজ এখন তাঁর হাতে। ধারাবাহিকে একই রকম চরিত্র করতে একঘেয়ে লাগে না? ‘‘আমি তো চাকরি করি। অফিসে যেমন রোজ এক কাজ করতে হয়, আমারও তেমন। তবে কিছুটা হলেও নতুন ধরনের চরিত্র করছি ‘জয় কালী...’তে।’’ এখানে আপনি তোতলা। তোতলার অভিনয় করতে করতে শুনেছি স্বাভাবিক ভাবে কথা বলতে গেলেও তোতলািম এসে যায়! তাই কি? ‘‘আমিও তোতলাই! ছোট থেকেই। এখন অবশ্য অনেকটা কম। কিন্তু রেগে গেলে কথা আটকে যায়।’’
দুই সন্তান, স্বামী, শাশুড়ি নিয়ে ভরা সংসার মানসীর। অভিনয়ের পাশাপাশি আছে তাঁর নিজস্ব বুটিক ও রেস্তরাঁ। এত সব একা হাতে সামলান কী করে? ‘‘সংসার চলে যাচ্ছে। স্বামী দেখে, পরিচারিকা আছে। আমার দুই ছেলেমেয়ে ক্লাস ফাইভে পড়ে। কিন্তু তারা যথেষ্ট স্বাবলম্বী। সকলের চিন্তা তো আমাকে নিয়ে। কখন আমার ভাল লাগবে, কখন খারাপ, কখন হাতে-পায়ে ব্যথা করবে...’’
আরও পড়ুন: ‘আমি তো কোনও দিনই গসিপ বা মসালা দিতে পারি না’
কমেডি চরিত্রের জন্য মানসী জনপ্রিয় হলেও তাঁর ব্যক্তিগত পছন্দ সিরিয়াস চরিত্রে অভিনয় করা। তাঁর স্বপ্নের চরিত্র ‘হাজার চুরাশির মা’-এ মা অর্থাৎ সুজাতা। ভবিষ্যতে তাঁর ইচ্ছে রয়েছে নাটক পরিচালনা করার। চিত্রনাট্যও তৈরি।