Ritabhari's Realisation

যে কোনও দিন অভিনয় ছেড়ে দিতে পারেন ঋতাভরী! কী কারণে এত বড় সিদ্ধান্তের কথা ভাবছেন?

“ছোট্ট মেয়েটা যা যা চেয়েছিল সব পেয়েছে। বরং একটু বেশিই পেয়েছে। এ বার পরিণত ঋতাভরীর নিজেকে গুছিয়ে নেওয়ার পালা।”

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২৫ ১৮:২৮
Share:

ঋতাভরী চক্রবর্তী কি ব্যথা পেয়েছেন? ছবি: ফেসবুক।

ঋতাভরী চক্রবর্তী অতীত হাতড়াচ্ছেন। তখন তিনি কিশোরী। স্কুলে পড়তে পড়তে লাইট-সাউন্ড-ক্যামেরা-অ্যাকশনের দুনিয়ায়। জীবনের অনেক ভাঙাগড়া, ওঠাপড়া পেরিয়ে সেই অভিনেত্রী আজ পরিণতমনস্ক। অনেক ঘাত-প্রতিঘাত তাঁকে বাস্তব চিনিয়েছে। ঋতাভরীর কথায়, “পেশার দুনিয়ায় যত না ঘা খেয়েছি তার চেয়েও বেশি কেঁদেছি ব্যক্তিগত জীবনে।” অভিনয়ের পাশাপাশি কখনও তাঁর প্রেম তাঁকে চর্চায় এনেছে। কখনও ছবির কারণে তাঁর ওজনবৃদ্ধি।

Advertisement

ঋতাভরী হয়তো ভিতরে ভিতরে ভেঙে পড়েছেন। কিন্তু কখনও মচকে যাননি। শক্তি জড়ো করে হাসিমুখে উঠে দাঁড়িয়েছেন। যাঁরা এতটাই শক্ত মনের, তাঁরা তো চট করে অতীত ফিরে দেখেন না! কেন ফেলে আসা ‘আমি’কে আরও এক বার খুঁজলেন তিনি?

প্রশ্ন করতেই আনন্দবাজার ডট কম-এর কাছে বিষয়টি পরিষ্কার করলেন অভিনেত্রী। বললেন, “অনেকেই হয়তো ভাবছেন, বিয়ে করতে চলেছি। তার আগে তাই ফেলে আসা জীবনে চোখ রাখছেন। এ রকম কিন্তু কিছুই নয়।” তিনি এই মুহূর্তে পরিচালক প্রতিম ডি গুপ্তের একটি সিরিজ়ে অভিনয় করছেন। সেখানে তাঁর সহ-অভিনেত্রী সোহিনী সরকার। যাঁর সঙ্গে তাঁর প্রথম কাজ ধারাবাহিক ‘ওগো বধূ সুন্দরী’। এত বছর পরে তাঁরা এক ফ্রেম ভাগ করতেই ঋতাভরীর মনে অতীত দোলা দিয়েছে। তাঁর ভাষায়, “পেশাজীবন, ব্যক্তিজীবনও এর সঙ্গে জড়িত।” তার পর তিনি ভাগ করে নিয়েছেন জীবন শুরুর অভিজ্ঞতা। “প্রথম যখন কাজ শুরু করেছিলাম তখন আমি কিশোরী। তখন আমি মধ্যবিত্ত সংসারের মেয়ে। মানসিকতা বা ধ্যানধারণাও সে রকমই ছিল। পৃথিবী কেমন, কী ভাবে সেখান থেকে নিজেদের প্রয়োজন মেটাব— সে সম্পর্কে অন্য রকম ধারণা ছিল।” বছরের পর বছর কাজ করতে করতে যত পরিণত হয়েছেন ততই তাঁর ভাবনা বদলেছে। যে ঋতাভরীর কাছে সকলের আগে মানবিকতা ছিল, সে বুঝতে শিখেছে, এমনও দুনিয়া থাকতে পারে যেখানে মানবিকতার লেশমাত্র নেই!

Advertisement

ফলে, অনেকের সঙ্গেই মেলেনি তাঁর। ঋতাভরী অকপট, “অনেককে দেখেছি, অনায়াসে অনেক কিছু করতে পেরেছে। আমি সেটা পারিনি।” তিনি কেবল ভয় পেতেন, তাঁর সত্তা বিক্রি হয়ে যাবে না তো! তাঁর বেড়ে ওঠা, মূল্যবোধ— আজীবন সঙ্গী করে সামনে এগিয়ে যেতে পারবেন? এত দ্বিধার মধ্যেই তিনি নিজেকে প্রমাণ করেছেন। তাঁর কথায়, “ঋতাভরী চক্রবর্তী নাম জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কারও কাছে আলাদা করে নিজেকে বোঝাতে হয় না।”

একজন মেয়ের যা যা স্বপ্ন থাকে এই ঋতাভরী সেই সব পূরণ করতে পেরেছেন। বাড়ি, গাড়ি, অর্থ, যশ, নামী পরিচালকদের ছবিতে কাজ, সম্মান— সব পেয়েছেন। যা সেই ছোট মেয়েটির ছিল না। এ বার প্রশ্ন, পরিণত ঋতাভরী কী চান?

নিজেকেই নিজে প্রশ্ন করার পরে নিজেই তার উত্তর দিয়েছেন। অভিনেত্রী বলেছেন, “৩০ বছর পেরোলেই যে কোনও মেয়ে নিজেকে নিজে এই প্রশ্নটাই করে।” তিনি নিজের ভিতর আঁতিপাঁতি করে খুঁজে উপলব্ধি করেছেন, তাঁর আর কোনও কিছুর প্রতিই লিপ্সা নেই। পরিবারকে ভালবাসার পাশাপাশি তিনি এখন নিজেকে ভালবেসে বাঁচেন। তাই নিজের প্রয়োজন সম্পূর্ণ হয়ে গেলে হয়তো যে কোনও দিন অভিনয়ও ছেড়ে দিতে পারেন! কাজের জন্য তিনি আর বাঁচেন না। নিজের জন্য বাঁচতে শিখে গিয়েছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement