ar rahman show kolkata

১৩ বছর পরে শহরে রহমান ও অনুষ্কা, মেসি-কাণ্ডের অভিজ্ঞতা কি আরও আঁটসাঁট করবে শিল্পীদের নিরাপত্তা?

১৩ বছর পরে কলকাতায় পা রাখছেন সুরকার এআর রহমান। অতীতে তামিলনাড়ুতে তাঁর শো-এ পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেছে। কলকাতায় মেসির ঘটনার পরে রহমানের অনুষ্ঠানে কেমন হবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:০৯
Share:

মেসির পর শহরে রহমান ও অনুষ্কার অনুষ্ঠান। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক।

গত ৪৮ ঘণ্টায় কলকাতায় হুলস্থূল। মেসির সফরকে ঘিরে ধুন্ধুমার। ১৪ বছর পরে কলকাতায় পা দেন ফুটবলতারকা লিয়োনেল মেসি। আনন্দঘন মুহূর্ত নিমেষে পরিণত হল কলকাতার এক কালো দিনে। দিনকয়েকের মধ্যেই কলকাতায় আসছেন অস্কারজয়ী সুরকার এআর রহমান। ১১ জানুয়ারি কলকাতায় প্রায় ৫ ঘণ্টার অনুষ্ঠান করবেন তিনি। তার পরেই আবার ফেব্রুয়ারি মাসে শহরে আসবেন গ্র্যামি মনোনীত সেতারশিল্পী অনুষ্কা শঙ্কর। কলকাতার শঙ্কর পরিবারের কন্যা হলেও, দেশে সচরাচর দেখা যায় না তাঁকেও। এ শহরে তিনিও অনুষ্ঠান করেছেন সেই ১৩ বছর আগে। ফলে, শীতের কলকাতায় ভিড় আকর্ষণ করার মতো আয়োজন মেসি-জমায়েতেই শেষ নয়।

Advertisement

রহমানের অনুষ্ঠানে অতীতে পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেছে। কলকাতায় মেসিকাণ্ডের পরে রহমানের অনুষ্ঠানে নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়ে তবে কি আরও বেশি সাবধানতা দেখা যাবে? এই বিষয়ে আনন্দবাজার ডট কম-কে কী জানালেন সুরকারের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সংস্থার দীর্ঘদিনের উচ্চপদস্থ কর্মী? শাহরুখ খান, আরিয়ান খান থেকে গৌরী খান, কাজল, শেহনাজ় গিল, বীরেন্দ্র সহবাগ— বহু তারকাকে নিরাপত্তা দিয়েছে এই সংস্থা। রহমানের অনুষ্ঠানের নিরাপত্তার দায়িত্বও তাদের কাঁধেই। শোনা যাচ্ছে, নিউ টাউনের অ্যাকোয়াটিকা গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠান হবে। মোটামুটি ১০ হাজার দর্শক ধরতে পারে অ্যাকোয়াটিকায়। মোট সাতটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে দর্শকাসন। সংস্থার তরফে জানানো হল, তারা নিশ্চিত যে সুনিপুণ ভাবে সেই ভিড় সামলানোর দায়িত্ব পালন করতে পারবে।

অনুষ্কার অনুষ্ঠানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সংস্থা মেসির ঘটনার পরে খানিক চিন্তায় পড়েছে। মেসি-কাণ্ড থেকে শিক্ষা নিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কিছু বদল আনার পরিকল্পনাও করছে। এখনই সবটা বলার মতো না হলেও নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সে দিন যে সব ক’টি আসনের টিকিট বিক্রি করা হবে না, তা এক অর্থে ঠিকই হয়ে গিয়েছে বলে সূত্রের খবর।

Advertisement

রহমানের অনুষ্ঠানের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সংস্থার এক পদস্থ কর্মী মহম্মদ রিয়াজ়ুদ্দিন জানান, তাঁরা এক একটা ব্লকে ১০ থেকে ১৫ জন করে বাউন্সার রাখেন। তবে এক জন তারকার নিরাপত্তা শুরু হয় বিমানবন্দরের ভিতর থেকে। প্রথমে সংস্থার মালিক বিমানবন্দরের ভিতরে ঢুকে শিল্পীদের ‘কর্ডন’ করে বার করে আনেন। তাঁর সঙ্গে থাকেন দীর্ঘ দিনের বিশ্বস্ত কর্মীরা। রিয়াজ়ুদ্দিনের কথায়, ‘‘আমরা মানবশৃঙ্খল করে তারকাকে গাড়ি পর্যন্ত নিয়ে যাই। তার পরে হোটেল। এর পরে একটা টিম তারকার সঙ্গে অনুষ্ঠানস্থলের উদ্দেশে বেরিয়ে যায়। একটা টিম থাকে হোটেলেই। তারকার ঘরের বাইরে মোতায়েন থাকেন তাঁরা। কয়েক জন থাকেন লিফ্‌টের কাছে। রহমানের মতো তারকার অনুষ্ঠানের আগে স্থানীয় থানা ও ট্র্যাফিক পুলিশের সঙ্গে বৈঠক হয়। অনুষ্ঠানের আগে রেকি হবে। অনুষ্ঠানের দিন সকাল থেকে সংস্থার কর্মীরা নির্দিষ্ট ব্লকে মোতায়েন থাকেন। এই পুরোটার নীল নকশা আমরা শিল্পীকে বুঝিয়ে দিই। এ ছাড়া নিরাপত্তার জন্য থাকবে মজ়ো (ধাতব দরজা), যেগুলি মোটামুটি পাঁচ ফুট উচ্চতার হয়। যা সহজে ভেঙে হুড়মুড়িয়ে লোক ঢুকতে পারবে না।’’

এই কাজে প্রয়োজন স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতা। আগে থেকেই সিভিক পুলিশ ও ট্র্যাফিক পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করা হয় যাতায়াতের কোন রাস্তা খোলা বা কোনটা বন্ধ থাকবে সেই বিষয়ে। মাঠে যে ভাবে ‘জ়োন’ ভাগ করা থাকে, সে ভাবেই মোতায়েন হওয়া বাউন্সাদের সঙ্গে থাকে ডবল ব্যারিকেড। তাই ইচ্ছে করলেই একটা জ়োনের শ্রোতা অন্য জ়োনে ঢুকে যেতে পারবেন না। এ ছাড়াও মঞ্চের পিছনে সাজঘরে, এমনকি যে রাস্তা দিয়ে শিল্পীর গাড়ি ঢুকবে, সেখানেও থাকেন নিরাপত্তারক্ষীরা।

এই ধরনের বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান যখন হয়, তার সঙ্গে থাকে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থাও। সম্প্রতি মেসির অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছে, স্টেডিয়াম থেকে দর্শক জলের বোতল ছুড়েছেন তারকাকে দেখতে না পেয়ে। এমন ঘটনা যাতে না ঘটে সে কথা মাথায় রেখেই মাঠের ভিতরে কেবল কাগজের গ্লাসের বন্দোবস্ত করা হবে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন তারকার নিরাপত্তার জন্য অনুষ্ঠানস্থলে থাকবেন প্রায় ১০০ থেকে ১২০ জন নিরাপত্তাকর্মী। প্রতি ১০ জন নিরাপত্তাকর্মী পিছু থাকবেন এক জন করে সুপারভাইজ়ার। এ ছাড়াও ‘ওয়াকিটকি’র মাধ্যমে গোটা টিম যুক্ত থাকবেন একে অপরের সঙ্গে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement