আশি পেরিয়েও টানটান বাস্তব

১৯৮১ সালের উত্তরপ্রদেশে দোর্দণ্ডপ্রতাপ এক রাজনীতিকের বাড়িতে রেকর্ড সময় ধরে চলা আয়কর তল্লাশির ‘সত্যি’ ঘটনা অবলম্বনে এ বার তিনি বানিয়েছেন ‘রেড’। ফেলে আসা একটা সময়কে দেখিয়েছেন প্রায় নিখুঁত ভাবেই।

Advertisement

সূর্য্য দত্ত

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৮ ০১:২৬
Share:

অজয় দেবগণ বিলক্ষণ জানেন, কোন ধরনের চরিত্রে আজকাল দর্শক তাঁকে বেশি দেখতে চান। ‘গঙ্গাজল’-এ যেমন বাস্তবের পুলিশ সুপারের সঙ্গে তাঁর তফাত করা মুশকিল হয়েছিল। তেমনই ‘রেড’-এর ট্রেলার দেখে অনেকে বলেছিলেন, আবার ‘ওই রকম রোলে’ অজয়কে দেখে ভাল লাগছে।

Advertisement

বলেই দেওয়া যাক, ‘রেড’ তাঁদের হতাশ করবে না। সৎ, সাহসী, হার না-মানা সরকারি অফিসারের চরিত্রে অজয় আরও এক বার ঝকঝকে সুন্দর ও বিশ্বাসযোগ্য। পরিচালক রাজকুমার গুপ্ত এর আগে ‘আমির’, ‘নো ওয়ান কিলড জেসিকা’র মতো ছবির জন্য প্রশংসা কুড়িয়েছেন। ১৯৮১ সালের উত্তরপ্রদেশে দোর্দণ্ডপ্রতাপ এক রাজনীতিকের বাড়িতে রেকর্ড সময় ধরে চলা আয়কর তল্লাশির ‘সত্যি’ ঘটনা অবলম্বনে এ বার তিনি বানিয়েছেন ‘রেড’। ফেলে আসা একটা সময়কে দেখিয়েছেন প্রায় নিখুঁত ভাবেই। চিত্রনাট্যের প্রয়োজনে ছবিতে কিছু অতিনাটকীয়তা ঢুকলেও শেষ পর্যন্ত তৈরি হয়েছে বিনোদনে ভরপুর, ঘটনাবহুল এক থ্রিলার। আর্থিক দুর্নীতি, ব্যাঙ্ক ঋণ জালিয়াতি নিয়ে এ দেশের রাজনীতিতে হালের তোলপাড়ের আবহেও যাকে প্রাসঙ্গিক মনে হয়। সংলাপে ‌‘কালা ধন’ কথাটাও এল একাধিক বার!

সাত বছরে ৪৯ বার বদলির পরে লখনউয়ে আয়করের ডেপুটি কমিশনার হয়ে আসে অময় পট্টনায়ক (অজয়)। উড়ো ফোন আর বেনামি চিঠিতে সে খবর পায়, তিন বারের সাংসদ রামেশ্বর সিংহ ওরফে তাউজির (সৌরভ শুক্ল) বাড়িতে ‘রেড’ করলে বেরোবে ৪২০ কোটি টাকার বেআইনি সম্পত্তি। বিশাল বাহিনী নিয়ে অময় হানা দেয় তাউজির প্রাসাদে, এলাকায় যে বাড়ির ডাকনাম ‘হোয়াইট হাউস’। শুরু হয় ইঞ্চি-ইঞ্চি তল্লাশি। তাউজি চ্যালেঞ্জ ছোড়ে, ‘‘কিছুই বেরোচ্ছে না, তোমাদের ঘাম ছাড়া।’’ অময় তবু সদলবল টানা পাঁচ দিন পড়ে থাকে সেই প্রাসাদে। তল্লাশি থামাতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করে তাউজি। দিল্লি থেকেও ফোন পায় অময়। ফোনের ও পারে ‘ম্যাডাম প্রাইম মিনিস্টার’। ‘ম্যাডামের’ মুখ দেখা যায় না। কিন্তু ট্রেডমার্ক চশমা আর কালো চুলের রুপোলি রেখাতেই ইঙ্গিত স্পষ্ট। কী হবে এর পর? ছবিটা দেখতে হবে।

Advertisement

রেড

পরিচালনা: রাজকুমার গুপ্ত

অভিনয়: অজয় দেবগণ,
ইলিয়ানা ডি’ক্রুজ, সৌরভ শুক্ল

৬/১০

আর দেখতে হবে সৌরভ শুক্লকে। তাঁর অভিনয় কোন পর্যায়ে যেতে পারে, সে আলোচনা নিষ্প্রয়োজন। অময়ের স্ত্রী মালিনীর চরিত্রে ইলিয়ানা ডি’ক্রুজ ভীষণ সুন্দর। তবে অময়-মালিনীর প্রেম বোঝাতে গানের দৃশ্যগুলোকে মাঝেমধ্যে মনে হয় অপ্রাসঙ্গিক। তখন ফিরতে ইচ্ছে করে গল্পে। বলতে হয় অমিত সিয়ালের কথাও। ঘুষখোর আয়কর অফিসার লল্লনের চরিত্রে তাঁকে মনে রাখবে জনতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন