bollywood

পরিচালক প্রেমিকের ইন্ধনে বাবা মাকে আইনি নোটিস, ঔদ্ধত্যেই নাকি শেষ হয়ে যায় আমিশার কেরিয়ার

আমিশার বাবা ছিলেন রাজেশের ছোটবেলার বন্ধু। সেই সূত্রেই আমিশার কাছে ‘কহো না প্যায়ার হ্যায়’ ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব এসে পৌঁছয়। ছেলে হৃতিককে লঞ্চ করার জন্য নায়িকার ভূমিকায় নতুন মুখ খুঁজছিলেন রাজেশ।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২০ ১০:১৮
Share:
০১ ২৩

প্রথম ছবি ব্লকবাস্টার। দ্বিতীয় ছবি আরও বেশি সুপারহিট। দু’ দশকের কেরিয়ারে ছবি করেছেন চল্লিশটি। তার পরেও এই নায়িকা অভিনয়ের তুলনায় বেশি পরিচিত ব্যক্তিগত জীবনে বিতর্কের সুবাদে। পঁয়তাল্লিশ বসন্ত পার করা সেই নায়িকা, আমিশা পটেল।

০২ ২৩

মুম্বইয়ের এক গুজরাতি পরিবারের আমিশার জন্ম ১৯৭৫ সালের ৯ জুন। বাবা অমিত এবং মা আশার নাম মিলিয়ে তাঁর নামকরণ করা হয়। আমিশার ভাই অস্মিতও একজন অভিনেতা।

Advertisement
০৩ ২৩

বিখ্যাত রাজনীতিক তথা কংগ্রেস নেতা প্রয়াত রজনী পটেলের নাতনি আমিশা মুম্বইয়ের ক্যাথিড্রাল অ্যান্ড জন ক্যানন স্কুলের ছাত্রী ছিলেন। ছাত্রীজীবনে অত্যন্ত মেধাবী আমিশা এরপর আমেরিকা পাড়ি দিয়েছিলেন বায়োজেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়বেন বলে।

০৪ ২৩

দু’ বছর ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার পরে আমিশা অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। আমিশার কাজের সূত্রপাতও অর্থনীতি নিয়ে। তিনি আমেরিকায় চাকরি শুরু করেন ইকোনমিক অ্যানালিস্ট হিসেবে। বেশিদিন ভাল লাগল না চাকরি। দেশে ফিরে তিনি যোগ দিলেন বিখ্যাত সত্যদেব দুবের নাটকের দলে।

০৫ ২৩

রক্ষণশীল পরিবারের ধারা ভেঙে আমিশা নাটকে অভিনয় এবং মডেলিং শুরু করেন। বেশ কিছু পণ্যের বিজ্ঞাপনে তিনি হয়ে ওঠেন পরিচিত মুখ। ১৯৯৯ সালে উর্দু নাটক ‘নীলম’-এ মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করার সময় তিনি রাকেশ রোশনের চোখে পড়ে যান।

০৬ ২৩

আমিশার বাবা ছিলেন রাকেশ রোশনের ছোটবেলার বন্ধু। সেই সূত্রেই আমিশার কাছে ‘কহো না প্যায়ার হ্যায়’ ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব এসে পৌঁছয়। ছেলে হৃতিককে লঞ্চ করার জন্য নায়িকার ভূমিকায় নতুন মুখ খুঁজছিলেন রাকেশ।

০৭ ২৩

প্রথমে করিনা কপূরের কাছে এই ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব গিয়েছিল। ছ’দিন শুটিং করার পরে করিনা এই ছবি থেকে সরে দাঁড়ান। কারণ করিনার মা ববিতার এই ছবির কিছু শর্ত পছন্দ ছিল না। তারপর সুযোগ পান আমিশা।

০৮ ২৩

২০০০ সালে ‘কহো না প্যায়ার হ্যায়’ হৃতিক আমিশাকে আকাশছোঁয়া সাফল্য দেয়। এরপর আমিশা ‘বদ্রী’ নামে একটি দক্ষিণী ছবিতে অভিনয় করেন। সেটিও বক্সঅফিসে খুবই সফল হয়েছিল। পরপর সাফল্যের সুবাদে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ পেতে সমস্যা হচ্ছিল না আমিশার। প্রথম দুই ছবির সাফল্যকে ছাপিয়ে গেল আমিশার তৃতীয় ছবি ‘গদর এক প্রেম কথা’।

০৯ ২৩

পরে এক সাক্ষাৎকারে আমিশা বলেছিলেন, তিনি গদর ছবির অফার পেয়েছিলেন ‘কহো না প্যায়ার হ্যায়’-তে অভিনয়ের আগেই। পাঁচশো জন তরুণীর সঙ্গে অডিশন দিয়ে মনোনীত হয়েছিলেন আমিশা। ছবিতে তাঁর লুক নিয়েও দীর্ঘ আলোচনা হয়েছিল।

১০ ২৩

বক্স অফিসে সুপারহিট ছবির হ্যাটট্রিকের দৌলতে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছন আমিশা। কিন্তু কেরিয়ারে সাফল্যের মতো ব্যর্থতাও এল বেশ তাড়াতাড়ি। হৃতিকের বিপরীতে আমিশার দ্বিতীয় ছবি ‘আপ মুঝে অচ্ছে লগনে লগে’ ফ্লপ হয়। এরপর আরও কিছু ছবি বক্স অফিসে লক্ষ্মীলাভ করেনি।

১১ ২৩

‘ক্রান্তি’, ‘ক্যায়া এহি প্যায়ার হ্যায়’, ‘ইয়ে হ্যায় জলওয়া’, ‘পরওয়ানা’-সহ আমিশার বেশ কিছু ছবি মুখ থুবড়ে পড়ে। বড় নায়কের সঙ্গে স্ক্রিনশেয়ার করেও এই ছবিগুলিতে কিছু করে উঠতে পারেননি আমিশা। একটানা ব্যর্থতার পরে কিছুটা আশার আলো আসে ‘হমরাজ’ ছবির হাত ধরে।

১২ ২৩

এই ছবিতে সাফল্যে ভর করে বলিউডে নিজের কেরিয়ার আবার গুছিয়ে নিতে চাইছিলেন আমিশা। সেই সময়ে বিতর্ক শুরু হয় তাঁর ব্যক্তিগত জীবন ঘিরে। বাবা মাকে আইনি নোটিস পাঠিয়ে বসেন আমিশা! নায়িকার অভিযোগ ছিল, তাঁর বারো কোটি টাকা নিয়ে ফেরত দেননি তাঁর বাবা মা।

১৩ ২৩

এই ঘটনায় পটেল দম্পতির অভিযোগ ছিল পরিচালক বিক্রম ভট্টের দিকে। ‘আপ মুঝে অচ্ছে লগনে লগে’ ছবিতে অভিনয়ের সুবাদে তাঁর সঙ্গে পরিচয় আমিশার। ক্রমে তার থেকে প্রেম এবং তার পর লিভ ইন। যদিও আমিশার উপার্জন ও অন্যান্য আর্থিক হিসেব দেখভাল করতেন তাঁর বাবা-ই।

১৪ ২৩

তিনি মেয়ের থেকে বারো কোটি টাকা নিয়ে বিনিয়োগ করেছিলেন তাঁর ব্যবসায়। তাঁর অভিযোগ ছিল, পরিচালক বিক্রম ভট্টের ইন্ধনেই এই টাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁর মেয়ে। অন্যদিকে, আমিশার অভিযোগ ছিল, তাঁর ইচ্ছের বিরুদ্ধে এই টাকা নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের চাপানউতোরে আমিশার ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ইন্ডাস্ট্রিতে।

১৫ ২৩

পরে বিক্রম ভট্টের মাকেও আমিশার বাবা মা হুমকি দেন বলে অভিযোগ। এই মর্মে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন বিক্রমের মা। এত সব কিছুর পরে বিক্রমের সঙ্গে আমিশার সম্পর্ক পাঁচ বছরের বেশি স্থায়ী হয়নি। বিচ্ছেদের মূলে অবশ্য ছিল দু’জনেরই কেরিয়ারে ব্যর্থতা।

১৬ ২৩

সে সময় বলিউডে কঠোর পরিশ্রম করা ছাড়া উপায় ছিল না আমিশার। তারপরেও সুযোগ না পেয়ে তিনি তেলুগু ছবিতে অভিনয় শুরু করেন। আমির খানের বিপরীতে ‘মঙ্গল পাণ্ডে’ এবং অক্ষয়কুমারের বিপরীতে ‘মেরে জীবনসাথী’ ছবিও আমিশার কেরিয়ারের ছিঁড়ে যাওয়া পালে নতুন বাতাস যোগ করতে পারেনি।

১৭ ২৩

এমন অবস্থা দাঁড়ায়, তেলুগু ছবি ছাড়া অন্য কোথাও নায়িকার ভূমিকায় দেখা যেত না আমিশাকে। বলিউডে তাঁর পরিচয় দাঁড়িয়েছিল ‘অতিথি শিল্পী’। ভগ্নপ্রায় কেরিয়ারে কিছুটা উজ্জ্বলতা এনেছিল ‘হনিমুন ট্রাভেলস প্রাইভেট লিমিটেড’ এবং ‘ভুলভুলাইয়া’। দু’টি ছবিতেই আমিশার অভিনয় প্রশংসিত হয়েছিল।

১৮ ২৩

কিন্তু সেই উজ্জ্বলতা বেশিদিন স্থায়ী হল না। যশরাজ ফিল্মের ‘থোড়া প্যায়ার থোড়া ম্যাজিক’ ছবির ‘লেজি লমহে’ গানে তাঁকে দেখা যায় বিকিনিতেও। কিন্তু তারপরেও কেরিয়ারে রয়েই যায় ভাটার টান। এ সময় লন্ডনের ব্যবসায়ী কনভ পুরীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয় আমিশার। শোনা যাচ্ছিল দু’জনে বিয়ে করবেন। কিন্তু ২০১০-এ শোনা গেল তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে।

১৯ ২৩

পরের বছর বন্ধু কুণাল ভূমরের সঙ্গে আমিশা নিজের প্রোডাকশন হাউস শুরু করেন। প্রথম ছবি ছিল ‘দেশি ম্যাজিক’ । কিন্তু সেই ছবি সম্পূর্ণ তৈরি হওয়ার পরেও তা দিনের আলোর মুখ দেখেনি। এই ঘটনায় প্রযোজক অজয় কুমার সিংহের সঙ্গে তিন কোটি টাকা নিয়ে আইনি লড়াইও হয় আমিশার।

২০ ২৩

ইন্ডাস্ট্রিতে গুঞ্জন, বিবাহিত কুণালের সঙ্গে আমিশার সম্পর্ক নিছক পেশাদার ব্যবসায়ীর নয়। বরং, তাঁদের দু’জনের সম্পর্ক বেশ ঘনিষ্ঠ। কিন্তু তাঁদের প্রযোজনা সংস্থাও চলল না বেশিদিন।

২১ ২৩

ব্যর্থ আমিশা আর এক বার ইন্ডাস্ট্রিতে ফেরার চেষ্টা করলেন। ‘রেস টু’, ‘ভাইয়া জি সুপারহিট’-এর মতো ছবিতে তিনি অভিনয় করেন। কিন্তু আগের জনপ্রিয়তা আর ফিরে এল না। এ সময় নিজের ঔদ্ধত্যের জন্য বার বার সমালোচিত হচ্ছিলেন আমিশা। ২০১৩ সালে ‘শর্টকাট রোমিয়ো’ ছবিতে তাঁকে শেষ বারের মতো দেখা গিয়েছে বলিউডের বড় পর্দায়।

২২ ২৩

২০১২ সালে শুটিং শেষ হওয়া ‘ভাইয়াজি সুপারহিট’ ছবিটি মুক্তি পায় ২০১৮ সালে। ফলে আমিশার কোনও পদক্ষেপই সফল হয়নি। এ সময় একটি বিয়েবাড়িতে নাচের জন্য ১১ লক্ষ টাকা নিয়েও তিনি পারফর্ম করেননি বলে অভিযোগ। তাঁর ম্যানেজারকে বিভিন্ন প্রযোজকের কাছে ঘুরতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু অভিনয়ের অফার আসেনি আমিশার কাছে।

২৩ ২৩

অভিনয় থেকে বহু দূরে এখন আমিশাকে দেখা যায় ইনস্টাগ্রামে। বেশিরভাগ সময়েই তিনি শরীরচর্চার ছবি দেন। সেখানেও বহু বার ট্রোলড হয়েছেন। সমালোচকদের মতে, এর পরেও আমিশার ঔদ্ধত্য দূর হয়নি। হৃতিক রোশনের ‘মহেঞ্জাদাড়ো’ ছবি ব্যর্থ হওয়ার পরে আমিশা মন্তব্য করেছিলেন, ‘সব নবাগতাকে দিয়ে বক্সঅফিসে ছবি সুপারহিট করানো যায় না’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement