পুজোর ছবির বিষয়ে কী বললেন দেব? ছবি: সংগৃহীত।
‘ধূমকেতু’র রেশ এখনও কাটেনি। নায়ক দেব তাঁর পুজোর ছবি ‘রঘু ডাকাত’-এর কাজে মন দিলেও সমাজমাধ্যমের পাতায় অনুরাগীরা এখনও ‘দেশু’ জুটির মোহে আচ্ছন্ন। বার বার একটাই প্রশ্ন ঘুরেফিরে আসছে, তা হল ‘ধূমকেতু’র প্রভাবে পিছিয়ে পড়বে না তো ‘রঘু ডাকাত’? নায়ক তথা প্রযোজক দেব নিজের ছবির প্রচারকৌশলকে খুবই গুরুত্ব দেন। কিন্তু এই ছবি নিয়ে সবার মুখেই কুলুপ।
‘ধূমকেতু’ মুক্তি পাওয়ার পরে দু’সপ্তাহে দফায় দফায় প্রেক্ষাগৃহে দর্শকের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছেন নায়ক-সহ গোটা টিম। পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় নিজের সমাজমাধ্যমের পাতায় এখনও তাঁর ছবির রেশ ধরে রেখেছেন। অসমর্থিত সূত্রের খবর, ‘রঘু ডাকাত’-এর প্রচারকৌশল নাকি অন্য ভাবে পরিকল্পনা করছে ছবির টিম। সবটাই নাকি হচ্ছে ছবির নায়ক অর্থাৎ দেবের তত্ত্বাবধানে। এই ছবির সহ-প্রযোজক এবং সৃজনশীল পরিচালকও তিনি।
গত কয়েক বছরে ছবির প্রচারের ধারা বদলেছে। সমাজমাধ্যমের বাড়বাড়ন্তে পর্দার তারকারা এখন দর্শকের হাতের নাগালে। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের পাতায় ঢুঁ দিলে এখনও ‘ধূমকেতু’র গানের ধুন বাজছে। এ দিকে বুধবারই মুক্তি পেয়েছে ‘রঘু ডাকাত’ ছবির গান ‘জয় কালী’। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সমাজমাধ্যমের পাতায় সেই গান নিয়ে খুব একটা চর্চা শুরু হয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে না। ইন্ডাস্ট্রির অন্দরের ফিসফাস, অনেক আলাপ-আলোচনার পর নাকি দেব এবং প্রযোজনা সংস্থা মিলে ঠিক করেছে, এই ছবি নিয়ে কোনও সাক্ষাৎকার দেবেন না ছবির শিল্পীরা। কিছু অনুষ্ঠান হবে। প্রচার ঝলকের অনুষ্ঠান, গানের বিশেষ অনুষ্ঠান পরিকল্পনা করবে তারা। কিন্তু ব্যক্তিগত ভাবে কেউ কোনও কথা বলবেন না।
ছবিতে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, সোহিনী সরকার, ইধিকা পাল,ওম সাহানি-সহ অনেককেই অভিনয় করতে দেখা যাবে। সূত্র বলছে, ‘রঘু ডাকাত’ ছবি প্রসঙ্গে অভিনেতাদের কোনও প্রশ্ন করলে তাঁরা জানাচ্ছেন, এই ছবি নিয়ে কোনও কথা বলবেন না। কেন হঠাৎ, এই কৌশল?
অনেক কাটাছেঁড়ার পর তিনটি বিষয় উঠে এসেছে। প্রথমত, বিরোধী দলের নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের এই ছবিতে অভিনয়। দ্বিতীয়ত, অনির্বাণের সঙ্গে ফেডারেশনের ঠান্ডা লড়াই। তৃতীয়ত, আরজি কর- কাণ্ডে শাসকদলের বিরুদ্ধে সোহিনীর সক্রিয়তা। রাজনীতির রং অভিনেতাদের মধ্যে বিরোধ তৈরি করতে অক্ষম, সেই উদাহরণ পাওয়া গিয়েছে। ‘ধূমকেতু’র প্রচারের সময় দেবের সঙ্গে রুদ্রনীল ঘোষকে দেখা গিয়েছিল পাশাপাশি। খোশমেজাজে গল্প করতে দেখা গিয়েছিল তাঁদের।
ইন্ডাস্ট্রির একাংশের ধারণা, অভিনেতা দেব শাসক দলের সাংসদ। বিরোধী দলের নেত্রীকে নিয়ে ছবির প্রচারে নামলে অভিনেতার উপর চাপ বাড়তে পারে। তাই ‘রঘু ডাকাত’-এর প্রচারের ক্ষেত্রে অন্য কৌশল নিয়েছেন তাঁরা। ফেডারেশনের সঙ্গে অনির্বাণের বিরোধিতার কথা সকলের জানা। বেশ কিছু মাস আগে অভিনেতা জানিয়েছিলেন, তাঁর হাতে তেমন কাজ নেই। ‘এসভিএফ’ –এর আসন্ন ওয়েব সিরিজ় ‘ভূততেরিকা’-য় সৃজনশীল পরিচালক হিসাবে তাঁর নাম দেখা গিয়েছে। কিন্তু তাঁর নতুন কোনও ছবির ঘোষণা এখনও হয়নি। আর অন্য দিকে সোহিনীও চুপ। আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ মিছিলে শামিল হয়েছিলেন অভিনেত্রী। গত এক বছরে প্রকাশ্যে সে ভাবে কোনও কথাই বলেননি তিনি। সুতরাং, ছবির প্রচারে কথা বললেও উঠে আসবে বেশ কিছু বিতর্কিত বিষয়। সেই সব কিছু এড়াতেই কি নতুন পন্থা নিয়েছেন দেব এবং ছবির বাকি সদস্যরা?
২০২৫ –এ দুর্গাপুজোয় ‘রঘু ডাকাত’ ছাড়া মুক্তি পাবে আরও তিনটি ছবি। ‘রক্তবীজ ২’, ‘দেবী চৌধুরাণী’, ‘যত কাণ্ড কলকাতাতেই’। নন্দিতা রায়, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই তাঁদের ছবির প্রচার শুরু করেছেন। জুন মাসের শেষ থেকে ‘দেবী চৌধুরাণী’র প্রচার শুরু করেছেন পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্র। অন্য দিকে, পরিচালক অনীক দত্ত নিজের ছবির প্রচার কৌশল বরাবরই অন্য ভাবে পরিকল্পনা করেন। এত ছবির ভিড়ে, বিতর্ক এড়াতেই কি প্রচারের নতুন কৌশল বার করলেন দেব?