আপনি নাকি কলকাতার লেটেস্ট ভ্যাম্পায়ার?
(হা হা হা) ভ্যাম্পায়ার তো আছেই। কিন্তু সেটা আমি কিনা জানতে হলে ‘কুহেলি’ দেখতে হবে। যে হেতু এই ছবিতে সকলের মধ্যে আমিই নতুন। তাই সকলে ভাবছে আমিই ভ্যাম্পায়ার।
ট্রেলরে তো আপনার সাহস দেখে অনেকেই অবাক।
দেখুন আমাকে বলা হয়েছিল অনেকেই এটা করতে চাইছে না, কারণ সাহসী চরিত্র। কলকাতায় সাহসী চরিত্র বলতে সকলে বোল্ড সিন ভাবে। অনেকেই করতে চায় না। আবার এটা করার জন্য নির্দিষ্ট কিছু অভিনেত্রীকে অ্যাপ্রোচ করা হয়। এটাই সবাই ভাবে। কিন্তু এই স্ক্রিপ্টটা পেয়ে আমার নিজেকে ব্লেসড মনে হয়েছে। এটাকে যতটা সম্ভব রিয়ালিটির কাছাকাছি রাখার চেষ্টা করেছি। আমার চরিত্রে অনেকগুলো লেয়ার আছে। আমার নিজেকে অনেকটা ভাঙতে হয়েছে।
আলোচনা, নাকি সমালোচনা— কোনটা এক্সপেক্ট করছেন?
মানুষ সমালোচনা করতেই সব সময় ভালবাসে। আর বাঙালি তো এটায়…। আসলে কোথাও গিয়ে তো আমরা একটু পিছিয়ে পড়া, যতই বলি। আমি বাঙালি হয়েই কথাটা বলছি। একজন নতুন অভিনেত্রী এসেই এত সাহস দেখাচ্ছে এটা নিয়ে তো সমালোচনাই হবে।
কেন এমনটা মনে হচ্ছে?
সকলে ভাবে নতুন মানে সে সকলকে ভয় পেয়ে চলবে। তার এতটা সাহস দেখানো উচিত নয়। বা এটাও হবে এ হয়তো দুম করে লাইমলাইটে আসার জন্য এ সব করছে। জেনারেল অডিয়েন্স হলে আমিও হয়তো এটা ভাবতাম। কিন্তু আমাদের সিনেমা তো রিয়েল লাইফ থেকেই নেওয়া হয়। রিয়েল লাইফে বিয়ে হলে কি আমি বরের সঙ্গে শোব না? তাতে হয় আনন্দ হবে, না হয় দুঃখ। তা হলে এটা দেখালে আপত্তি কোথায়? কই ওয়ার্ল্ড সিনেমা দেখতে গেলে তো এ সব আমাদের মনে হয় না? তা হলে এখানে কেন আমরা শুধু ইরোটিক পার্টটা নিয়ে কথা বলি?
আপনি বোল্ড সিনে কতটা কমর্ফটেবল ছিলেন?
ইন্দ্রাশিসের সঙ্গে ছবিটার আগে আলাপ ছিল না। ফলে ইনিশিয়াল আইজ ব্রেক করতে সময় লেগেছিল। কিন্তু পরে একটা বন্ধুত্ব তৈরি হয়ে যায়।
ছবিতে ইন্দ্রাশিস ও পূজারিনি।
ক্যামেরার সামনে কতটা সাহসী হতে পারবেন?
যদি চরিত্রের জন্য ইন্টিমেট সিন ইমপরট্যান্ট হয়, এসথেটিক্যালি শুট করা হয় তা হলে কোনও আপত্তি নেই। কারণ জোর করে তো কিছু করা হচ্ছে না। এটা তো আর পর্নোগ্রাফি নয়।
মানে ন্যুডিটি নিয়ে ফ্রন্ট ক্যামেরায় আপনার আপত্তি নেই?
দেখুন এই মুহূর্তে কলকাতার দর্শক ন্যুডিটি নেয় না। লিকড ভিডিও দেখে মজা পায়। কিন্তু ফ্যামিলির সকলকে দেখতে বারণ করে। ফলে দর্শকদের সেন্টিমেন্টকে আঘাত না করে যতটা করা সম্ভব করব। বেটার অপারচুনিটি পেলে আরও কয়েক বছর পরে হয়তো আমার আজকের কথাগুলোই চেঞ্জ হয়ে যাবে। ইট ডিপেন্ডস দ্য সিচুয়েশন হোয়্যার আই অ্যাম।
কলকাতায় এমন অফার তা হলে রিজেক্ট করবেন?
কলকাতায় এমন অফার আসবে না, যদি না সেটা ফেস্টিভ্যাল ছবি হয়।
ফেস্টিভ্যাল ছবি মানে?
আমার কাছে এমন অনেক অফার এসেছে যেগুলো বলা হয়েছে ফেস্টিভ্যাল ছবি। আর এই টার্মটা শুনলেই কোনও একজন অভিনেতাকে বুঝে নিতে হয় এর মানে ছবিটা সে ভাবে কোথাও রিলিজ করবে না। কিন্তু যথেষ্ট ন্যুডিটি থাকবে, যেটা দিয়ে একটা টার্গেট অডিয়েন্সকে ধরার চেষ্টা করা হবে। আমার কাছে এ ভাবেই দুটো আলাদা করা হয়। কেউ বলে মেনস্ট্রিম ছবি করব, কর্মাশিয়াল। আর কেউ কেউ বলেন ফেস্টিভ্যাল ছবি করব।
আদিল হুসেনের সঙ্গে ফরাসি ছবিতে কাজ করলেন। কেমন অভিজ্ঞতা?
আদিল ইজ লাইক আ সেন্ট। কলকাতায় অনেক সিনিয়র আর্টিস্ট আছেন। উইথ অল ডিউ রেসপেক্ট বলছি, তাদের সামনে গেলে তারা এমন একটা লুক দেয়, যেন তুমি কে? কিন্তু সত্যিকারের যে মানুষগুলো অনেক বড় হয়, তাদের ব্যবহার এমন হবে যে আপনি তাদের মহত্বটা ফিল করতে পারবেন। তাদের মধ্যে কোনও অহঙ্কার নেই। তাদের পা এখনও মাটিতে।
ইন্ডাস্ট্রিতে আপনার বন্ধু কে?
ইন্ডাস্ট্রিতে সকলে কো-ওয়ার্কার। এখনও পর্যন্ত যাদের পেয়েছি সকলে সিনিয়র। অনেকে গাইড করেছে। আবার অনেকে তো…।
কী?
এত তাড়াতাড়ি যে কাজ পেয়েছি তাতে অনেকে জিজ্ঞেস করেছে কী করে পেলে, চেনা জানা কেউ ছিল?
এর মধ্যে কি অন্য গন্ধ লুকিয়ে রয়েছে?
অবশ্যই। সে জন্যই তো কথাটা শেয়ার করলাম। আমি খুব বিনীত ভাবে তাদের বলেছি, অডিশন দিয়েই পেয়েছি, অন্য কোনও ভাবে পাইনি (হাসি)।
আপনার এক্স বয়ফ্রেন্ড পরিচালক মৈনাক ভৌমিককে প্রিমিয়ারে ডাকবেন?
দেখুন, যেটা শেষ, সেটা শেষই। এক্স। আমি আর ফিরে তাকাতে চাই না। কারণ আমি অনেক কিছুই ফেস করেছি। আমাকে থ্রেটও করা হয়েছে।
পরিচালক মৈনাক ভৌমিক।
সেকি! কে করেছেন, মৈনাক?
ও কী থ্রেট করবে? ওর সেই মেরুদণ্ড আছে নাকি? সেই ক্ষমতা আছে নাকি? কাজ নিয়ে যার এত বড় বড় বক্তব্য সে যে রিয়েল লাইফে কেমন তা ওর সঙ্গে না মিশলে বোঝা যায় না। আমি এটা থেকে একদম বেরিয়ে এসেছি। খুব ভাল আছি। আমি এটা নিয়ে আর কোনও কথা বলতেই চাই না।
আপনার পরের প্রোজেক্ট?
বম্বের দুটো প্রোজেক্ট নিয়েও কথা চলছে। কিন্তু কনফার্ম না হলে কিছু বলতে চাই না। শেষ মুহূর্তেও কাঁচি হয়ে যেতে পারে।